Laughing Gas and Depression

ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই উধাও অবসাদ! ‘লাফিং গ্যাস’ থেরাপিতে মন ভাল করার উপায় খুঁজে পেলেন গবেষকেরা

কয়েক ঘণ্টায় অবসাদ দূর হবে? এমনও কি সম্ভব? ‘লাফিং গ্যাস’ দিয়ে অসাধ্যসাধন ঘটাচ্ছেন গবেষকেরা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:২৮
New study claims controlled doses of laughing gas provide quick-acting relief from Depression

‘লাফিং গ্যাস’ দিয়ে অবসাদ দূর হবে, কী ভাবে? ছবি: ফ্রিপিক।

খিলখিলিয়ে হাসলেই যে অবসাদ দূর হবে, তা নয়। ‘লাফিং গ্যাস’ থেরাপি রোগীকে হাসাবে না, বরং তাঁর মস্তিষ্ক থেকে দুশ্চিন্তার মেঘ কাটিয়ে দেবে ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই। এমনই দাবি করেছেন ইংল্যান্ডের বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটি ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা। অবসাদ নামক মানসিক ব্যাধির সঙ্গে যুঝতে ‘লাফিং গ্যাস’ থেরাপি নিয়ে গবেষণা চলছে জোরকদমে।

Advertisement

অবসাদ সাড়ে না। নির্মূল করাও যায় না। কেবল তার তীব্রতা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা হয় নানা রকম থেরাপি দিয়ে। পাশাপাশি, রোগীকে ওষুধও খেয়ে যেতে হয়। গবেষকেরা বলছেন, দীর্ঘকালীন অবসাদ ধীরে ধীরে স্মৃতিনাশের পথে নিয়ে যায়। নানা সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, অবসাদ বাড়তে থাকলে তার থেকে অ্যালঝাইমার্সের লক্ষণ দেখা দেওয়া অসম্ভব কিছু নয়। তাই অবসাদকে জয় করা খুব দরকার। সাধারণ ওষুধ বা চিকিৎসায় তা প্রায় অসম্ভব।

অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে ‘কগনিটিভ ডিজ়ফাংশন’ হতে পারে। তখন অবসাদের লক্ষণ দেখা দেয়। ভুলে যাওয়ার সমস্যা বাড়ে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় চেনা মুখ, নিজের জিনিস, সহজ কথা মনে রাখতে সমস্যা হচ্ছে। দুশ্চিন্তা কাটছেই না। ইদানীংকালে কমবয়সিরাই এ সমস্যায় বেশি জর্জরিত। অল্প বয়স থেকেই অবসাদ কমানোর ওষুধ খেয়ে যাওয়া কাজের কথা নয়। সে ক্ষেত্রে ‘লাফিং গ্যাস’ থেরাপি কার্যকর হতে পারে বলেই দাবি করেছেন গবেষকেরা। প্রাথমিক ভাবে ২৭০ জনের উপর পরীক্ষা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, নিয়ন্ত্রিত ডোজ়ে লাফিং গ্যাস বা নাইট্রাস অক্সাইড দিয়ে থেরাপি করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফল পাওয়া গিয়েছে। এমনকি, কারও কারও ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই উপকার হয়েছে। তাঁদের দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ কমেছে। ভুলে যাওয়ার সমস্যাও ঘুচেছে।

‘লাফিং গ্যাস’ বা নাইট্রাস অক্সাইড কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলে। এটি বেশি মাত্রায় নিলে আবার নেশা হয়। তাই মাদক হিসেবে অনেকেই এই গ্যাস ব্যবহার করতেন আগে। অবশ্য ‘লাফিং গ্যাস’ দিয়ে নেশা করার প্রবণতাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অনেক দেশই। তবে চিকিৎসাক্ষেত্রে এর ব্যবহার অপরিহার্য। নিয়ন্ত্রিত ডোজ়ে ‘লাফিং গ্যাস’ প্রয়োগ করলে সেটি মস্তিষ্কে গিয়ে ‘এন-মিথাইল ডি-অ্যাসপারটেট’ নামক রিসেপ্টরকে অবরুদ্ধ করে দেবে। ওই রিসেপ্টর হল এক ধরনের নিউরোট্রান্সমিটার, যা মস্তিষ্কের কোষগুলির মধ্যে যোগাযোগ রেখে চলে। বদলে গ্লুটামেট নামক এক ধরনের নিউরোট্রান্সমিটারকে সক্রিয় করে তুলবে, যেটি মস্তিষ্কের কোষগুলিকে সতেজ করতে সাহায্য করবে। গ্লুটামেটের কাজ হল, মগজের কোষগুলির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা এবং উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার অবসান ঘটানো।

নাইট্রাস অক্সাইড আরও একটি কাজ করবে। স্মৃতির পাতাকে আরও উজ্জ্বল করে তুলবে। মস্তিষ্কের স্নায়ুগুলির সক্রিয়তা বাড়িয়ে যেমন মানসিক চাপ কমাবে তেমনই স্মৃতিনাশের ঝুঁকিও নাশ করবে। যদিও ‘লাফিং গ্যাস’ থেরাপি এখনও গবেষণার স্তরেই আছে। তবে এই নতুন পদ্ধতি যে কার্যকর হচ্ছে, সে বিষয়ে আশা রেখেছেন গবেষকেরা।

Advertisement
আরও পড়ুন