Kannad Actress Ranya Rao Gold Smuggling Case

হেফাজতে অকথ্য ‘গালিগালাজ’ করা হত, আদালতে ভেঙে পড়লেন সোনা পাচারে ধৃত অভিনেত্রী, শুরু রাজনৈতিক তরজা

সোমবার রান্যাকে আদালতে হাজির করানো হয়। সেখানেই কান্নায় ভেঙে পড়েন একদা ‘প্রভাবশালী’ অভিনেত্রী। তাঁর দাবি, গায়ে হাত না তোলা হলেও হেফাজতে অকথ্য গালিগালাজ করা হত তাঁকে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৫ ১৮:১২
(বাঁ দিকে) ধৃত অভিনেত্রী রান্যা রাও। উদ্ধার হওয়া সোনা (ডান দিকে)

(বাঁ দিকে) ধৃত অভিনেত্রী রান্যা রাও। উদ্ধার হওয়া সোনা (ডান দিকে)

সোনা পাচারের অভিযোগে দিন কয়েক আগেই বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার হয়েছেন কন্নড় অভিনেত্রী রান্যা রাও। সোমবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়। সেখানেই কান্নায় ভেঙে পড়েন একদা ‘প্রভাবশালী’ অভিনেত্রী। তাঁর দাবি, গায়ে হাত না তোলা হলেও হেফাজতে অকথ্য গালিগালাজ করা হত তাঁকে। যদিও এর পরেও রান্যাকে অব্যাহতি দেয়নি আদালত। আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত হেফাজতেই থাকতে হবে তাঁকে।

Advertisement

গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে কর্নাটকে। অনেকেরই দাবি, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্তরে ‘প্রভাবশালী-যোগ’ না থাকলে এত সোনা পাচার করা সম্ভব হত না। এর পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তা হলে কতটা প্রভাবশালী ছিলেন সোনাপাচারে ধৃত অভিনেত্রী? সিদ্দারামাইয়ার কংগ্রেস সরকারকে নিশানা করেছে বিরোধী দল বিজেপি। পাল্টা তোপ দেগে সরব হয়েছে কংগ্রেসও।

বিজেপির অভিযোগ, সিদ্দারামাইয়ার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারের দুই মন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল অভিনেত্রীর। অভিযোগ, সোনা পাচারকাণ্ডে ধরা পড়ার পরেও রাম্যা ওই দুই নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, যাতে সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। রাজ্য বিজেপির প্রধান বিওয়াই বিজয়েন্দ্রের কথায়, ‘‘স্পষ্টতই নিয়ম ভেঙেছেন রান্যা। আর এর নেপথ্যে সরকারেরও মদত ছিল। সরকারপক্ষের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের প্রত্যক্ষ সমর্থন ছাড়া এই বিপুল পরিমাণ সোনা পাচার করা কার্যত অসম্ভব।’’ যদিও কংগ্রেসের পাল্টা অভিযোগ, বাসবরাজ বোম্মাইয়ের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের অধীনে ২০২৩ সালে রান্যাকে একটি ইস্পাত কারখানা তৈরির জন্য জমি বরাদ্দ করেছিল কর্নাটক শিল্পাঞ্চল উন্নয়ন বোর্ড। ফলে বিজেপির সঙ্গেও ‘যোগ’ ছিল রান্যার, এমনটাই দাবি কংগ্রেসের।

বিজেপি নেতা তথা বিধায়ক ভারত শেট্টি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘ধরা পড়ার পরেই রান্যা কংগ্রেসের কয়েক জন মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন, যাতে প্রভাব খাটিয়ে আসন্ন বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এখন জনসাধারণের কাছেও এটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে দু’জন মন্ত্রী তাঁকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছেন। মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করেছে সিবিআই। এ বার সব সত্যি প্রকাশ্যে আসবে।’’

গত বুধবার সকালে দুবাই থেকে সোনা পাচারের অভিযোগে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে গ্রেফতার হন কন্নড় অভিনেত্রী রান্যা। আগে প্রতি বার ছাড়া পেয়ে গেলেও এ যাত্রায় রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের (ডিআরআই) হাতে ধরা পড়ে যান তিনি। শুরু হয় তল্লাশি। তাতেই রান্যার জামা এবং বেল্টের মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসে অন্তত ১৪ কেজি সোনা! বেশ কয়েক দিন ধরেই রান্যার উপর নজর ছিল গোয়েন্দাদের। গত দু’সপ্তাহের মধ্যে অন্তত চার বার দুবাই গিয়েছিলেন অভিনেত্রী! অথচ গোয়েন্দারা খবর নিয়ে জানতে পারেন, দুবাইয়ে রান্যার পরিবারের কোনও সদস্য থাকেন না। তা হলে কেন এত ঘন ঘন দুবাই যাচ্ছিলেন তিনি? সেই সন্দেহের বশেই বিমানবন্দরে নজরদারি বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ওত পেতে ছিলেন ডিআরআইয়ের কর্তারাও। বিমানবন্দর থেকে বার হওয়ার সময়েই রান্যাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, রান্যার বাবা রামচন্দ্র রাও একজন আইপিএস অফিসার। বছর কয়েক আগে মাইসুরুতে একটি সোনা পাচারের মামলায় নাম জড়িয়েছিল তাঁরও।

Advertisement
আরও পড়ুন