Fish Eyeballs Benefits

মাছের চোখ চিবিয়ে খেতে অস্বস্তি? কিন্তু আশ্চর্য ক্ষমতাসম্পন্ন, ঔষধিগুণে ভরা মৎস্যচক্ষুই সুস্থতার চাবিকাঠি!

মাছ খাওয়ার সময়ে চোখ বাদ দিলে চলবে না। ভাল করে চিবিয়ে খেতে হবে। ওই দুই ছোট বলের মতো বস্তু থেকে যে কত উপকার মিলতে পারে, তা কল্পনাতীত! ব্যাখ্যা করলেন পুষ্টিবিদ।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৫ ১৬:১১
Why do we have to eat fish eyeballs regularly for a better health, explained by Nutritionist

মাছের চোখ চিবিয়ে খেলে স্বাস্থ্যে কী কী উপকারিতা? ছবি: সংগৃহীত।

ছোটবেলায় মা-ঠাকুমায়েরা বলতেন, মাছ খাওয়ার সময়ে চোখ বাদ দিলে চলবে না। ভাল করে চিবিয়ে খেতে হবে। ওই দুই ছোট বলের মতো বস্তু থেকে যে কত উপকার মিলতে পারে, তা কল্পনাতীত! আমেরিকাবাসী বাঙালি পুষ্টিবিদ রেশমী রায়চৌধুরী বলছেন, ‘‘ছোট মাছের চোখ আপনার চোখ খারাপ সারিয়ে দিতে পারে। তা ছাড়াও মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। শিশুদের অটিজ়মের মতো সমস্যা থাকলেও ছোট মাছের চোখ খাওয়া উচিত। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এর তুলনা হয় না। মাছের ঝোল খাওয়ার সময়ে চোখগুলি বাদ দিলে চলবে না। প্রত্যেকের জন্যই খুব উপকারী। এমনকি বড় মাছের চোখও বাদ দেওয়া উচিত নয়। তবে মাছের মুড়ো চিবিয়ে খেলে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বরং শুধু চোখদু’টি চিবিয়ে খেয়ে নিলে ভাল।’’

Advertisement

ছোট মাছের চোখ কী কী পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ?

মাছের চোখের পুষ্টি উপাদান এবং তাদের উপকারিতা ব্যাখ্যা করলেন পুষ্টিবিদ। প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এ— এই ত্রয়ীর উপস্থিতিতেই ছোট মাছের চোখ ‘সুপারফুড’ হয়ে ওঠার যোগ্য। এই ত্রয়ী আবার শরীরের মূলত তিনটি অঙ্গের স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়। চোখ, হার্ট এবং মস্তিষ্কের জন্য অপরিহার্য হতে পারে। এ ছাড়াও অনেক পুষ্টি উপাদান এবং উপকারিতা রয়েছে মাছের চোখের। দেখে নেওয়া যাক, কোনও উপাদান কিসে সাহায্য করে।

প্রোটিন: যে কোনও ধরনের প্রোটিনের কাজ হল, কোষের গঠন ও মেরামতি। ছোট মাছের চোখে থাকা প্রোটিনও সে কাজই করে।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: স্বাস্থ্যের খুব জরুরি এক উপাদান এটি। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের মধ্যে থাকে ইপিএ (আইকোসাপেন্টাইনোইক অ্যাসিড) এবং ডিএইচএ (ডোকোসাহেক্সাইনোইক অ্যাসিড)। এই দু’টিই ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। শরীরের জন্য অপরিহার্য পুষ্টি, অথচ শরীর নিজে থেকে তা তৈরি করতে পারে না। এগুলি কিছু মাছ, শেলফিশ এবং কিছু শৈবালে পাওয়া যায়। এই দু’টি ফ্যাটি অ্যাসিড হার্ট এবং শিশুমস্তিষ্কের জন্য উপকারী। স্মৃতিশক্তি, মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যও এই দুই ফ্যাটি অ্যাসিড কার্যকরী। পাশাপাশি, চোখের জন্যও খুব ভাল।

Why do we have to eat fish eyeballs regularly for a better health, explained by Nutritionist

ছোট মাছের চোখ ‘সুপারফুড’ হয়ে ওঠার যোগ্য। ছবি: সংগৃহীত।

লিউটিন ও জ়িয়াজ়্যান্থিন: এগুলি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট বৈশিষ্ট্যযুক্ত ক্যারোটিনয়েড, যা চোখের স্বাস্থ্যের জন্য খুব প্রয়োজন। এগুলি মাছের চোখের ম্যাকুলায় পাওয়া যায়, যেগুলি মানুষের চোখে আসা নীল আলোর (স্ক্রিন থেকে যে ‘ব্লু রে’ বেরোয়) ফিল্টার হিসেবে কাজ করে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের হাত থেকে রক্ষা করে। ছানি পড়া রোধ করতেও সাহায্য করে।

কোলাজেন: বিদেশে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করতে আজকাল প্রক্রিয়াজাত কোলাজেন খাচ্ছেন অনেকেই। এ দিকে ভারতের মতো দেশে পুকুরে পাওয়া ছোট মাছের চোখেই পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে কোলাজেন।

ভিটামিন বি১২: স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়াতে পারে ভিটামিন বি১২, যার দুর্দান্ত উৎস ছোট মাছের চোখ।

রড সেল এবং কোন সেল: সারা দিন ধরে ফোনে বা টিভিতে অথবা ল্যাপটপ-কম্পিউটারে চোখ থাকে নতুন প্রজন্মের। কাজের জন্যও, শখের জন্যও। স্ক্রিনের নীল রশ্মির সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে যেন সবাই। আর সে ক্ষেত্রে নিজের চোখ ঠিক রাখতে মাছের চোখের উপর ভরসা রাখতেই হবে। ছোট মাছের রেটিনায় থাকে রড সেল এবং কোন সেল। কম আলোতেও যাতে দৃষ্টির সমস্যা না হয়, তার খেয়াল রাখে রড সেল। আর অতিরিক্ত চোখ ঝলসানো আলোতে যাতে রং এবং উচ্চ-রেজ়োলিউশনে চোখের সমস্যা না হয়, সে দিকে নজর রাখে কোন সেল।

Advertisement
আরও পড়ুন