Operation Sindoor

বিরোধীদের হইহট্টগোলের মধ্যেই সিঁদুর অভিযান নিয়ে আলোচনা শুরু সংসদে, সূচনা করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ

সোমবার, অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আলোচনার দিনে দফায় দফায় উত্তাল হল সংসদ। বিরোধীদের হইহট্টগোলে লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি রাখা হয়েছিল দুপুর ২টো পর্যন্ত। তার পর শুরু হয় আলোচনা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৫ ১৩:৫৯
Lok Sabha proceedings adjourned till 2 PM ahead of the scheduled debate on Operation Sindoor

বিরোধীদের হইহট্টগোলে উত্তাল সংসদ। ছবি: সংগৃহীত।

অবশেষে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আলোচনা শুরু হল লোকসভায়। বিরোধীর হইহট্টগোলের মধ্যেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথের ভাষণ দিয়ে তা শুরু হয়েছে। বলতে উঠে রাজনাথ বললেন, ‘’২২ মিনিটেই কাজ অভিযান শেষ করেছিল সেনা।’’

Advertisement

ভারত ‘চাপে’ পড়ে অপারেশন সিঁদুর অভিযান বন্ধ করেছে বলে যে দাবি করা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন এবং ভুল বলে সংসদে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘যে মুহূর্তে ভারতের লক্ষ্যপূরণ হয়ে গিয়েছে, সেই মুহূর্তে বন্ধ করা হয়েছে সিঁদুর অভিযান।’’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ-ও বলেন, ‘‘ভারত পাকিস্তানের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হামলা চালানোর পরেই ওরা হার স্বীকার করেছে। ভবিষ্যতে পাকিস্তান যদি আবার এ রকম কিছু করে, আবার অপারেশন শুরু হবে।’’

পরে বলতে উঠে কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ পাল্টা প্রশ্ন তোলেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্র যা ইতিমধ্যেই বলে ফেলেছে, তা-ই আবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বললেন। কিন্তু দেশবাসীকে উনি এটা বললেন না যে, কী ভাবে পহেলগাঁওয়ে পাঁচ পাকিস্তানি জঙ্গি ঢুকেছিল। ’’

প্রসঙ্গত, সংসদে সিঁদুর অভিযান নিয়ে আলোচনার ঠিক আগে কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরমের একটি মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিদাম্বরমের বক্তব্য, এখনও জঙ্গিদের পরিচয় জানতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার। এ দিকে তারা বারবার দাবি করেছে, জঙ্গিরা পাকিস্তান থেকে এসেই হামলা চালিয়েছিল! তার প্রমাণ কোথায়, সেই প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস নেতা। তিনি আরও জানান, ওই জঙ্গিরা হয়তো ভারতেরই নাগরিক। এর পরেই চিদম্বরমকে আক্রমণে নামেন বিজেপির বেশ কিছু নেতা। সোমবার চিদাম্বরম অবশ্য বলেছেন, তাঁর বক্তব্য কাটছাঁট করে দেখিয়ে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে বিজেপি। সংসদে রাজনাথও বলেছেন, ‘‘পাকিস্তান বছরের পর বছর ‌ধরে জঙ্গিদের মদত দিয়ে এসেছে। অপারেশন সিঁদুরের লক্ষ্য ছিল, সেই জঙ্গিদের খতম করা।’’ পরে গৌরব তাঁর ভাষণে বুঝিয়ে দিলেন, চিদাম্বরমের মন্তব্য নিয়ে যে বিতর্ক হচ্ছে, তা অনর্থক। দল হিসাবে কংগ্রেস মনে করে, জঙ্গিরা পাকিস্তান থেকেই এসেছিল।

সংসদে রাজনাথ জানান, ভারত যা পদক্ষেপ করেছে, তা সম্পূর্ণ আত্মরক্ষার্থে। প্ররোচনা দেওয়া ভারতের উদ্দেশ্য ছিল না। তার পরেও পাকিস্তান গত ১০ মে, রাত দেড়টা নাগাদ ভারতে ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, ভারত তা প্রতিহত করেছে। ভারত এস ৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করেছে পাকিস্তানের হামলা প্রতিহত করতে।

বিরোধীদেরও একহাত নেন রাজনাথ। তিনি বলেন, ‘‘বিরোধীদের কয়েক জন জিজ্ঞাসা করছিলেন, দেশের কতগুলো যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে? কিন্তু ওঁরা কখনও এই প্রশ্ন করে না যে, শত্রুপক্ষের কটা যুদ্ধবিমান আমাদের সেনা ধ্বংস করেছে।’’

সোমবার, অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আলোচনার দিনে, সকালে দফায় দফায় উত্তাল হয় সংসদ। বিরোধীদের হইহট্টগোলে লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি রাখা হয়েছিল দুপুর ২টো পর্যন্ত। সেইমতো দুপুর ২টোর পরেই আলোচনা শুরু হয়।

সাংসদে বাদল অধিবেশনের প্রথম সপ্তাহ গোটাটাই ভেস্তে গিয়েছিল বিরোধীদের বিক্ষোভ-প্রতিবাদের জেরে। সোমবারও একই ছবি দেখা গেল। জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার ঘটনার পর ভারতীয় সেনার অপারেশন সিঁদুর নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে সংসদে আলোচনার দাবি জানিয়ে আসছিল বিরোধীরা। স্থির হয়, সোমবার লোকসভায় ১৬ ঘণ্টার আলোচনা হবে। পর দিন, মঙ্গলবার আলোচনা হবে রাজ্যসভায়।

কিন্তু সোমবার লোকসভার অধিবেশন শুরু হওয়ার পর থেকেই হইহট্টগোল শুরু করেন বিরোধী সাংসদেরা। কথা ছিল দুপুর ১২টায় রাজনাথের ভাষণ দিয়ে আলোচনার সূচনা হতে পারে। কিন্তু বিরোধীদের হইহট্টগোল দেখে স্পিকার ওম বিড়লা প্রশ্ন করেন, বিরোধীরা সত্যিই আলোচনা চান কি না। তার পরেও হট্টগোল না থামায় অধিবেশন মুলতুবি রাখা হয় দুপুর ১টা পর্যন্ত। তার পরেও বিক্ষোভ না থামায় ২টো পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি রেখেছিলেন স্পিকার।

Advertisement
আরও পড়ুন