আইএসএল ট্রফি। —ফাইল চিত্র।
কী ভাবে আইএসএল আয়োজন করতে চায়, তা নিয়ে ক্লাবজোটকে প্রস্তাব দিতে বলেছিল কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই প্রস্তাব জমা দিল ক্লাবজোট। এই প্রস্তাবে শুধু ইস্টবেঙ্গল সই করেনি।
সাত দফার প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ক্লাবজোট এই বছর বাদ দিয়ে প্রতি বছর সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে ১০ কোটি টাকা করে দেবে। লিগ আয়োজনের সব খরচ ক্লাবজোটের। তাদের হাতে সরকারি ভাবে দায়িত্ব আসার ৪৫ দিনের মধ্যে লিগ শুরু করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে ক্লাবগুলি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আইএসএলের ক্লাব এবং সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের (এআইএফএফ) সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক। ক্লাবগুলিকেই ক্রীড়া মন্ত্রকের তরফে বলা হয়, আইএসএল আয়োজন নিয়ে তাদের পরিকল্পনা জমা দিতে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শুক্রবারই ক্রীড়া মন্ত্রককে প্রস্তাব পাঠিয়ে দিল ক্লাবগুলির জোট। চিঠির প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে এআইএফএফকেও।
আইএসএল আয়োজন নিয়ে ক্রীড়া মন্ত্রককে দেওয়া চিঠিতে সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছে ক্লাবগুলির জোট।
১) আইএসএল পরিচালনার জন্য একটি কোম্পানি গঠন করা হবে। ক্লাবগুলির তৈরি কোম্পানির হাতে স্থায়ী ভাবে আইএসএলের সিংহভাগ শেয়ার থাকবে। এআইএফএফকেও কিছু শেয়ার দেওয়া হবে। লিগের বাণিজ্যিক এবং কৌশলতম সহযোগী নির্ধারণের অধিকার থাকবে ক্লাবগুলির সংস্থার হাতে। চাইলে ক্লাবগুলি অন্য অংশীদার আনতে পারবে। কোম্পানির বোর্ড অফ ডিরেক্টর্স-এ ফেডারেশনের এক জন প্রতিনিধি থাকবেন।
২) প্রতিযোগিতা পরিচালনা, সূচি তৈরি, শৃঙ্খলারক্ষা, ক্লাব লাইসেন্সিংয়ের মতো বিষয়গুলি থাকবে এআইএফএফের হাতে। রেফারি এবং ম্যাচ অফিশিয়াল নিয়োগের দায়িত্বও থাকবে ফেডারেশনের হাতে। তাঁদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করবে ফেডারেশন। জাতীয় দলের সূচি এবং অনুশীলনের বিষয়টি দেখবে ফেডারেশন। লিগের সমস্ত ব্যয়ভার নেবে ক্লাবগুলির তৈরি কোম্পানি। আর্থিক ক্ষতির কোনও দায় ফেডারেশনকে নিতে হবে না।
৩) লিগ পরিচালনার খরচ, ম্যাচ আয়োজনের খরচ, ক্লাবগুলির যাতায়াত এবং হোটেলের সব খরচ বহন করবে লিগ কোম্পানি। লিগের মিডিয়া, স্পনসরশিপ, লাইসেন্সিং, টেলিভিশন এবং ডিজিটাল স্বত্ব থাকবে কোম্পানির হাতে। পরিচালনগত এবং আর্থিক দায় সম্পূর্ণ নেবে কোম্পানি।
৪) বর্তমান অনিশ্চয়তা এবং ডামাডোলের পরিস্থিতিকে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে ফেডারেশনকে কোনও টাকা দেবে না ক্লাবগুলির কোম্পানি। ২০২৬-২৭ অর্থবর্ষ থেকে ফেডারেশনকে ১০ কোটি টাকা করে দেওয়া হবে। ফুটবলের তৃণমূল স্তর এবং যুব পর্যায়ের উন্নতির জন্য এই টাকা দেওয়া হবে। রেফারি, অন্য ম্যাচ অফিসিয়াল-সহ সংশ্লিষ্ট সকলের টাকা দেবে লিগ কোম্পানি।
৫) ভারতীয় ফুটবলে মরসুম নষ্ট বা দুই মরসুমের মধ্যে দীর্ঘ ব্যবধানে রাজি নয় ক্লাবজোট। অনুমতি পাওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে আইএসএল শুরু করতে প্রস্তুত ক্লাবগুলি।
৬) প্রয়োজনীয় কিছু পরিবর্তনের জন্য সংবিধান সংশোধন করতে হবে। ফেডারেশন এবং ক্রীড়া মন্ত্রকের সহায়তায় বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হবে। সংবিধান সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের মামলার ইতিবাচক ফলাফলের লক্ষ্যে ক্রীড়া মন্ত্রকের সহায়তা এবং পরামর্শ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে কাজ করুক ফেডারেশন।
৭) ক্লাব জোটের প্রস্তাব বিবেচনা করবে এআইএফএফ। ক্রীড়া মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা করবে। ফেডারেশন, মন্ত্রক এবং ক্লাব জোট মিলে যৌথ কমিটি তৈরি হবে। ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে কাজ করবে সেই কমিটি।
ক্লাব জোটের এই প্রস্তাব গৃহীত হলে আইএসএলে ফেডারেশনের হস্তক্ষেপের অধিকার প্রায় থাকবে না।