India-China Relation

ভারতের আর্জি মেনে তিনটি জিনিস ফের রফতানি করা শুরু করছে চিন, শুল্কযুদ্ধের মধ্যে কি দূরত্ব ঘোচানোর চেষ্টা বেজিঙের

দু’দিনের সফরে ভারতে এসেছেন চিনের বিদেশমন্ত্রী। সোমবার জয়শঙ্করের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। মঙ্গলবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠক করছেন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৫ ১২:৩৫
(বাঁ দিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

(বাঁ দিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ছবি: পিটিআই।

ভারতের অনুরোধ রাখল চিন। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে তিনটি জিনিসের রফতানি ফের শুরু করার আশ্বাস দিলেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। সোমবার দু’দিনের সফরে ভারতে এসেছেন তিনি। ওই দিনই জয়শঙ্করের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সংবাদ সংস্থা এএনআই এবং একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে ওই তিন জিনিস, অর্থাৎ কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত সার, দুষ্প্রাপ্য খনিজ এবং সুড়ঙ্গ খনন করার যন্ত্র টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) ফের ভারতে রফতানি করার কথা জানিয়েছেন চিনের বিদেশমন্ত্রী।

Advertisement

এই পণ্যগুলি ভারতে রফতানি করার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল চিন। কিন্তু মনে করা হচ্ছে, এ বার সেই নিষেধাজ্ঞাই প্রত্যাহার করে নিতে চলেছে তারা। এই বিষয়ে ওয়াকিবহাল একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে ‘দ্য ইকনমিক টাইম্‌স’ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই এই তিন পণ্য রফতানি করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে শি জিনপিঙের প্রশাসন।

ভারতের কৃষিক্ষেত্রে ইউরিয়া কিংবা ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি)-এর মতো সার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু চিন রফতানি বন্ধ করায় এগুলির জোগানে টান পড়ছিল। বাড়ছিল সারের দাম। অন্য দিকে, টানেল বোরিং মেশিনের পর্যাপ্ত জোগান না-থাকায় থমকে যাচ্ছিল নির্মাণকাজ। ইলেকট্রনিক গাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল দুষ্প্রাপ্য খনিজ পদার্থ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই খনিজের জন্য চিনের উপর নির্ভরশীল। চিন নিরাপত্তাগত কারণ দেখিয়ে ভারতে এই দুষ্প্রাপ্য খনিজ রফতানির বিষয়েও বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছিল। ফলে অসুবিধায় পড়েছিলেন গাড়িনির্মাতারা। কেন্দ্রের একটি সূত্রের খর, গত মাসে চিন সফরে গিয়ে বহুবিধ এই অসুবিধার কথা সে দেশের বিদেশমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন জয়শঙ্কর।

ওই সূত্রের দাবি, দুই বিদেশমন্ত্রীর বৈঠকে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং শুল্কের প্রসঙ্গ ওঠে। রাশিয়া থেকে তেল আমদানির জন্য ইতিমধ্যেই ভারতীয় পণ্যের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা। চিনও রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি আমদানি করে থাকে। সে ক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রেখে দিলে চিনের উপরও ট্রাম্প শুল্ক চাপাতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে। সবটাই অবশ্য নির্ভর করছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্প প্রস্তাবিত ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের গতিপ্রকৃতির উপর। তবে এই বিষয়ে আগে থেকেই সজাগ থাকতে চাইছে চিন। সে কারণেই তারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপড়েন মুছে ফেলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা করছে বলে মনে করা হচ্ছে।

দু’দিনের সফরে মঙ্গলবার ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন চিনের বিদেশমন্ত্রী। ওই বৈঠকে মূলত ভারত-চিন সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। তার আগে সোমবার সন্ধ্যার বৈঠকে চিনা বিদেশমন্ত্রীকে জয়শঙ্কর বলেন, “এটি (সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমাদের সম্পর্কের যে কোনও ইতিবাচক অগ্রগতির ভিত্তিই হল সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা। তাই সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর প্রক্রিয়াকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।” মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করার কথা চিনের বিদেশমন্ত্রীর।

Advertisement
আরও পড়ুন