Vegan Eggs

‘নিরামিষ ডিম’ চেখে দেখেছেন? আমিষের সঙ্গে স্বাদে-গুণে পার্থক্য কোথায়? কোনটি বেশি ভাল

ভিগানদের চাহিদা মেটাতেই ‘নিরামিষ ডিম’-এর আবিষ্কার। লোকে বলে, এর স্বাদ নাকি আসল ডিমেরই মতো। বানানো যায় পোচ বা ভুর্জিও। কিন্তু তা মুরগির থেকে পাওয়া নয়। তবে কী ভাবে বানানো হয় ‘ভিগান ডিম’?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৫ ১৯:০৫
What are the differences between real and vegan eggs in terms of nutrients

ভিগান এগ কি মুরগির ডিমের উপযুক্ত বিকল্প। ছবি: সংগৃহীত।

স্বাস্থ্য ও পরিবেশের প্রতি যত্নবান হওয়ার জন্য প্রায় সর্বত্র নিরামিষাশী হওয়ার পরামর্শ। তারও এক ধাপ এগিয়ে গেলে ভিগান। ভিগানরা তাঁদের পাতে দুগ্ধজাত পণ্যও রাখেন না। ভিগানদের মূলমন্ত্র, খাদ্যতালিকা থেকে প্রাণিজ খাবার পুরোপুরি বাদ। কিন্তু দুধ থেকে যে প্রোটিন মেলে, ভিগানদের খাবারে সেটুকুও মেলে না। ভিগানদের প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে বিশ্বের বাজারে এসেছে নিরামিষ ডিম, যা আসলে ভিগান ডিম। অনেকেই বলেন, এর স্বাদ নাকি আসল ডিমেরই মতো। বানানো যায় পোচ বা ভুর্জিও। কিন্তু তা মুরগির থেকে পাওয়া নয়।

Advertisement

তবে কী দিয়ে বানানো হয় এই ডিম?

আনন্দবাজার ডট কমকে পুষ্টিবিদ রেশমী রায়চৌধুরী জানালেন, ভিগান ডিম আসলে দু’ধরনের হয়। একটি তরল আকারে, একটি ডিমের আকারে। দু’টিই কিনতে পাওয়া যায় অনলাইনে। বাইরের কোনও কোনও দেশে দোকানপাটেও মেলে। পুষ্টিবিদের কথায়, ‘‘মুগ ডালের থেকে প্রোটিন আইসোলেট নিয়ে তৈরি করা হয় এই ডিম। তার সঙ্গে রঙের জন্য হলুদ মেশানো হয়। আর থাকে ক্যানোলা অয়েল। স্বাদ ও টেক্সচার তৈরির জন্য বিটনুন দেওয়া হয়।’’

What are the differences between real and vegan eggs in terms of nutrients

ভিগান ডিমের স্বাদ নাকি আসল ডিমেরই মতো। বানানো যায় পোচ বা ভুর্জিও। ছবি: সংগৃহীত।

পুষ্টি উপাদানের ভিত্তিতে তুলনামূলক আলোচনা

ভিগান এগেও কিন্তু আসল ডিমের মতো ক্যালোরি রয়েছে। একটি বড় মুরগির ডিমের সমান ক্যালোরি রয়েছে ছোট একটি ভিগান ডিমে, যার মান ৭০ কিলোক্যালোরি। ভিগান এগ-এ ফ্যাট থাকে ৪.৫ গ্রাম। মুরগির ডিমে যা এরই কাছাকাছি। দুই ধরনের ডিমেই প্রোটিন থাকে প্রায় ৫ গ্রাম থেকে ৬.২ গ্রামের মধ্যে। ভিগান এগ-এ কার্বোহাইড্রেট থাকে ১ গ্রাম (যদিও কার্বোহাইড্রেট কম থাকায় পুষ্টিবিদ থেকে বিজ্ঞানীরা বার বার প্রশ্ন তুলছেন)। আর দু’টিই কোলেস্টেরল মুক্ত।

ভিগান এগ কি মুরগির ডিমের উপযুক্ত বিকল্প?

পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, ভিগান এগ-এ অনেক উপাদানই কম থাকে। যেমন, মুরগির ডিমে ভিটামিন ডি-র পরিমাণ অনেক বেশি। এ দিকে ভিগান ডিমে তার পরিমাণ খুবই কম। ভিটামিন বি ১২ এবং লুটিনের ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই। ভিগান এগ-এ সোডিয়ামের পরিমাণ অনেক বেশি, যা আবার হার্টের জন্য একদমই ভাল নয়। যেহেতু ভিগান এগ প্রক্রিয়াজাত, তাই সব মিলিয়ে মুরগির ডিমের বিকল্প এটি কোনও ভাবেই হতে পারে না। প্রক্রিয়া করার সময়ে রাসায়নিক ব্যবহার করতেই হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক।

উপায় কী?

যাঁরা ভিগান ডায়েটে অভ্যস্ত, তাঁদের জন্য পুষ্টিবিদ রেশমীর পরামর্শ, ‘‘বাড়িতেই ভিগান এগ বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে। যেখানে প্রক্রিয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তার জন্য প্রয়োজন কেবল মুগ ডাল, সুজি, হলুদ, বেকিং সল্ট এবং বিটনুন। এগুলি নিয়ে মিক্সিতে বেটে নিতে হয়। ওটা দিয়ে অমলেট বানানো যায়। একে বলে ভিগান এগ অমলেট।’’

সারাংশ কী?

প্রাকৃতিক ভাবে পাওয়া খাদ্যের কোনও বিকল্প হতে পারে না বলেই মনে করেন পুষ্টিবিদ। আসল ডিমের মতোই পুষ্টিগুণ রাখার চেষ্টা করা হলেও ভিগান এগে লুটিন, ভিটামিন ডি এবং বি ১২-এর পরিমাণ কম থাকায় এবং সোডিয়াম বেশি থাকায় মুরগির ডিমের সঙ্গে তা পাল্লা দিতে পারে না।

Advertisement
আরও পড়ুন