India Russia Oil Trade

রাশিয়াকে কোণঠাসা করতে ফের ইউরোপকে চাপ ট্রাম্পের, ভারতকে আগলে রেখে তেল নিয়ে জবাব মস্কোরও! কী বার্তা

আরও এক বার ইউরোপের দেশগুলিকে রাশিয়ার তেল আমদানি নিয়ে চাপ দিলেন ট্রাম্প। একই সঙ্গে এল মস্কোর প্রতিক্রিয়াও। আমেরিকার লাগাতার চাপের মুখে ভারতের অনড় অবস্থানের প্রশংসা করল রুশ বিদেশ মন্ত্রক।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:০৭
(বাঁ দিক থেকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প,  ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

(বাঁ দিক থেকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। —ফাইল চিত্র।

ইউক্রেনে যুদ্ধ থামাতে হলে রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক মহলে কোণঠাসা করতে হবে। আমেরিকার একার চেষ্টায় তা সম্ভব নয়। তার জন্য ইউরোপের সহযোগিতা চাই। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে এমনটাই মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আরও এক বার ইউরোপের দেশগুলিকে রাশিয়ার তেল আমদানি নিয়ে চাপ দিলেন। একই সঙ্গে এল মস্কোর প্রতিক্রিয়াও। আমেরিকার লাগাতার চাপের মুখে ভারতের অনড় অবস্থানের প্রশংসা করল রুশ বিদেশ মন্ত্রক।

Advertisement

২০২২ সালের রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার তেল আমদানির পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত। কারণ, ওই সময় থেকে রাশিয়া অনেক সস্তায় তেল বিক্রি করছে। এখন রাশিয়ার তেলের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ ভারত (চিনের পরেই)। এতে আপত্তি তুলেছেন ট্রাম্প। ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্কও আরোপ করেছেন। তবে নয়াদিল্লি বাণিজ্যনীতির পরিবর্তন করেনি। এর পর ট্রাম্প নেটো-র সদস্য দেশ তথা ইউরোপকে কঠোর হওয়ার ডাক দিয়েছেন। বার বার রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের জন্য তাদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। সোমবার নিউ জার্সি থেকে হোয়াইট হাউসে ফেরার পথেও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বললেন, ‘‘ইউরোপের দেশগুলি রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে। আমি সেটা চাই না। ওরা রাশিয়ার উপর যে সমস্ত বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তা-ও যথেষ্ট নয়। আমি আরও বিধিনিষেধ আরোপ করতে চাই। কিন্তু তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইউরোপকেও বিধিনিষেধ কঠোর করতে হবে।’’

ভিন্ন প্রসঙ্গে রাশিয়ার তেল কেনার জন্য বিভিন্ন দেশের উপর মার্কিন চাপ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল মস্কোকে। তাদের বিদেশ মন্ত্রক তার জবাব দিতে গিয়ে ‌ভারতের কথা উল্লেখ করে। মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘ভারত এবং রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কঠিন সময়েও স্থিতিশীল ভাবে এগিয়ে চলেছে। এই সম্পর্কে ব্যাঘাত ঘটানোর যে কোনও চেষ্টাই ব্যর্থ হবে।’’ নয়াদিল্লির প্রশংসা করে রুশ বিদেশ মন্ত্রক আরও বলেছে, ‘‘আমেরিকা এবং নেটো-র সদস্য দেশগুলির অনবরত চাপের মুখেও নতিস্বীকার করেনি ভারত। তারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পালন করে চলেছে। ভারতের এই অবস্থান আসলে দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্বের প্রতিফলন। দুই দেশের সম্পর্কে সবসময় জাতীয় স্বার্থ এবং সার্বভৌমত্বকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।’’

উল্লেখ্য, ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, নয়াদিল্লির এই বাণিজ্যনীতির কারণেই ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারছে রাশিয়া। এতে তাদের অর্থসাহায্য হচ্ছে। ভারত তেল বাবদ যে অর্থ দিচ্ছে, তা যুদ্ধে কাজে লাগানো হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসন এ-ও দাবি করেছিল যে, পরোক্ষে ইউক্রেনের প্রাণহানির জন্য দায়ী ভারত। নয়াদিল্লির তরফে এই যুক্তি গ্রাহ্য করা হয়নি। বরং একই যুক্তিতে রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য চিন বা অন্য কোনও দেশের বিরুদ্ধে কেন পদক্ষেপ করছে না হোয়াইট হাউস, সেই প্রশ্ন তুলেছে ভারত। সম্প্রতি এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে চিনে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। তিন রাষ্ট্রনেতার এই ঘনিষ্ঠতা ভাল চোখে দেখেননি ট্রাম্প। এর পর ভারতের প্রতি তাঁর সুর কিছুটা নরম হয়। উল্টে নেটো-র সদস্য দেশ এবং ইউরোপের উপর রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের জন্য চাপ দিতে শুরু করেছেন তিনি।

Advertisement
আরও পড়ুন