Winter Dust Allergy

তাপমাত্রার পারদ নামছে, ঠান্ডায় বাড়ে ‘ডাস্ট অ্যালার্জি’, শ্বাসকষ্ট ভোগায়, রেহাই পাওয়ার উপায় কী?

ডাস্ট অ্যালার্জি রীতিমতো নাজেহাল করে দিতে পারে। হাঁচি শুরু হলে আর থামবে না। সেই সঙ্গে শ্বাসকষ্ট ভোগাবে। ধুলোবালি নাক-মুখ দিয়ে বেশি ঢুকে গেলে সংক্রমণের আশঙ্কাও বাড়বে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:৫৮
What causes winter dust allergies and how to prevent them

ঠান্ডা বাড়লে ডাস্ট অ্যালার্জির প্রকোপ বাড়ে, কী কী নিয়ম মানলে সমস্যা হবে না? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

তাপমাত্রার পারদ নামছে। শহরজুড়ে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েছে। আগামী কয়েকদিনে পারদ পতন হওয়ার সম্ভাবনাও আছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ঠান্ডা পড়লে যেমন ভাইরাল জ্বর, সর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়ে, তেমনই মাথাচাড়া দেয় নানা রকম অ্যালার্জি। শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় দূষণের পাল্লা ভারী থাকে, তাই ধুলোবালি থেকে ‘ডাস্ট অ্যালার্জি’ হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। যাঁরা এমনিতেই অ্যালার্জিতে ভোগেন, তাঁদের এই সময়টাতে একটু বেশিই সতর্ক থাকা জরুরি। ডাস্ট অ্যালার্জি রীতিমতো নাজেহাল করে দিতে পারে। হাঁচি শুরু হলে আর থামবে না। সেই সঙ্গেই শ্বাসকষ্ট ভোগাবে। ধুলোবালি নাক-মুখ দিয়ে বেশি ঢুকে গেলে সংক্রমণের আশঙ্কাও বাড়বে।

Advertisement

ডাস্ট অ্যালার্জি কতটা মারাত্মক হতে পারে?

শীতকালে বাতাস খুব শুষ্ক থাকে। এই শুষ্ক বাতাসে ধূলিকণা, পরাগ রেণু এবং বাতাসে ভাসমান দূষণবাহী কণা শ্বাসের সঙ্গে শরীরে ঢুকে যায়। শুধু বাইরের ধুলোবালি নয়, ঘরের ভিতরেও জমা ধুলোময়লা, রান্নার ধোঁয়া অ্যালার্জির সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। শীতে ঘরের দরজা-জানলা বেশির ভাগ সময়েই বন্ধ থাকে। এতে বাইরের অক্সিজেনসমৃদ্ধ বাতাসের চলাচল কম হয়। ফলে কার্পেট, সোফা, পর্দা, বিছানায় জমে থাকা ধুলোবালি বা 'ডাস্ট মাইট’ ঘরের ভেতরেই ঘুরপাক খায় এবং নাক-মুখ দিয়ে শরীরে ঢুকে যায়। 'ডাস্ট মাইট’ এক ধরনের ক্ষুদ্র পোকা যা ধুলোয় জন্মায়। লেপ, কম্বল, উলের পোশাকেও বাসা বেঁধে থাকে। এগুলি বাতাসে মিশে শ্বাসের সঙ্গে ঢুকে সরাসরি ফুসফুসে গিয়ে পৌঁছোয় ও ফুসফুসের কোষগুলির ক্ষতি করে। সংক্রমণ ঘটে শ্বাসনালিতে। ফলে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, নাগাড়ে হাঁচি-কাশি হতে থাকে। চোখ জ্বালা, চোখ থেকে অনবরত জল বেরোতে পারে। এর থেকে অ্যালার্জিক রাইনিটিসের সমস্যাও বাড়তে পারে।

এই ধরনের অ্যালার্জি থেকে ত্বকের সংক্রমণও ঘটে। ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যাওয়া, চুলকানি, খসখসে হয়ে যাওয়া, ফোস্কা পড়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়, যাকে ‘অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস’ বলে।

রেহাই পাওয়ার উপায় কী?

ডাস্ট অ্যালার্জি থাকলে রাস্তায় বেরোলে মাস্ক পরতেই হবে। ধুলোবালি যেন নাক বা মুখ দিয়ে ঢুকতে না পারে। ঘর পরিষ্কার করার সময়ে অবশ্যই কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ভাল করে ঢেকে নেবেন।

বাড়ির ভিতর যতটা সম্ভব খোলামেলা রাখার চেষ্টা করুন। ঘরে রোদ ঢুকতে দিন। রোদ না ঢুকলে সমস্যায় পড়তে পারেন অ্যালার্জির রোগীরা। ঘরবাড়ি, পোশাক পরিষ্কার রাখতে হবে।

বেশি ঠান্ডা লাগানো যাবে না। ঠান্ডা লেগে সর্দি-কাশি ধরে গেলে তার থেকেও অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। অল্প সর্দিকাশি হলেও আগে থেকেই নুনজলে গার্গল শুরু করুন। গরম জলের ভাপ নিন নিয়মিত।

কোনও রকম ঠান্ডা পানীয় খাওয়া যাবে না। প্যাকেটজাত ফলের রসও নয়। এই ধনের ঠান্ডা পানীয়ে এমন রাসায়নিক থাকে যা শরীরে গেলেই অ্যালার্জির সমস্যা বাড়াতে পারে।

বেকারির যে কোনও খাবার সমস্যা বাড়াতে পারে। কেক, পেস্ট্রি, পাউরুটি কম খান।

বিভিন্ন ধরনের বাদাম অ্যালার্জির সমস্যা বাড়াতে পারে। চিনাবাদাম, আখরোট, কাজুবাদাম, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে কাঠবাদাম খেতেও মানা করেন চিকিৎসকেরা।

শরীর ভাল রাখতে নানা রকম সব্জি খেতেই বলেন চিকিৎসকেরা। তবে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস থাকলে কয়েক রকম সব্জি না খাওয়াই ভাল, যেমন বেগুন, ঢেঁড়শ, মাশরুম এড়িয়ে চলাই ভাল।

আদা, গোলমরিচ, দারচিনি, লবঙ্গ দিয়ে তৈরি চা অ্যালার্জির সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে। রোজ সকালে এক চামচ করে মধু খেলেও অ্যালার্জির সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

Advertisement
আরও পড়ুন