Aparajita Sarangi

৩০ দিন হেফাজতে থাকলেই মন্ত্রিত্ব খারিজের বিল! কংগ্রেস, তৃণমূলের বয়কট করা জেপিসির শীর্ষে বিজেপির অপরাজিতা

প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্র বা রাজ্যের মন্ত্রীরা যদি পাঁচ বছরের বেশি কারাদণ্ড হতে পারে এমন-অপরাধে গ্রেফতার হয়ে টানা ৩০ দিন আটক থাকেন, তা হলে তাঁদের পদ খারিজের ব্যবস্থা রয়েছে বিতর্কিত বিলে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:৩৩
BJP MP Aparajita Sarangi to head joint parliamentary committee on bill seeking to remove PM, CMs arrested on serious charges

ভূবনেশ্বরের বিজেপি সাংসদ অপরাজিতা সারঙ্গি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রীদের অপসারণের তিনটি নতুন বিল পর্যালোচনার জন্য গড়া যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)-র চেয়ারপার্সন পদে নিয়োগ করা হল ও়ড়িশার ভূবনেশ্বরের বিজেপি সাংসদ অপরাজিতা সারঙ্গিকে। বুধবার লোকসভার সচিবালয়ের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এ কথা জানানো হয়েছে। এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে’র অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টির মতো বিরোধী দলগুলি ওই জেপিসি বয়কটের কথা ঘোষণা করেছে।

Advertisement

চলতি বছরের ২০ অগস্ট সংসদের বাদল অধিবেশনের শেষ পর্বে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার একটি সংবিধান সংশোধনী বিল-সহ তিনটি বিল পেশ করেছিল। প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্র বা রাজ্যের মন্ত্রীরা যদি পাঁচ বছরের বেশি কারাদণ্ড হতে পারে এমন-অপরাধে গ্রেফতার হয়ে টানা ৩০ দিন আটক থাকেন, তা হলে তাঁদের পদ চলে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে ওই বিলগুলিতে। বিরোধী শিবির মনে করছে, বিরোধী শাসিত রাজ্য সরকারকে ইচ্ছে মতো অস্থির করে তুলতে এই বিল কাজে লাগানো হবে। ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস’ সম্প্রতি জানিয়েছে, ৩০ জন মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে ১২ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের মামলা রয়েছে। কংগ্রেসের তেলঙ্গানা সরকারের মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি, এনডিএ-র শরিক অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু, তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকারের মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার সংখ্যা সব থেকে বেশি।

সংসদে এই বিল পেশের পরে তা আলোচনার জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল। রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে তৃণমূলই প্রথমে ওই কমিটিতে যোগ দেবে না বলে ঘোষণা করেছিল। সংবিধানের ১৩০তম সংশোধনী বিল লোকসভায় পেশের সময়েই বিরোধিতা করা হয়েছিল দলের তরফে। তৃণমূলের মতে, যৌথ সংসদীয় কমিটি একটি প্রহসন। লোকসভায় সাংসদ সংখ্যার নিরিখে বিজেপি ও কংগ্রেসের পরেই সমাজবাদী পার্টি ও তৃণমূল তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে এ ভাবে বিরোধী শিবিরের তিন বৃহত্তম দল জেপিসি বয়কট করেনি। বস্তুত বিরোধীরা আগেই অভিযোগ তুলেছিল, ওয়াকফ বিল সংক্রান্ত জেপিসির মতোই এ ক্ষেত্রেও রাজ্যসভা ও লোকসভা মিলিয়ে যে যৌথ কমিটি হবে, তাতে বিজেপির কাউকেই চেয়ারম্যান করা হবে। তাতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ-র সাংসদদেরই সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে। ফলে বিরোধীরা যতই প্রতিবাদ করুক, যৌথ কমিটি বিলের পক্ষেই সুপারিশ করবে। বিরোধীদের আপত্তি ‘ডিসেন্ট নোট’-এই আটকে থাকবে।

কার্যক্ষেত্রেও ৩১ সাংসদের (লোকসভার ২১ জন এবং রাজ্যসভার ১০) জেপিসিতে প্রস্তাব পাশ করানোর গরিষ্ঠতা রয়েছে সরকারপক্ষের। বিরোধীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রীদের জেলে বন্দি রেখে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বিলে। প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণের কথা বলা হলেও সবাই জানে, প্রধানমন্ত্রীকে কোনও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গ্রেফতার করবে না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রীদের গ্রেফতার করে বিরোধী সরকারকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা হবে। শরিক দলের নেতাদেরও লাগামে রাখা যাবে।বিজেপি এত দিন ধরে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের দলে স্থান দিয়েছে। সিবিআই-ইডিকে রাজনৈতিক ভাবে কাজে লাগিয়েছে। এখন এই বিল এনে নৈতিক অবস্থান নিতে চাইছে বলে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের অভিযোগ। বিরোধী দলগুলির মধ্যে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির মজলিস-ই ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (মিম) এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেস যোগ দিয়েছে জেপিসিতে।

Advertisement
আরও পড়ুন