Winter Vomiting Disease

শীত পড়তেই ঘরে ঘরে ডায়েরিয়া, সর্দি-কাশির চেয়েও বাড়ছে ‘উইন্টার ভমিটিং’ রোগটি কী?

ঘরে ঘরে বমি, পেটখারাপ। বাড়িতে রান্না খাবার খেলেও তা ঠিকমতো হজম হচ্ছে না। অম্বল, পেট ফাঁপার সমস্যাও বাড়ছে। এর কারণ কী?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:৫৬
Winter Diarrhoea and vomiting disease rises very rapidly, what are the prevention tips

ঘরে ঘরে বমি, ডায়েরিয়ার কারণ কী, সাবধানে থাকতে কী করবেন? ছবি: ফ্রিপিক।

মরসুম বদলের সময়ে পেটের অসুখ, ভাইরাল জ্বর লেগেই থাকে। তবে এ বছর পেটের রোগ নিয়ে চিন্তা খানিক বেশি। শীত পড়তেই যত না সর্দি-জ্বর হচ্ছে, তার চেয়েও বেশি বমি, পেটখারাপের সমস্যা ভোগাচ্ছে। খাদ্যনালির সংক্রমণে ভুগছেন বহু জন। পেটের গোলমাল হলে তা সহজে সারতে চাইছে না। একটানা অনেক দিন থাকছে। পেট ভার, খিদে কমে যাওয়া, সব সময়েই বমি ভাব থাকছে। হজমের সমস্যাও ভোগাচ্ছে।

Advertisement

আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময়ে বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়ার সক্রিয়তা বাড়ে। মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলেন, ‘‘ঋতুবদলের সময়ে জীবাণুদের বংশবৃদ্ধি হয়। একগুচ্ছ ভাইরাস দাপট দেখাতে থাকে। সর্দিকাশির অ্যাডিনোভাইরাস তো আছেই, শ্বাসনালির অসুখের জন্য দায়ী রাইনোভাইরাস বা রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সোয়াইন ফ্লু-র মতো সংক্রামক রোগের প্রকোপও বাড়ে। এ বছর নোরোভাইরাস নামক একধরনের ভাইরাসের প্রকোপও দেখা যাচ্ছে। এর জেরে নানা জায়গায় ‘উইন্টার ভমিটিং ডিজ়িজ়’-এ আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।’’

ভাইরাস যদি খাবার বা জলের মাধ্যমে শরীরে ঢোকে তা হলে অন্ত্রে সবচেয়ে আগে সংক্রমণ ঘটাবে। একে বলা হয় ‘ভাইরাল গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস’। খাদ্যনালিতে অনেক ভাল ব্যাক্টেরিয়াও থাকে, যারা খাবার পরিপাকে সাহায্য করে। কিন্তু বাইরে থেকে কোনও সংক্রামক ভাইরাস সেখানে ঢুকে পড়লে তীব্র প্রদাহ শুরু হয়। খাবার ঠিকমতো হজম হয় না, পেটে যন্ত্রণা শুরু হয়। পেটখারাপ, বমি এবং তা থেকেই জ্বর চলে আসে। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, নোরোভাইরাসের সংক্রমণ ঘটলেও এমনটাই হয়। আরও এক ধরনের ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত হলে পেটের রোগ বাড়ে, তা হল রোটাভাইরাস। এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটলে তা প্রায় এক সপ্তাহ ভোগাতে পারে।

কী ভাবে সাবধানে থাকবেন?

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে এই অসুখ এড়ানো সম্ভব। রান্নাঘর ও খাওয়ার জায়গা পরিষ্কার রাখুন। বাসন মাজার জন্য পরিষ্কার জল ব্যবহার করুন। মুখ ধোয়ার সময়ে ব্যবহার করুন পরিষ্কার ও পরিস্রুত জল।

সারা বছরই পরিস্রুত জল খেতে হবে। রাস্তাঘাটের যে কোনও জায়গা থেকে জল খাবেন না। প্রয়োজনে বোতলবন্দি বা ফোটানো জল খান। তবে জল বেশি করে খেতে হবে।

বাইরের কোনও খাবারই খাওয়া চলবে না। সে দোকান থেকে কেনা পিৎজ়া, বার্গার হোক বা রাস্তায় বিক্রি হওয়া তেলেভাজা, চপ, রোল-চাউমিন বা নরম পানীয়। এমনকি লাল-নীল শরবত, লস্যি, লেবু বা পুদিনার শরবতও বিপজ্জনক হতে পারে।

যে বোতল থেকে জল পান করছেন বা যে পাত্রে জল রাখছেন, সেটি পরিচ্ছন্ন থাকা জরুরি। যদি ওয়াটার ফিল্টার বা পিউরিফায়ার ব্যবহার করেন, তবে সেগুলি সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। পিউরিফায়ারও যদি পরিচ্ছন্ন না থাকে, তা হলে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে।

রান্না করা খাবার এবং অবশিষ্ট খাবার পরিষ্কার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন, যাতে মশা-মাছি বা পোকামাকড় বসতে না পারে। ফ্রিজে রাখা বাসি খাবার খাবেন না।

Advertisement
আরও পড়ুন