Manipur CM N Biren Singh

পদত্যাগ করলেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন! অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর ইম্ফলে ফিরেই ঘোষণা

পদত্যাগ করলেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ! কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর ইম্ফলে ফিরেই ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন বীরেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:২৮
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ।

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। — ফাইল চিত্র।

পদত্যাগ করলেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ! কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর ইম্ফলে ফিরেই ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন বীরেন। রবিবার ইম্ফলে রাজ্যপাল অজয়কুমার ভল্লার সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগপত্রও জমা দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

সূত্রের খবর, গত বেশ কিছু দিন ধরেই দলের অভ্যন্তরে ও বাইরে দ্বিমুখী চাপের সন্মুখীন হতে হচ্ছিল বীরেনকে। এই আবহে রবিবার সকালে নয়াদিল্লিতে শাহ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করেন বীরেন। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি ও নাগা পিপল্‌স ফ্রন্ট (এনপিএফ)-এর ১৪ জন বিধায়ক। মাত্র ১৫ মিনিটের বৈঠকের পর ইম্ফলে ফিরেই বীরেন ইস্তফা দেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পদত্যাগপত্রে বীরেন লিখেছেন, ‘‘এত দিন মণিপুরের মানুষের সেবা করতে পেরেছি, এটা আমার কাছে সম্মানের। মণিপুরবাসীর স্বার্থ রক্ষার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ করা এবং নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়িত করার জন্য আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ।’’

বিভিন্ন সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মণিপুর বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছিল কংগ্রেস। তা ছাড়া, বীরেনের নেতৃত্ব নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন সে রাজ্যের বিজেপি বিধায়কেরাও। ভোটাভুটি হলে বীরেন সরকারের পতনের সম্ভাবনা রয়েছে, এমনই আশঙ্কা ছিল। এই পরিস্থিতিতে বীরেনের পদত্যাগ ছাড়া কোনও গতি ছিল না। সূত্রের খবর, রবিবারের বৈঠকে তাঁকে সে কথা বলেও দেন শাহ।

বীরেনের পদত্যাগ নিয়ে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী বলেন, “গত প্রায় দু'বছর ধরে মণিপুরে হিংসায় উস্কানি দিয়ে এসেছেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহ। গোষ্ঠী হিংসা এবং একের পর এক মৃত্যুতে সেখানে রাষ্ট্রের ধারণাকে ধ্বংস করেছেন বীরেন, তা সত্ত্বেও তাঁকে সরাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এখন বীরেনের ইস্তফায় স্পষ্ট হয়ে গেল, জনগণের চাপ, সুপ্রিম কোর্টের তদন্ত এবং কংগ্রেসের অনাস্থা প্রস্তাবের ফলেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে বিজেপি।”

গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে অশান্ত মণিপুর। ২০২৩ সালের মে মাসে প্রথম মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সে রাজ্যের পরিস্থিতি। মাঝে কিছু দিন বিরতির পর গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একাধিক বাড়িঘর। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি রাজ্যের বেশ কয়েক জন বিধায়কের বাড়িতেও হামলা চালায় উন্মত্ত জনতা। রাজ্যের পাঁচ জেলায় কার্ফু জারি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবাও। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সূত্র মতে, মণিপুরে এ পর্যন্ত কয়েকশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন আরও অনেকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মুখ্যমন্ত্রীর ভুমিকা নিয়ে অতীতে বার বারই প্রশ্ন উঠেছে। গত বছরের শেষ দিনে মণিপুরবাসীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছিলেন বীরেন। সঙ্গে আশ্বাস দিয়েছিলেন, ২০২৫ সালে রাজ্যে স্বাভাবিকতা ফিরবে; ফেরাবেন তিনিই। অথচ সেই আশ্বাসের মাসখানেকের মাথায় পদত্যাগ করলেন বীরেন!

Advertisement
আরও পড়ুন