Nimisha Priya

নিমিশাকে নিয়ে এখনই ভয় নেই! জানানো হল সুপ্রিম কোর্টে, আট সপ্তাহের জন্য পিছোল শুনানি

নিমিশার মৃত্যুদণ্ড ঠেকাতে কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের আর্জিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে ‘সেভ নিমিশা প্রিয়া অ্যাকশন কাউন্সিল’ নামে একটি সংগঠন। মূলত এই সংগঠনই নিমিশাকে আইনি সহায়তা দিয়ে আসছে। গত ১৬ জুলাই ইয়েমেনে নিমিশার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তবে তা পিছিয়ে যায়।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৫ ১৬:১৮
নিমিশা প্রিয়া।

নিমিশা প্রিয়া। —ফাইল চিত্র।

ইয়েমেনে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত ভারতীয় তরুণী নিমিশা প্রিয়াকে নিয়ে এখনই ভয়ের কিছু নেই। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানানো হল সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। যে সংগঠন নিমিশাকে আইনি সহয়তা দিচ্ছে, তাদের আইনজীবী আদালতে জানান, আলোচনা এখনও চলছে। আপাতত ভয়ের কোনও বিষয় নেই। তাই আগামী চার সপ্তাহের জন্য মামলা স্থগিত রাখার আর্জি জানান আইনজীবী। তাঁর অনুমান, এর মধ্যে বিষয়টি মিটে যাবে। সে কথা শুনে আট সপ্তাহের জন্য মামলাটি পিছিয়ে দেয় আদালত।

Advertisement

নিমিশার মৃত্যুদণ্ড ঠেকাতে কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের আর্জিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে ‘সেভ নিমিশা প্রিয়া অ্যাকশন কাউন্সিল’ নামে একটি সংগঠন। মূলত এই সংগঠনই নিমিশাকে আইনি সহায়তা দিয়ে আসছে। গত ১৬ জুলাই ইয়েমেনে নিমিশার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তবে তা পিছিয়ে যায়। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত নিমিশার মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে পরবর্তী কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি ইয়েমেন প্রশাসন।

বস্তুত, গত ১০ জুলাই কেন্দ্রের তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয়েছিল, নিমিশার বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক। ভারত সরকার একটি পর্যায় পর্যন্ত যেতে পারত, তত দূর গিয়েওছিল। কিন্তু এর বেশি কিছু করার নেই। কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরমণী সেই সময় তিনি বলেছিলেন, “সরকারের আর কিছু করার নেই। ইয়েমেন নিয়ে স্পর্শকাতর ভাবে বিষয়টি দেখুন। এই দেশটিকে (ইয়েমেন) কূটনৈতিক ভাবে ভারত স্বীকৃতি দেয়নি।” সরকারি স্তরে আর কিছু করা সম্ভব নয় বলেও শীর্ষ আদালতকে জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ঘটনাচক্রে, এর কয়েক দিন পরেই নিমিশার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত রাখা হয়। পরে ১৮ জুলাই সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র জানায়, নিমিশাকে ফেরানোর চেষ্টা করছে সরকার। সরকারি ভাবে যা কিছু করা সম্ভব, তা করা হচ্ছে।

কেরলের পালক্কড় জেলার বাসিন্দা নিমিশা নার্সের কাজ নিয়ে ২০০৮ সালে ইয়েমেনে গিয়েছিলেন। স্বামী টমি থমাস এবং মেয়েকে নিয়ে ইয়েমেনে থাকতেন তিনি। ২০১৪ সালে তাঁর স্বামী এবং ১১ বছরের কন্যা ভারতে ফিরে এলেও নিমিশা ইয়েমেনেই থেকে গিয়েছিলেন। ইচ্ছা ছিল নিজের ক্লিনিক খুলবেন। ওই বছরই ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আব্দো মাহদির সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাঁর। মাহদি তাঁকে নতুন ক্লিনিক খুলতে সাহায্য করবেন বলে আশ্বাস দেন। কারণ, আইন অনুযায়ী, ইয়েমেনে নতুন ব্যবসা শুরু করতে গেলে দেশীয় অংশীদারের দরকার ছিল নিমিশার। সেইমতো ২০১৫ সালে দু’জন মিলে নতুন ক্লিনিক খোলেন। এর পর থেকেই শুরু হয় দুই অংশীদারের মতবিরোধ।

অভিযোগ, নিমিশার টাকা এবং পাসপোর্ট মাহদি কেড়ে নিয়েছিলেন। মারধর করে নাকি নিমিশাকে মাদকসেবনেও বাধ্য করেছিলেন মাহদি। আইনি কাগজপত্রে নিমিশাকে স্ত্রী হিসাবে পরিচয় দিয়ে প্রশাসনিক সাহায্য পাওয়ার পথও প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই মাহদিকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেন ওই নার্স। নিমিশার দাবি, মাহদিকে ঘুম পাড়িয়ে নিজের পাসপোর্ট পুনরুদ্ধার করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। কিন্তু ওভারডোজ়ের কারণে মৃত্যু হয় মাহদির। এর পর হানান নামে এক সহকর্মীর সঙ্গে মিলে মাহদির দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেন ওই নার্স। ওই মাসেই ইয়েমেন ছেড়ে পালানোর সময় ধরা পড়ে যান নিমিশা। সেই থেকে ইয়েমেনের জেলেই বন্দি রয়েছেন ভারতের যুবতী।

Advertisement
আরও পড়ুন