বন্য়ায় অসমের বিস্তীর্ণ এলাকা জলের নীচে, বিপর্যস্ত জনজীবন। ছবি: পিটিআই।
অসমে বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। বৃহস্পতিবারও রাজ্যের ২১টি জেলা জলের নীচে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সাত লক্ষের বেশি মানুষ। বর্ষার প্রথম পর্যায়েই অসমের এই বন্যা পরিস্থিতি উদ্বেগ বাড়িয়েছে। বৃষ্টি বাড়লে পরিস্থিতি কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় প্রশাসন। এখনও পর্যন্ত অসমের বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১৯। বৃহস্পতিবার নতুন করে কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। বুধবার দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল। এখনও এক জন নিখোঁজ।
ব্রহ্মপুত্র, বরাক-সহ অসমের মোট ন’টি নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। ব্রহ্মপুত্রের জলস্তর তিনটি জায়গায়, বরাকের জলস্তর কছাড় জেলায় বিপদসীমার উপরে রয়েছে। বাকি নদীগুলিতেও জল বাড়ছে। একাধিক জায়গায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বন্যায় অসমে ১৫০০টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করিমগঞ্জ তথা শ্রীভূমি জেলা। সেখানে গ্রামের পর গ্রাম বন্যার জলে ডুবে গিয়েছে। দু’লক্ষের বেশি মানুষ সেই জল নিয়েই দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকে ঘরছাড়া। অসমের রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর চাষের জমি বন্যার জলে ডুবে গিয়েছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কৃষিকাজের। পাঁচ লক্ষের বেশি পশুপাখি এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বলছে পরিসংখ্যান।
রাজ্য সরকারের তরফে অসমের নানা প্রান্তে ৪১৫টি ত্রাণশিবির গঠন করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন ৪২ হাজার মানুষ। বন্যায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে রাস্তা, সেতু, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দক্ষিণ অসমে ব্যাহত হয়েছে ট্রেন চলাচলও। উত্তর-পূর্ব ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ের (এনএফআর) মুখপাত্র জানিয়েছেন, জল বাড়ছে। রেললাইনও ডুবে যাচ্ছে। ফলে ট্রেন চালানো সম্ভব হচ্ছে না অনেক জায়গাতেই। বিশেষত শিলচরে এই সমস্যার কারণে পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। স্বল্প যাত্রাপথের অনেক ট্রেন বাতিল করেছেন কর্তৃপক্ষ।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা উত্তর গুয়াহাটিতে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। কথা বলেছেন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে। আগামী দিনে বন্যা ঠেকাতে অসমের নিকাশি ব্যবস্থা আরও উন্নত করার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।