Pradhan Mantri Awas Yojana

মাটির ঘর ভেঙে ফেলেন আবাস যোজনার পাকা বাড়ির আশায়, ১০ মাস ধরে গাছতলাতেই সংসার

ঘটনার সূত্রপাত ১০ মাস আগে। গ্রামের কর্তারা গৌড়াকে জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি পেয়েছেন। কিন্তু বাড়ি পেতে গেলে ভেঙে ফেলতে হবে মাটির বাড়িটি! তার পর থেকেই সমস্যা শুরু।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫ ১৫:৫০
80-year-old woman lives under tree due to a flaw in the Pradhan Mantri Awas Yojana in Madhya Pradesh

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

গ্রামের প্রায় একধারে মস্ত বাবুলগাছ। সেই গাছের তলায় গুটিসুটি মেরে বসে আছেন এক বৃদ্ধা। তার পাশে বসে মাটির উনুনে রান্না চাপিয়েছেন এক বিধবা মহিলা। দুই মহিলাকে ঘিরে খেলা করছে দু’টি শিশু! এই চার জনের সংসার মাসের পর মাস ধরে চলছে ওই গাছের নীচেই! মাথার উপর ছাদ নেই, আছে শুধু গাছের ছায়া।

Advertisement

বৃদ্ধার নাম গৌড়া বাঈ। মধ্যপ্রদেশের ধার জেলার লোহারি গ্রামে তাঁর সংসার। সেই ছোটবেলায় বিয়ে করে ওই গ্রামে এসেছিলেন। তার পর কেটে গিয়েছে বহু বছর। স্বামী-পুত্রের মৃত্যু দেখেছেন। এখন তাঁর সংসারে তিনি, তাঁর বিধবা পুত্রবধূ এবং নাতি-নাতনি। মাস দশেক আগেও মাটির বাড়িতে দিন কাটত তাঁদের। কিন্তু এখন তাঁদের সংসার গাছের নীচে। বৃদ্ধার দাবি, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কিছু ‘ত্রুটি’র কারণেই তাঁদের এই দশা!

ঘটনার সূত্রপাত ১০ মাস আগে। গ্রামের কর্তারা গৌড়াকে জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি পেয়েছেন। কিন্তু বাড়ি পেতে গেলে ভেঙে ফেলতে হবে মাটির বাড়িটি! কারণ, যখন কর্তারা পরিদর্শনে আসবেন, তখন যেন দেখা যায় তাঁর কোনও বাড়ি নেই। সেই সমস্যার শুরু। পাকা বাড়ির আশায় গৌড়া ভেঙে ফেলেন মাটির বাড়ি। আশ্রয় নেন কাছের বড় বাবুল গাছের নীচে। তার পর থেকে বার বার গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লক অফিসে ছোটাছুটি করছেন, কিন্তু এখনও বাড়ি পাননি!

‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মাটির বাড়ি ভেঙে ফেলেছিলেন বছর আশির বৃদ্ধা। আশা করেছিলেন, শীঘ্রই পাকা বাড়ি পাবেন। তবে কোথায় পাকা বাড়ি? গৌড়ার কথায়, ‘‘এক দিন আমাদের গ্রামের পঞ্চায়েতপ্রধান এবং পঞ্চায়েতসচিব আমাকে বলেন যে আমি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে বাড়ির জন্য অনুমোদন পেয়েছি। তাঁদের কথামতো আমার মাটির বাড়ি ভেঙে ফেলি। কিন্তু তার পরে যখন আমি বাড়ি বানানোর টাকার জন্য যোগাযোগ করি, তখন আমাকে বলা হয় গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কিছুটা সময় লাগবে।’’ সেই ‘সময়’ যে কবে শেষ হবে, তার আশায় দিন গুনছেন গৌড়া এবং তাঁর পরিবার!

এই বিষয়ে গ্রামের পঞ্চায়েতপ্রধান অমর সিংহ তাঁর ‘অসহায়তার’ কথা জানান। তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুবিধাভোগীদের তালিকায় গৌড়ার নাম দেখতে পেয়েই বিষয়টা আমরা তাঁকে জানাই। কিন্তু পরে অনলাইনে আর তাঁর আবেদন এগোয়নি। এখন আর পঞ্চায়েত পর্যায়ে কিছু করা যাবে না। তাঁকে কালেক্টর বা মহকুমা অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।’’

ব্লক অফিসের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘যখন তাঁর (গৌড়া) আবেদন করা হয় অনলাইনে, তখন সিস্টেমে কিছু ত্রুটি দেখা দেয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সমাধান বার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ ধারের মহকুমাশাসক প্রিয়ঙ্ক মিশ্র জানান, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। বলেন, ‘‘এখন বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করব।’’

Advertisement
আরও পড়ুন