Fast-Mimicking Diet

‘ফাস্ট মিমিকিং ডায়েট’ কী? মাত্র পাঁচ দিনেই কমবে ওজন, বার্ধক্যের ছাপ পড়বে না শরীরে

যৌবন ধরে রাখার ডায়েট। পাঁচ দিন বা সাত দিনের ডায়েটে কোষের পুনর্গঠন হবে, শরীরে প্রদাহ কমবে এবং বয়সজনিত রোগের ঝুঁকিও কমবে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৫ ১৩:১১
What is fasting-mimicking diet, how does it work

যৌবন ধরে রাখার ডায়েট, মেনে চলুন মাত্র ৫ দিন। ছবি: ফ্রিপিক।

উপোস করে ওজন কমানোর প্রয়োজন নেই। ইন্টারমিটেন্টে ফাস্টিংয়ের মতো দীর্ঘ সময় না খেয়েও থাকতে হবে না। কিটো ডায়েটের মতো পাত থেকে কার্বোহাইড্রেট একেবারে ছেঁটে ফেলারও প্রয়োজন নেই। এই ডায়েটে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ও ফ্যাট বেশি খেতে হয় এবং নিয়ম হল ক্যালোরি মেপে খাওয়া। মাত্র পাঁচ দিনের ডায়েটে ওজন কমে এবং শরীরে প্রদাহও উধাও হয়। ফাস্ট-মিমিকিং ডায়েট (এফএমডি) কমবয়সিদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। কম সময়ে ওজন কমানোর জন্য এই ডায়েটের দিকেই ঝুঁকছেন অনেকে। পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) থাকলে অথবা হজম সংক্রান্ত সমস্যা বেশি হলে এফএমডি ডায়েটে লাভ হতে পারে।

Advertisement

কী এই ফাস্ট-মিমিকিং ডায়েট?

পরিমাণ ও ক্যালোরি মেপে খাওয়া। উপবাসের মতো না খেয়ে থাকা নয়, তবে সীমিত পরিমাণে খেতে হবে এবং পাঁচ দিনের প্রতিটি দিন ক্যালোরি মেপে খাবার খেতে হবে। চাইলে এই ডায়েট সাত দিন অবধিও টানা যায়। কার্বোহাইড্রেট ও প্রাণিজ প্রোটিন কম খেয়ে মূলত উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাটই খাওয়ার নিয়ম এই ডায়েটে। এমন ভাবে খাবার খেতে হবে, যাতে পেট খুব সামান্যই ভরে। এতে শরীরে জমা মেদ পুড়েই শক্তি তৈরি হবে, তাতে লাভ হবে দুটো— ১) পেট ফাঁকা রেখে ডায়েট করতে হবে না, তাতে অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা কম। ২) উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ও ফ্যাট হজম সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করবে, কোষের পুনর্গঠন হবে এই ডায়েটে, ক্যালোরির ঘাটতিও হবে না।

দেশের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’ থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এই ফাস্ট-মিমিকিং ডায়েটের সুফল নিয়ে লেখা হয়েছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, নিয়ম মেনে এই ডায়েট করতে পারলে দীর্ঘ দিন যৌবন ধরে রাখা সম্ভব। পাশাপাশি, মানসিক স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে এই ডায়েটে। অ্য়ালঝাইমার্স রোগীদের চিকিৎসায় এখন এই ডায়েট মেনে চলার কথা বলছেন অনেক চিকিৎসক।

কী ভাবে খেতে হবে?

এফএমডি ডায়েটে ক্যালোরির পরিমাণ খেয়াল রাখা খুব জরুরি। পাঁচ দিনের জন্য যদি ডায়েটটি করা হয়, তা হলে ওই পাঁচ দিনের প্রতি দিন ক্যালোরির পরিমাপ হবে ৮০০-১১০০ ক্যালোরি।

প্রথম দিন

প্রথম দিনের জন্য ক্যালোরি হতে হবে ১০০০-১১০০ ক্যালোরি।

কী খাবেন— সকালের জলখাবারে নানা রকম বাদাম (আখরোট, কাঠবাদাম), দানাশস্য যেমন ওট্‌স। রান্না হতে হবে অলিভ তেলে।

দুপুরে মরসুমি যে কোনও সব্জির স্যুপ।

রাতে সেদ্ধ সব্জি বা স্যুপ, অলিভ তেলে সাঁতলানো পনির বা টোফু।

দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম দিন

এই ক’টা দিন ক্যালোরির মাত্রা আরও কমাতে হবে। প্রতি দিনের ক্যালোরি হতে হবে ৭০০-৮০০। মূলত স্বাস্থ্যকর ফ্যাটই বেশি খেতে হবে। প্রথম দিন যে পরিমাণে খেয়েছিলেন, দ্বিতীয় দিনের পর থেকে পরিমাণ আরও কমাতে হবে।

সকালের জলখাবারে অল্প পরিমাণে বাদাম বা বীজ, সঙ্গে ওট্‌স বা কিনোয়া, সামান্য ফল।

দুপুরের খাবার হবে বালকা। ছোট এক বাটি সব্জির স্যুপ, অথবা শাকপাতা সেদ্ধ, বা সবুড স্যালাড খেতে হবে।

রাতের খাবার হবে সেদ্ধ সব্জি, যদি আমিষ খেতেই হয় তা হলে বেক্‌ড ফিশ বা অল্প চিকেন সেদ্ধ সব্জি দিয়ে খেতে হবে।

এই ডায়েট করতে হলে প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। দুধ চা বা কফি একেবারেই চলবে না। হার্বাল টি খেতে হবে। সব্জির মধ্যে পালং শাক, ব্রকোলি, লাউ, ফুলকপি, টম্যাটো, গাজর বেশি পরিমাণে রাখতে হবে। এগুলিতে ক্যালোরি কম ও ফাইবার বেশি। স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের মধ্যে বাদাম, বীজ (কুমড়োর বীজ, সূর্যমুখীর বীজ),অ্যাভোকাডো রাখা যেতে পারে। এই ডায়েটে যেহেুতু ক্যালোরির পরিমাণ সীমিত, তাই ভারী শরীরচর্চা করা যাবে না।

এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। যে কোনও ডায়েট শরীর বুঝেই করা উচিত। তাই চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ ছাড়া ডায়েট করা ঠিক হবে না।

Advertisement
আরও পড়ুন