SCO Summit

সেই এসসিও সম্মেলন, সেই চিন, মাঝে শুধু পাঁচ সপ্তাহ! যৌথ বিবৃতিতে ফারাক গড়ল পহেলগাঁও কাণ্ডের উল্লেখ

পহেলগাঁওয়ের হত্যালীলার প্রসঙ্গ যে এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে উঠবে, তার আন্দাজ আগেই মিলেছিল। সোমবার পহেলগাঁওকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দেয় এসসিও। শুধু তা-ই নয়, মদতদাতাদের বিরুদ্ধে বিচারের দাবিও করা হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:২১
Pahalgam incident reflect into SCO summit join statement

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।

এক দিনেই বদলে যেতে পারে কূটনৈতিক সম্পর্ক। সেখানে পাঁচ সপ্তাহ অনেকটাই সময়। সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতির পরিবর্তন কি শেষ পর্যন্ত বদলে দিল কূটনৈতিক সমীকরণ! চিনের তিয়ানজিন শহরে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের যৌথ বিবৃতিতে পহেলগাঁও কাণ্ডের উল্লেখের পর এমনই মনে করছে বিশ্ব কূটনৈতিক মহলের একাংশ!

Advertisement

পহেলগাঁওয়ের হত্যালীলার প্রসঙ্গ যে এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে উঠবে, তার আন্দাজ আগেই মিলেছিল। সোমবার (ভারতীয় সময়) পহেলগাঁও কাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দেয় এসসিও। শুধু তা-ই নয়, মদতদাতাদের বিরুদ্ধে বিচারের দাবিও করা হয়েছে। তবে বিবৃতিতে সরাসরি পাকিস্তানের নাম নেওয়া হয়নি। ঘটনাচক্রে, এই সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ দু’জনেই উপস্থিত ছিলেন।

তবে পাঁচ সপ্তাহ আগে এসসিও-র প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সম্মেলনে কার্যত ‘ফাঁকা হাতে’ ফিরতে হয়েছিল ভারতকে। গত ২৬ জুন চিনের কিংডাও শহরে আয়োজিত হয় এসসিও-র প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠক। সেই বৈঠকে ভারতের প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রাজনাথ সিংহ। সে বার বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতি দেওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ, সেই বিবৃতিতে পহেলগাঁও হত্যালীলার উল্লেখ ছিল না। আর তার জন্যই বিবৃতিতে স্বাক্ষর না করে বেরিয়ে গিয়েছিলেন রাজনাথ। ফলে সে বারের এসসিও সম্মেলন শেষ হয়েছিল যৌথ বিবৃতি ছাড়াই।

মাঝে পাঁচ সপ্তাহ কেটেছে। বিশ্ব কূটনৈতিক মহলে অনেক পটপরিবর্তন হয়েছে। এক সময়ের ‘বন্ধু’ আমেরিকার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। তার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে দূরত্ব বাড়িয়েছে। উল্টে দীর্ঘ দিনের ‘শত্রু’ চিন এখন ভারতের ‘ভাল’ বন্ধু হয়ে উঠেছে। ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রতিবাদ করে নয়াদিল্লির পাশে দাঁড়িয়েছে বেজিং। তার মধ্যেই মোদীর চিন সফর। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও। মোদী, পুতিন এবং চিন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের ‘বন্ধুত্ব’ নতুন অধ্যায়ের সূচনাও বলে মত অনেকের। সেখানে এসসিও সম্মেলনের যৌথ বিবৃতিতে পহেলগাঁও কাণ্ডের উল্লেখ বিশ্ব কূটনৈতিক মহলে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের হত্যাকাণ্ডে পাকিস্তানের যোগ রয়েছে বলে শুরু থেকেই অভিযোগ তুলে আসছে ভারত। এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে নাম না-করে পাকিস্তানকে ফের এ বিষয়ে নিশানা করেন মোদী। কেউ কেউ খোলাখুলি সন্ত্রাসবাদে মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তবে এসসিও শেষ পর্যন্ত পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে পাকিস্তানকে না জুড়লেও পহেলগাঁও কাণ্ডের নিন্দা করেছে। যৌথ বিবৃতিতে তা প্রতিফলিত হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহামলায় নিহত এবং আহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছে তারা। অপরাধী, আয়োজক এবং মদতদাতাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে, তা-ও উল্লেখ করা হয়েছে যৌথ বিবৃতিতে। শুধু পহেলগাঁও কাণ্ডের হত্যালীলার ঘটনা নয়, যৌথ বিবৃতিতে জায়গা পেয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় হওয়া জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গও। উঠে এসেছে পাকিস্তানের জ়াফর এক্সপ্রেসে হামলার ঘটনাও। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এসসিও সদস্য রাষ্ট্রগুলি কখনই কোনও সন্ত্রাসমূলক কাজকে সমর্থন করে না। সকল ধরনের সন্ত্রাসবাদ কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায়। এ-ও জানানো হয়, সন্ত্রাসবাদ দমনে ‘দ্বৈত ভূমিকা’ নেওয়া কখনই গ্রহণযোগ্য নয়।

Advertisement
আরও পড়ুন