Robotic Joint Replacement Surgery

চিকিৎসকের সাহায্য ছাড়া অস্ত্রোপচার করছে রোবট? বিশ্বে প্রথম বার এমন হাঁটু প্রতিস্থাপন হল এ দেশে

এ দেশে রোবটিক সার্জারি এখন খুবই জনপ্রিয়। তবে সেই রোবটকে চালনা করেন চিকিৎসকই। এই প্রথম বার রোবটিক সার্জারি এমন ভাবে হল, যার বেশির ভাগটাই চিকিৎসকের সাহায্য ছাড়া সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৫ ১৪:৪৬
World’s first fully autonomous robotic joint replacement surgery sets a new global benchmark

নতুন ধরনের রোবট নিজেই করছে নিখুঁত অস্ত্রোপচার। ফাইল চিত্র।

অপারেশন কক্ষে বসে থাকবেন চিকিৎসক। তাঁর হাত থাকবে কম্পিউটারের বোতামে। সঙ্গে থাকবে ভিডিয়ো গেমের জয়-স্টিকের মতো একটি কন্ট্রোল সিস্টেম। তিনিই দূর থেকে চালনা করবেন একটি যন্ত্রকে। সেই যন্ত্রটি তার অসংখ্য হাত নেড়ে অস্ত্রোপচার করবে রোগীর শরীরে। চিকিৎসক কেবল পরিচালনা করে যাবেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় এরই নাম ‘রোবটিক অ্যাসিস্টেড সার্জারি’, যার মাধ্যমে যে কোনও জটিল অস্ত্রোপচারই করা যায়। এ দেশে রোবটিক সার্জারি এখন খুবই জনপ্রিয়। তবে সেই রোবটকে চালনা করেন চিকিৎসকই। এই প্রথম বার রোবটিক সার্জারি এমন ভাবে হল যার বেশির ভাগটাই চিকিৎসকের সাহায্য ছাড়া সম্ভব হয়েছে। অর্থাৎ, রোবট নিজে থেকেই রোগীকে দেখেশুনে, ছুরি-কাঁচি চালিয়ে নিখুঁত অস্ত্রোপচার করেছে। দিল্লির একটি হাসপাতালে এই সার্জারি হয়েছে যার নাম ‘অটোনমাস রোবটিক সার্জারি’।

Advertisement

এক রোগীর হাঁটু প্রতিস্থাপন করা হয়েছে এই পদ্ধতিতে। চিকিসকেরা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের অন্তত ২০ শতাংশ রোবট নিজেই করেছে। সেখানে কারও সাহায্য লাগেনি। চিকিৎসকেরা দাবি করেছেন, বিশ্বে প্রথম বার এমন সার্জারি হয়েছে এ দেশে।

১৯৮৫ সালে নিউরোলজিক্যাল বায়োপসি করতে প্রথম রোবটের সাহায্য নেওয়া হয়। এর পরে ২০০০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘দা ভিঞ্চি’ নামে একটি সংস্থা এই রোবট বাজারে আনার পরে চিকিৎসা বিজ্ঞানের জগতে নতুন দিগন্ত খুলে যায়। এত দিন বাইরের দেশগুলিতেই দা ভিঞ্চি সার্জিক্যাল রোবটের প্রয়োগ হচ্ছিল। কিন্তু এখন এ দেশেও হচ্ছে।

তবে ‘অটোনমাস রোবটিক সার্জারি’ এই প্রথম বলেই দাবি করা হয়েছে। রোবট যত দক্ষই হোক না কেন, তাকে চালনা করেন চিকিৎসকই। অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে সার্জন কনসোলে বসার পরে রোবটটিকে আগে রোগীর শরীরের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হয়। তার জন্য অসংখ্য বৈদ্যুতিক তার থাকে। এ বার যে জায়গায় অস্ত্রোপচার হবে, সেখানে রোবটিক পোর্টগুলি ‘ডকিং’ করা হয়। এই পোর্টের মাধ্যমেই রোবটের হাত শরীরে ঢুকে অস্ত্রোপচার করে। চিকিৎসক তখন গোটা প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণ করেন। সার্জন ঠিক যে ভাবে ছুরি-কাঁচি ধরে পেটের শরীরে ঢোকাবেন, যে ভাবে হাত নাড়াবেন, তিনি কনসোলে বসে ঠিক তেমনই করেন, আর রোবট সেটি অনুসরণ করে শুধু অস্ত্রোপচারটি করে। এই পদ্ধতিকে বলা হয় ‘মাস্টার-স্লেভ টেকনিক’। যান্ত্রিক হাতে সার্জারি হয় বলে তাতে ভুলত্রুটির আশঙ্কা কম। অস্ত্রোপচারের পরে খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতেও পারেন রোগী।

হাঁটু প্রতিস্থাপনের আগে রোগীর সিটি স্ক্যান করে হাঁটুর ৩-ডি রেখচিত্র বার করা হয়। এই ছবি দেখেই ডাক্তারেরা বুঝতে পারেন, হাঁটুর কোন অংশে ক্ষয় হচ্ছে, অস্ত্রোপচার করতে হবে ঠিক কোন জায়গায়। কম্পিউটারে সেই রেখচিত্রের ৩-ডি মডেল বার করে অস্ত্রোপচারের পুরোটাই আগাম ম্যাপিং করে নেওয়া হয়। অস্ত্রোপচারের চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যেই রোগী স্বাভাবিক ভাবে হাঁটাচলা করতে পারেন

Advertisement
আরও পড়ুন