—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
খসড়া ভোটার তালিকা বেরিয়ে গিয়েছে। তার পরেও নথি-আতঙ্কে আত্মহত্যার অভিযোগ অব্যাহত। শনিবার পূর্ব বর্ধমানে এক প্রৌঢ়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে এসআইআরকে দায়ী করল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। তাদের দাবি, ভুল নথি সংশোধন করতে না পেরে নিজেকে শেষ করে দিয়েছেন ৫৩ বছরের ভাস্কর মুখোপাধ্যায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ভাস্করের আদি বাড়ি হুগলির চন্দননগরে। বর্তমানে তিনি পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের কল্যাণপুরের বাসিন্দা। পরিবারের লোকজন বলছেন, ভোটার কার্ডে ভাস্করের পিতার নামের জায়গায় শ্বশুরমশাইয়ের নাম উঠেছে। বার কয়েক নাম ঠিক করার চেষ্টা করেও পারেননি। খসড়া তালিকায় তাঁর নাম উঠেছে। কিন্তু শুনানিতে ডাকলে কী বলবেন, সেই নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। ভাস্করের এক আত্মীয়ের কথায়, ‘‘এই বয়সে এসে দেশছাড়া হওয়ার আতঙ্ক গ্রাস করেছিল ওঁকে। ওই আতঙ্কেই গলায় দড়ি দেন।’’
শনিবার সকালে বাড়িতেই ভাস্করের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান পুত্র উল্লাস মুখোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ভোটার তালিকায় বাবার নামের জায়গায় ভুল করে শ্বশুরের নাম নথিভুক্ত হওয়ায় দীর্ঘ দিন ধরেই মানসিক চাপে ভুগছিল বাবা। একাধিক বার সংশোধনের আবেদন করা হলেও তা কার্যকর না হওয়ায় হতাশা বেড়েছিল।’’ পরিবার সূত্রে আরও খবর, ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পর নাগরিকত্ব সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথি জোগাড় করতে না পারায় উদ্বেগে ভুগছিলেন ভাস্কর।
জামাইয়ের মৃত্যুতে শ্বশুর সুবিমল সরকারও দুষেছেন স্থানীয় প্রশাসনকে। তিনি বলেন, ‘‘সংশোধনের আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু সমাধান পাওয়া যায়নি।’’
তৃণমূলের দাবি, রাজ্যে আরও একটি এসআইআর ‘ঘটিত’ মৃত্যুর দায় নির্বাচন কমিশন এবং বিজেপির। জেলার তৃণমূল নেতা দেবু টুডু বলেন, ‘‘বিজেপি বাংলার মানুষকে অপমান করতে চাইছে। বাংলার মানুষের মৃত্যু হলেও ওদের কিছু যায় আসে না। আমাদের জেলায় বিএলও মারা গিয়েছেন। তার পরেও বিজেপির কমিশন এসআইআর নিয়ে চাপ দিচ্ছে।’’ অন্য দিকে, বিজেপির দাবি, পারিবারিক অশান্তিতে মারা যেতে পারেন প্রৌঢ়। কিন্তু আগেভাগে কী ভাবে মৃত্যুর কারণ বলে দিচ্ছে শাসকদল?
পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। পাশাপাশি অস্বাভাবিক
মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।