Medicine for Hot Flush

‘হট ফ্ল্যাশ’ নিয়ে নাজেহাল হতে হবে না, রজোনিবৃত্তির সময়কার অস্বস্তি দূর করতে নতুন ওষুধ আসছে

‘পেরিমেনোপজ়’ পর্ব থেকেই সমস্যার সূত্রপাত হয়। শরীরের নানা অস্বস্তি নিয়ে নাজেহাল হতে হয় মহিলাদের। সেই সব অস্বস্তি দূর করতে নতুন ওষুধ আসতে চলেছে বাজারে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:২০
New menopause drug without hormones approved by FDA

রজোনিবৃত্তি পর্বের শারীরিক সমস্যাগুলির সমাধানে নতুন ওষুধ আসছে।

রজোনিবৃত্তি পর্বে হরমোনের গোলমাল স্বাভাবিক ব্যাপার। এর কারণে নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে থাকে। কারও শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক রকম বেড়ে যায়, কারও মেজাজ বদল হতে থাকে ঘন ঘন। রজোনিবৃত্তি পর্ব শুরু হওয়ার বেশ কিছু সময় আগে থেকেই অর্থাৎ, ‘পেরিমেনোপজ়’ পর্ব থেকেই সমস্যার সূত্রপাত হয়। শরীরের নানা অস্বস্তি নিয়ে নাজেহাল হতে হয় মহিলাদের। সেই সব অস্বস্তি দূর করতে নতুন ওষুধ আসতে চলেছে বাজারে। আমেরিকার ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (এফডিএ) সেই ওষুধে অনুমোদন দিয়েছে।

Advertisement

জার্মান ওষুধ নির্মাতা সংস্থা বায়ার এজি রজোনিবৃত্তি পর্বের কিছু সমস্যার সমাধানে একটি ওষুধ তৈরি করেছে যার নাম ‘লিনকুয়েট’। ওষুধটি রজোনিবৃত্তি পর্বে ‘হট ফ্ল্যাশ’-এর কষ্ট কমাবে বলে দাবি করা হয়েছে। ওই সময়ে অনেক মহিলাই শারীরিক নানা অস্বস্তি কাটাতে হরমোন থেরাপির আশ্রয় নেন। আর হরমোন থেরাপি সঠিক পথে না হলে তার অনেক রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হয়। ক্যানসার বা হার্টের সমস্যা থাকলে হরমোন থেরাপি করা যায় না। সে ক্ষেত্রে রজোনিবৃত্তি পর্বের সমস্যার সমাধানে অনেকেই নানা রকম ওষুধ কিনে খেয়ে ফেলেন, যা নিরাপদ নয়। এই প্রথম এমন একটি ওষুধ তৈরি হল, যা হরমোনের তারতম্য না ঘটিয়েই সমস্যার সমাধান করবে।

ভারতীয় মেয়েদের ৪৫ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে সাধারণত রজোনিবৃত্তি ঘটে। অর্থাৎ মাসিক ঋতুচক্র শেষ হয়। ওই পর্বে গিয়ে শরীর ও মনে একাধিক বদল আসে। আর এই বদলের কারণ হল হরমোনের তারতম্য। মহিলাদের শরীরের দুই হরমোন ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন ঋতুচক্রের প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। ডিম্বাণু তৈরি ও তার নির্গমনের প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে ইস্ট্রোজেন। ডিম্বাণু জরায়ুর যে অংশে গিয়ে জমা হবে, সেই স্তর অর্থাৎ এন্ডোমেট্রিয়ামের ঘনত্বও নির্ভর করে ইস্ট্রোজেনের উপরে। ঋতুকালীন সময়ে শরীরে অন্যান্য হরমোনের ওঠানামা, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের কাজও করে ওই হরমোন। যখন রজোনিবৃত্তি পর্ব এগিয়ে আসবে, তখন ডিম্বাণু নির্গমনের প্রক্রিয়া বন্ধ হবে। সেই সময়ে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রাও কমবে, ফলে শরীরের অন্যান্য হরমোনের ওঠানামা নিয়ন্ত্রিত হবে না। সেই সঙ্গে তাপমাত্রারও হেরফের হবে। শরীর গরম হয়ে যাবে, নাক-কান-গলার কাছে ঘাম হতে থাকবে। মনে হবে, শরীরের উপর দিয়ে তাপপ্রবাহ হচ্ছে। একেই বলে ‘হট ফ্ল্যাশ’।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে হট ফ্ল্যাশকে বলা হয় ‘ভ্যাসোমোটর সিম্পটম’ (ভিএমএস)। ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমে যাওয়ায় হৎস্পন্দনের হার আচমকা বেড়ে যায়, বুক ধড়ফড় করতে থাকে অনেকের। ঘুমের সমস্যাও দেখা দেয়। মেজাজের ঘন ঘন বদল হতে থাকে। নতুন ওষুধটি খেলে এই সব সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে দাবি করা হয়েছে। ওষুধটি তিন পর্যায়ের ট্রায়ালে সাফল্যও এসেছে বলে দাবি। তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে রজোনিবৃত্তি পর্ব শেষ হয়েছে, এমন ৬২৮ জন মহিলাকে ১২ সপ্তাহ ধরে ওষুধটি খাওয়ানো হয়। দেখা যায়, তাঁদের সমস্যার ৭৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। আমেরিকার ন্যাশনাল মেনোপজ় ফাউন্ডেশন জানাচ্ছে, ২০২৩ সালেও এমন একটি ওষুধে অনুমোদন দেওয়া হয়, যা ‘হট ফ্ল্যাশ’ নিয়ন্ত্রণে রাখবে। তবে নতুন ওষুধটি আরও বেশি কার্যকরী হবে বলে দাবি করা হয়েছে।

Advertisement
আরও পড়ুন