Covid Vaccine and Heart Attack

কোভিশিল্ডের সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকের কোনও সম্পর্ক নেই,হৃদ্‌যন্ত্র ভাল রেখেছে কোভিড টিকা, দাবি সিরামের

করোনার প্রতিষেধকের সঙ্গে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হওয়ার কোনও সম্পর্কই নেই বলে দাবি করেছে প্রতিষেধকটির নির্মাতা সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৫ ১৩:০৯
No link between Covid vaccines and sudden Heart Attack, says ICMR and NCDC

টিকা ক্ষতিহীন, বহু মানুষের হার্ট ভাল রেখেছে বলে দাবি সিরাম ও আইসিএমআরের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

করোনার টিকা নেওয়ার পরেই দুর্বল হয়েছে হার্ট, অভিযোগ এমনই। সাম্প্রতিক সময়ে আচমকা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে যে মৃত্যুর ঘটনাগুলি ঘটেছে, তার সঙ্গে কোভিড টিকার যোগসূত্র রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। এ দেশে করোনার যে টিকাগুলি দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে বড় সংখ্যক মানুষ নিয়েছেন কোভিশিল্ড টিকা। কিন্তু এই টিকার সঙ্গে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের কোনও সম্পর্কই নেই বলে দাবি করেছে প্রতিষেধকটির নির্মাতা সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিল (আইসিএমআর) এবং ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল (এনসিডিসি) তাদের যৌথ রিপোর্টেও জানিয়েছে, করোনার প্রতিষেধক হৃদ্‌রোগের কারণ নয়, বরং এই প্রতিষেধকের কারণেই অতিমারির আবহে জটিল হার্টের রোগ থেকে বেঁচে গিয়েছেন অনেকেই।

Advertisement

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় তৈরি করোনা টিকা নেওয়ার কারণে ‘থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’ নামের রোগ হচ্ছে, এমন অভিযোগ আগে উঠেছিল। করোনা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, তা স্বীকারও করে ব্রিটিশ-সুইডিশ ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা অ্যাস্ট্রোজেনেকা। ভারতে বহুল ব্যবহৃত কোভিশিল্ড টিকা তৈরি করেছিল এই অ্যাস্ট্রোজেনেকাই। দেশে যা উৎপাদন করেছে সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। ভারতে করোনা প্রতিষেধক হিসেবে কোভিশিল্ডের ব্যবহারে অনুমোদন দিয়েছিল খোদ নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সিরাম জানিয়েছে, কোভিশিল্ড টিকা এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে, যা কখনওই হৃদ্‌যন্ত্রে প্রভাব ফেলবে না, বরং ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে হার্টকে বাঁচাবে।

করোনার প্রতিষেধক হৃদ্‌যন্ত্রের উপরে কী প্রভাব ফেলেছে, তা নিয়ে দিল্লি এমসের ধাঁচেই গবেষণা চালাচ্ছে আইসিএমআর ও এনসিডিসি। যৌথ সমীক্ষার রিপোর্টে আইসিএমআরও দাবি করেছে, সাম্প্রতিক সময়ে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এমন বহু জনের উপরে সমীক্ষাটি চালানো হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, হৃদ্‌যন্ত্র বিকল হওয়ার সঙ্গে কোভিড টিকার কোনও যোগসূত্র নেই। বরং হৃদ্‌রোগের কারণ দীর্ঘ দিনের কোনও ক্রনিক অসুখ, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস ও জীবনযাপনে অনিয়ম। করোনার টিকায় ক্ষতি হয়নি, তা রক্ষাকবচের কাজ করেছে। অতিমারির সময়ে ভাইরাস বারে বারেই তার রূপ বদলেছে। জিনের গঠনবিন্যাস বদলে ফেলে আরও সংক্রামক চেহারা নিয়েছে। বিরল রোগেও আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। সে সব ক্ষেত্রে প্রতিষেধকই সুরক্ষা দিয়েছে। এমনও দেখা গিয়েছে, যাঁরা সঠিক ডোজ়ে করোনার প্রতিষেধক নিয়েছেন, তাঁদের হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা, যাঁরা নেননি তাঁদের থেকে অনেক কমে গিয়েছে। কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ড, উভয়ের গ্রহীতাদের উপরেই কাজ করে গবেষণায় একই ইতিবাচক ফল পাওয়া গিয়েছে।

এ দেশে কোভিড টিকার দ্বিতীয় ডোজ়ের পরে বুস্টার নিয়েছেন খুব অল্প সংখ্যক মানুষ। তার পিছনে টিকা নিয়ে তৈরি সংশয় অনেকাংশে দায়ী। দিল্লি এমসের প্রাক্তন অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়ার মত, করোনার টিকা সুরক্ষিত ও বিজ্ঞানসম্মত ভাবে প্রমাণিত। ১৯ জেলার ৪৭টি হাসপাতালে ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সিদের উপর সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, প্রতিষেধক কোনও ভাবেই হঠাৎ মৃত্যুর কারণ হতে পারে না। এর জন্য বাড়তে থাকা স্থূলত্ব, ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গায় বসে কাজ, যথেচ্ছ পরিমাণে সাপ্লিমেন্ট খাওয়া এবং কিছু ক্ষেত্রে জিনগত কারণও দায়ী। টিকা গুণগত মান বজায় রেখেই তৈরি, তাই ভুল বার্তা বিপজ্জনকও হতে পারে বলে দাবি করেছেন তিনি।

Advertisement
আরও পড়ুন