Mumbai Hostage

দু’কোটি বকেয়া! সরকারকে চাপ দিতেই মুম্বইয়ের স্টুডিয়োয় ১৭ শিশুকে বন্দি? শেষবার্তায় কী বলেছিলেন সেই অপহরণকারী

পওয়াইয়ের বহুতল ওই স্টুডিয়োয় অভিনয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সেখানে অডিশনের জন্য এসেছিল অনেক শিশু। অডিশন চলাকালীন আচমকা ওই স্টুডিয়োয় ঢুকে পড়েন অভিযুক্ত।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ১১:০৪
Mumbai Kidnap Case: What were Rohan Arya\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s intentions

মুম্বইয়ের স্টুডিয়োয় ১৭টি শিশুকে অপহরণ করে রেখেছিলেন রোহিত আর্য। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

মুম্বইয়ের পওয়াইয়ের স্টুডিয়োয় কেন ১৭ জন শিশুকে পণবন্দি করে রেখেছিলেন রোহিত আর্য? টাকার দাবি, না কি নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ, তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। কিন্তু পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার আগে নিজেই অপহরণের কারণ জানিয়ে যান রোহিত। তাঁর দাবি, মহারাষ্ট্র সরকারের থেকে তিনি টাকা পান। টাকার অঙ্ক প্রায় দু’কোটি। সেই বকেয়া পরিশোধের জন্য সরকারকে বার্তা দিতে চেয়েছিলেন তিনি। সেই কারণেই শিশুদের অপহরণ করেন। অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল না তাঁর!

Advertisement

পওয়াইয়ের বহুতল ওই স্টুডিয়োয় অভিনয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সেখানে অডিশনের জন্য এসেছিল অনেক শিশু। অডিশন চলাকালীন আচমকা ওই স্টুডিয়োয় ঢুকে পড়েন রোহিত। হাতে ছিল বন্দুক। ভয়ে চিৎকার শুরু করে শিশুরা। তবে তিনি বেশির ভাগ শিশুকেই স্টুডিয়ো ছেড়ে চলে যেতে বলেন। শেষে ১৭টি শিশুকে আটকে রাখেন। আতঙ্ক ছড়ায় স্টুডিয়োর বাইরে। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা অভিযানের পর রোহিতকে নিরস্ত্র করে শিশুদের উদ্ধার করে পুলিশ।

শিশুদের বন্দি করে রাখার সময়ই ভিডিয়ো রেকর্ড করে তাঁর বার্তা সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেন রোহিত। দাবি করেন, শিশুদের ক্ষতি করার কোনও উদ্দেশ্য নেই তাঁর। তিনি কেবল মহারাষ্ট্রের শিক্ষা দফতরের কাছ থেকে বকেয়া দু’কোটি টাকা আদায়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে চান। তাঁর দাবিগুলি ‘সহজ এবং নৈতিক’, এমনও জানান রোহিত। ভিডিয়োয় তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি জঙ্গি নই। আমার কোনও আর্থিক দাবিও নেই। আমার দাবিগুলি মোটেই অনৈতিক নয়।’’

কোন পাওনার দাবি করেছেন রোহিত? শিবসেনা নেতা দীপক কেসারকার জানান, ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিনি যখন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন, তখন রোহিতকে পরিচ্ছন্নতা সচেতনতা কর্মসূচির কাজ দেন। সেই কাজের জন্য তাঁর পাওনা আটকে রাখার অভিযোগ করেছিলেন রোহিত। গত বছর ব্যক্তিগত উদ্যোগে রোহিতকে কিছু টাকা পাইয়ে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন দীপক। তবে তার পরেও বেশ কিছু টাকা বকেয়া থেকে যায় তাঁর।

এক পুলিশকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, গত বছর জুলাই, অগস্ট এবং অক্টোবরে দীপকের সরকারি বাংলো এবং আজ়াদ ময়দানের বাইরে বিক্ষোভ দেখান রোহিত। অবস্থানেও বসেছিলেন। দাবি, তিনি শিক্ষা দফতরের হয়ে একটি প্রকল্পে কাজ করেছিলেন।। স্বল্পদৈর্ঘ্যের একটি ছবি এবং তথ্যচিত্রও বানান, যা স্কুলে স্কুলে পরিচ্ছন্নতার বার্তা পৌঁছে দিতে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সেই কাজের জন্য তাঁকে কৃতিত্ব বা পারিশ্রমিক দেওয়া হয়নি। সমাজমাধ্যমেও বার বার নিজের বকেয়া নিয়ে সরব হয়েছিলেন রোহিত।

যদিও মহারাষ্ট্রের শিক্ষা দফতর রোহিতের দাবি মানতে রাজি নয়। উল্টে তারা বিবৃতি দিয়ে দাবি করে, রোহিত তাঁর কাজের জন্য বেশ কয়েকটি স্কুল থেকে ‘রেজিস্ট্রেশন ফি’ আদায় করেছিলেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি তাঁর কাজের জন্য যে বাজেটের কথা জানিয়েছিলেন, তা-ও স্পষ্ট ছিল না। যথাযথ নথির অভাব ছিল।

২০২৪ সালের অগস্টে মহারাষ্ট্রের স্কুল দফতর দাবি করেছিল, স্কুল এবং শিক্ষার্থীদের থেকে রোহিত যা টাকা সংগ্রহ করেছিলেন, তা নির্দিষ্ট সরকারি অ্যাকাউন্টে জমা দিতে বলা হয়। পাশাপাশি, প্রয়োজনীয় নথি-সহ বিস্তারিত বাজেট দফতরে জমা দেওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করে তারা। শিক্ষা দফতরের দাবি, রোহিত তা করেননি।

জানা গিয়েছে, ২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রোহিতের সংস্থা ‘অপ্সরা মিডিয়া এন্টারটেনমেন্ট নেটওয়ার্ক’-কে ‘লেটস চেঞ্জ’ নামে স্বচ্ছতা প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরের বছর সেই প্রকল্পের চুক্তি পুনর্নবীকরণ করা হয়। ২০২৪ সালে শেষ বার এই প্রকল্পের জন্য দু’কোটি বাজেটের কথাও জানানো হয়। তবে পরে দেবেন্দ্র ফডণবীসের সরকার এসে ওই প্রকল্প বন্ধ করে দেয়। তার পর থেকে রোহিত বার বার বকেয়া আদায়ের কথা বলে এসেছেন।

Advertisement
আরও পড়ুন