সুপ্রিম কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ফের সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়ল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। অর্থপাচার প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-এর অধীনে ইডি যে ভাবে কোনও আইনি নজরদারি ছাড়াই ১৮০ দিন পর্যন্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাখতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কর্নাটকের এক কংগ্রেস বিধায়ক শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে কেন্দ্রের জবাব তলব করে নোটিস পাঠানোর পাশাপাশি বিচারপতি পি এস নরসিমহা এবং এ এস চন্দুরকরের বেঞ্চ ওই আইনের বৈধতা নিয়ে চলা অন্য মামলার সঙ্গে এ’টি যুক্ত করেছে।
কর্নাটকের চিত্রদুর্গের ওই কংগ্রেস বিধায়কের অভিযোগ, ইডি কোনও কারণ না দেখিয়েই তাঁর সব সম্পদ, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, স্থায়ী আমানত (এফডি), গয়না এমনকি গাড়িও বাজেয়াপ্ত করেছে। তিনি আদালতে যাওয়ার সুযোগও পাননি। বিধায়কের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে প্রবীণ আইনজীবী মুকুল রোহতগি এবং রঞ্জিত কুমার বলেন, পিএমএলএ আইনের ধারা ২০ এবং ২১ ইডি-কে অতিরিক্ত ক্ষমতা দিয়েছে। এই ধারাগুলির ফলে ইডি কোনও লিখিত কারণ না দিয়েই ৬ মাস পর্যন্ত সম্পত্তি ধরে রাখতে পারে।
বিচারপতি নরসিমহা মন্তব্য করেন, আইনের মধ্যে ত্রুটি থাকতে পারে। সম্পত্তির অধিকার ও সাংবিধানিক সুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কী ভাবে বিচারবিভাগ বহির্ভূত কোনও ব্যক্তি বিচার করতে পারেন, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।
রোহতগি আদালতকে জানান, সারা দেশে বর্তমানে মাত্র একজন ব্যক্তি পিএমএলএ-র বিচারকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করছেন এবং তিনি কোনও বিচারক নন। তিনি ইডি-র প্রায় ৯৯ শতাংশ সম্পত্তি বাজেয়াপ্তর সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছেন। আইনজীবীদের বক্তব্য, এর ফলে সংবিধানের ১৪ ও ২১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সমতা ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। কারণ, ১৮০ দিন না পেরনো পর্যন্ত ইডি-র সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করার কোনো সুযোগই নেই।
ওই কংগ্রেসের বিধায়কের দায়ের করা আবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১৮০ দিন পরে ইডি বিচারকারী কর্তৃপক্ষের কাছে সম্পত্তি ধরে রাখার অনুমতি চাইতে যায়। তার আগে তাদের এই পদক্ষেপ বৈধ কি না, তা যাচাই করার কোনও ব্যবস্থা নেই। তিনি সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেছেন, পিএমএলএ আইনের এই ধারাগুলি নতুন করে ব্যাখ্যা করা হোক এবং ইডি-কে আগেভাগে কারণ জানানো ও আইনি পর্যালোচনার ব্যবস্থা করতে বলা হোক।
পাশাপাশি পিএমএলএ-র প্রতিটি বেঞ্চে অন্তত একজন বিচারক থাকা বাধ্যতামূলক করার আবেদনও জানিয়েছেন ওই বিধায়ক। এই মামলায় সিকিম হাইকোর্টের ২০২৩ সালের এক রায়ের কথা তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে পিএমএলএ-র বেঞ্চে বিচারক রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই রায় এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। বর্তমান মামলাটি তার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।