Pakistan on Indus Water Treaty

ভারতের ‘সিন্ধু-যুদ্ধের’ কারণে সঙ্কটে ২৪ কোটি পাকিস্তানি! মানল ইসলামাবাদ, নালিশও ঠুকল রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকে

পহেলগাঁওয়ে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনার পর সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করে দেয় ভারত। এখনও তা স্থগিত রাখা হয়েছে। ভারতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জে নালিশ ঠুকল পাকিস্তান।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২৫ ১৫:২৯
(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

ভারতের সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে নালিশ ঠুকল পাকিস্তান। জানাল, এর ফলে ২৪ কোটি পাকিস্তানির অস্তিত্বের সঙ্কট হতে পারে। ভারতের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিষয়টি নজরে রাখতে বলেছেন ইসলামাবাদের প্রতিনিধি। বড় সঙ্কট তৈরি হওয়ার আগে পদক্ষেপের আর্জিও জানিয়েছেন। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এই তথ্য জানিয়েছে।

Advertisement

পহেলগাঁওয়ে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। তখনই স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে সিন্ধু চুক্তি। ১৯৬০ সালের এই চুক্তি অনুযায়ী সিন্ধু নদ এবং তার পাঁচটি উপনদীর জল ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে বণ্টিত হয়। চুক্তি স্থগিত হয়ে যাওয়ার ফলে পাকিস্তানমুখী নদীগুলির জল ছাড়া, বাঁধ দেওয়া প্রভৃতিতে শর্ত লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে অভিযোগ। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের একটি বৈঠকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত তথা ডেপুটি স্থায়ী প্রতিনিধি উসমান জাদুন এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের প্রসঙ্গে পাক প্রতিনিধি বলেন, ‘‘ভারতের চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত মানবাধিকার আইন এবং যাবতীয় আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী। আমরা ভারতের এই বেআইনি ঘোষণার তীব্র বিরোধিতা করছি। ভারত যেন কঠোর ভাবে চুক্তির শর্ত মেনে চলে। কোনও ভাবেই যেন ওই সমস্ত নদীর জল বন্ধ বা গতিপথ পরিবর্তন না-করা হয়। ২৪ কোটি পাকিস্তানির জীবনরেখা এই নদী। এমন পদক্ষেপ আমরা কখনও মানব না।’’

সিন্ধু চুক্তি নিয়ে ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিভিন্ন মন্তব্য ‘উদ্বেগজনক’ বলে রাষ্ট্রপুঞ্জে জানিয়েছে পাকিস্তান। তাদের দাবি, জলকে ভারত ‘অস্ত্র’ হিসাবে ব্যবহার করছে। ভারতের নেতাদের কিছু বক্তব্যও ভাষণের সময় তুলে ধরেন পাক প্রতিনিধি। বলেন, ‘‘একটা দেশ জলকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের উচিত এই ধরনের আন্তর্জাতিক আইনলঙ্ঘনের ঘটনাগুলি চিহ্নিত করা, যা কোনও অঞ্চলের শান্তি বিঘ্নিত করে এবং মানবিক সঙ্কট তৈরি করে।’’ ভারতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জের ফোরামকে ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক ঐকমত্যের আবেদন জানিয়েছে পাকিস্তান।

সিন্ধু এবং তার পাঁচটি উপনদীর মধ্যে বিপাশা, ইরাবতী এবং শতদ্রুর জল ভারত ব্যবহার করে। সিন্ধু, বিতস্তা এবং চন্দ্রভাগার জল ব্যবহার করে পাকিস্তান। সে দেশের কৃষিকাজের ৮০ শতাংশ এই নদীর জলের উপরেই নির্ভরশীল। ভারত পহেলগাঁও হামলার পরেই সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করেছিল। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে সংঘর্ষ হয়। গত ১০ মে সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয় ভারত এবং পাকিস্তান। তবে তার পরেও সিন্ধু চুক্তি স্থগিতই রাখা হয়েছে। ভারত জানিয়ে দিয়েছে, যত দিন না পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া বন্ধ করবে, তত দিন চুক্তি স্থগিত থাকবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘‘জল এবং রক্ত পাশাপাশি বইতে পারে না।’’ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই এ বার রাষ্ট্রপুঞ্জে নালিশ ঠুকল পাকিস্তান।

Advertisement
আরও পড়ুন