(বাঁ দিকে) অভিযুক্ত পাইলট বীরেন্দ্র সেজওয়াল এবং আক্রান্ত যাত্রী অঙ্কিত দেওয়ান (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
দিল্লি বিমানবন্দরে এক যাত্রীকে মেরে রক্তাক্ত করার ঘটনা নিয়ে এ বার মুখ খুললেন অভিযুক্ত পাইলট বীরেন্দ্র সেজওয়াল। তাঁর পক্ষে এক আইনি সংস্থা বিবৃতি জারি করেছে। সেই বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ব্যক্তিগত একটি ঘটনাকে ‘পাইলট বনাম যাত্রী’ হিসাবে বর্ণনা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে এ-ও দাবি করা হচ্ছে, সমাজমাধ্যমে ‘একতরফা ভাবে’ বীরেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে। বিষয়টি ভুল ভাবে উপস্থাপনা করা হয়েছে।
ওই আইনি সংস্থা বিবৃতিতে জানায়, বীরেন্দ্র পাইলট হিসাবে নন, এক জন যাত্রী হিসাবে ভ্রমণ করছিলেন। ঘটনাটি কোনও ভাবেই তাঁর পেশাগত দায়িত্বের সঙ্গে যুক্ত নয়। দুই যাত্রীর ব্যক্তিগত বিষয় ছিল। বিবৃতি অনুযায়ী, অঙ্কিত দেওয়ান নামে ওই যাত্রী মিথ্যা গল্প তৈরি করার জন্য বেছে বেছে তথ্য উপস্থাপনা করেছেন। একটি মীমাংসিত সমস্যাকে নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টির চেষ্টা করেন তিনি।
অঙ্কিত দাবি করেন, পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে যাচ্ছিলেন। দিল্লি বিমানবন্দরে বোর্ডিংয়ের জন্য ‘সিকিউরিটি চেক’-এর লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁরা। অভিযোগ, সেই সময়েই লাইন ভেঙে আগে ভিতরের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন ক্যাপ্টেন বীরেন্দ্র। লাইন ভাঙার প্রতিবাদ করেন অঙ্কিত। তাতেই শুরু হয় বচসা। বচসা বৃদ্ধি পেতেই তা মারপিটের পর্যায়ে পৌঁছে যায় এবং ওই পাইলট অঙ্কিতকে মেরে রক্তাক্ত করে দেন বলে অভিযোগ।
তবে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, অঙ্কিত কোনও উস্কানি ছাড়াই বীরেন্দ্রকে অকথ্য গালিগালাজ করেন। তাঁকে থামতে বলায় হুমকিও দেওয়া হয়। সংঘর্ষে বীরেন্দ্রও আহত হয়েছেন। আধা সামরিক বাহিনীর (সিআইএসএফ) কর্মীরা তৎক্ষণাৎ ঘটনায় হস্তক্ষেপ করেন। তাঁরা অঙ্কিতকে শান্ত হতে এবং গালিগালাজ বন্ধ করতে বলেন। কিন্তু তাতেও দমে যাননি। নিরাপত্তাবাহিনীর সামনেও অভব্য ব্যবহার করেন অঙ্কিত।
অঙ্কিত দাবি করেন, তাঁকে চিঠি লিখতে ‘বাধ্য’ করা হয়। যদিও বীরেন্দ্রের দাবি, নিরাপত্তাবাহিনীর সামনে ‘উভয় পক্ষ’ স্বেচ্ছায় একটি বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন। সেই বিবৃতিতে তাঁরা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে আর এ বিষয়ে আইনি পথে হাঁটবেন না। নিরাপত্তাবাহিনীও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এক্স পোস্টে তারা জানায়, তাদের কর্মীরা তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ করেন। উভয় পক্ষকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে অভিযোগ দায়েরের সুযোগ দিয়েছিলেন। তবে তাঁরা স্বেচ্ছায় তা প্রত্যাখ্যান করেন। সিআইএসএফ কর্মীরা কোনও বলপ্রয়োগ করেনি।
বীরেন্দ্র এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের পাইলট। তবে দিল্লি বিমানবন্দরের ঘটনার সঙ্গে বিমান সংস্থাকে যুক্ত করার চেষ্টা নিন্দনীয় বলে দাবি বীরেন্দ্রর। তাঁর দাবি, বিমানবন্দরেই বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়ে যায়। তবে তার পরেও সমাজমাধ্যমে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এ ধরনের পোস্ট করা হয়েছে। যদিও ঘটনার পর পরই অভিযুক্ত পাইলটের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে উড়ান সংস্থা। তাঁকে নিলম্বিত করা হয়েছে বলেও খবর। কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশও দিয়েছে।