India-Pakistan Conflict

ভারতের পথেই হাঁটল পাকিস্তান! ইসলামাবাদে ভারতীয় হাই কমিশনের কর্তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা, দেশ ছাড়ার নির্দেশ

মঙ্গলবারই ভারত সরকারও দিল্লির পাক হাই কমিশনের এক আধিকারিককে ‘অবাঞ্ছিত’ ব্যক্তি বলে ঘোষণা করে। একই সঙ্গে তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসলামাবাদ একই পদক্ষেপ করল।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৫ ০৭:৫৮
Pakistan expels Indian high commission staff, gave 24 hours deadline to leave

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

দিল্লির পাক হাইকমিশনের কর্তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ পাকিস্তান। এ বার ইসলামাবাদও হাঁটল নয়াদিল্লির পথেই। ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশনের এক আধিকারিককে ‘অবাঞ্ছিত’ (পার্সোনা নন গ্রাটা) ঘোষণা করে বহিষ্কারের নির্দেশ দিল শাহবাজ় শরিফের সরকার। শুধু তা-ই নয়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে পাকিস্তান ছাড়ার সময়য়ীমাও বেঁধে দিয়েছে ইসলামাবাদ।

Advertisement

পাক বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, ওই কর্তা পাকিস্তানে তাঁর সরকারি মর্যাদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এমন কার্যকলাপে লিপ্ত ছিলেন। সেই কারণে পাকিস্তান সরকার তাঁকে ‘অবাঞ্ছিত’ ব্যক্তি বলে মনে করছে। ইসলামাবাদে ভারতীয় শীর্ষ কূটনীতিককে (চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স) তলব করে এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য এবং নির্দেশিকা (কূটনৈতিক পরিভাষায় ডিমার্শ) দেওয়া হয়েছে। তবে কী কারণে ভারতীয় হাই কমিশনের ওই আধিকারিককে বহিষ্কার করা হল, তা স্পষ্ট করে উল্লেখ করেনি পাক বিদেশ মন্ত্রক। তবে অনেকের মতে, এটা পাকিস্তানের ‘প্রতিশোধমূলক’ পদক্ষেপ!

মঙ্গলবারই ভারত সরকারও দিল্লির পাক হাই কমিশনের এক আধিকারিককে ‘অবাঞ্ছিত’ ব্যক্তি বলে ঘোষণা করে। একই সঙ্গে তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসলামাবাদ একই পদক্ষেপ করল। ভারত সরকারও জানায়নি ঠিক কী কারণে ওই পাক কূটনীতিক বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে সরকারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সম্প্রতি পঞ্জাব পুলিশ দিল্লির পাক দূতাবাসের এক আধিকারিককে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত ‘স্পর্শকাতর তথ্য’ পাচারের অভিযোগে এক মহিলা-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল। সেই মামলার তদন্তের সূত্র ধরেই পাক হাইকমিশনের ওই কর্তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যদিও ভারতীয় হাই কমিশনের আধিকারিককে বহিষ্কার করার কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা।

পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকেই ভারত এবং পাকিস্তানের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। ভারত প্রথম থেকেই ওই জঙ্গি হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে। যদিও পাকিস্তানের দাবি, তারা কোনও ভাবেই পহেলগাঁও কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়। তবে পাকিস্তানের সাফাইয়েও থামেনি নরেন্দ্র মোদী সরকার। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ করেছে তারা। সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত থেকে শুরু করে ভারতে থাকা পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল করার মতো সিদ্ধান্ত নেয় মোদী সরকার। পাকিস্তানও পাল্টা পদক্ষেপ করে। সেই আবহেই জঙ্গিদমনে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান চালায়। ভারতের দাবি, সেই অভিযানে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে থাকা ন’টি জঙ্গিঘাঁটিতে আঘাত হানে ভারতীয় সেনাবাহিনী। পাকিস্তানের অভিযোগ, ভারতের প্রত্যাঘাতে সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। তার পরেই ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। পাকিস্তান ক্রমাগত গোলাবর্ষণ শুরু করে। শুধু তা-ই নয়, ভারতের সেনাঘাঁটিতেও হামলার চেষ্টা চালায়। তবে ভারত প্রতিবারই সেই হামলা রুখে দেয়। দুই দেশের মধ্যে সামরিক অস্থিরতা চলে কয়েক দিন ধরে। হামলা, পাল্টা হামলায় দুই দেশেরই বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়। তাঁদের মধ্যে যেমন সেনাবাহিনীর সদস্য রয়েছেন, তেমনই রয়েছেন সাধারণ নাগরিকও। তবে দুই দেশের আলোচনায় বর্তমানে যুদ্ধবিরতি চলছে। বন্ধ আছে গোলাবর্ষণ। সেই আবহেই এ বার দুই দেশের হাই কমিশনের কর্তাকে বহিষ্কারের খবর প্রকাশ্যে এল।

Advertisement
আরও পড়ুন