Madhya Pradesh

রাতের বেলা ‘রহস্যময়’ জন্তুর কামড়! অজানা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ছ’জনের, আতঙ্ক মধ্যপ্রদেশের গ্রামে

মধ্যপ্রদেশের বারওয়ানি জেলার লিম্বাই গ্রামে গত বেশ কয়েক দিন ধরেই গভীর রাতে ঘুমন্ত গ্রামবাসীদের উপর চড়াও হচ্ছে একটি প্রাণী। যদিও সেই জন্তুটি আদতে কী, তা এখনও জানা যায়নি। স্থানীয়দের দাবি, রাতের অন্ধকারে ঘরে ঢুকে কামড় দিয়ে চলে যাচ্ছে প্রাণীটি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫ ১৬:৫৮

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

রাতের বেলা রহস্যময় জন্তুর কামড়! তার পরেই অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ গেল অন্তত ছ’জনের। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের বারওয়ানি জেলায় ঘটনাটি ঘটেছে। খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে গ্রামে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের বারওয়ানি জেলার লিম্বাই গ্রামে গত বেশ কয়েক দিন ধরেই গভীর রাতে ঘুমন্ত গ্রামবাসীদের উপর চড়াও হচ্ছে একটি প্রাণী। যদিও সেই জন্তুটি আদতে কী, তা এখনও জানা যায়নি। স্থানীয়দের দাবি, রাতের অন্ধকারে ঘরে ঢুকে কামড় দিয়ে চলে যাচ্ছে প্রাণীটি। এর পরেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন গ্রামবাসীরা। ওই জন্তুর কামড়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার দু’সপ্তাহের মাথায় গ্রামের ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। জলাতঙ্কের টিকা দেওয়া সত্ত্বেও তাঁদের বাঁচানো যায়নি।

ঘটনার সূত্রপাত গত ৫ মে। ওই দিন রাত ১টা থেকে ৫টার মধ্যে গ্রামের অন্তত ১৭ জন বাসিন্দা ঘুমন্ত অবস্থায় ‘রহস্যময়’ ওই জন্তুর আক্রমণের শিকার হন বলে দাবি। গ্রামবাসীরা আরও জানাচ্ছেন, এখনও প্রাণীটিকে লিম্বাই গ্রামের তিনটি আলাদা আলাদা জায়গায় ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে। এর পরের দিন সকালে এক জন গ্রামবাসী বাড়ির উঠোনে ঝাঁট দিচ্ছিলেন। সে সময় তাঁর উপরেও ঝাঁপিয়ে পড়ে জন্তুটি। তাঁর মতো বেঁচে যাওয়া কয়েক জন প্রত্যক্ষদর্শী জানাচ্ছেন, রহস্যময় ওই প্রাণীটিকে অনেকটা কুকুরের মতো দেখতে। তবে প্রাণীটি ঠিক কুকুর নয়, বরং হায়েনার মতো নানা বৈশিষ্ট্যও রয়েছে তার দেহে। চতুষ্পদ ওই জন্তুর চারটি পা অসমান। পিঠ ঢালু এবং মসৃণ।

ঘটনার পরেই আক্রান্ত ১৭ জনকে ভর্তি করানো হয় বারওয়ানি এবং ইনদওরের চিকিৎসাকেন্দ্রগুলিতে। সেখানে তাঁদের জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সব রকম চিকিৎসা সত্ত্বেও ছ’জনকে বাঁচানো যায়নি। গত ২৩ মে থেকে ২ জুনের মধ্যে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুই মহিলা এবং চার জন পুরুষ রয়েছেন। সকলেরই বয়স ৪০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। সোমবারও মৃত্যু হয়েছে সুনীল নামে বছর চল্লিশের এক যুবকের।

রহস্যময় প্রাণীটি আসলে কী, তা নিয়ে ধন্দে চিকিৎসকেরাও। সোমবার গ্রামটি পরিদর্শন করেন বারওয়ানির কালেক্টর গুঞ্চা সানোবার। কালেক্টরের মতে, সমস্ত নিয়ম মেনেই আক্রান্তদের চিকিৎসা হয়েছিল। জলাতঙ্কের টিকাও দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। ওই অ্যান্টি-র‌্যাবিস টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য টিকার নমুনা কসৌলের জাতীয় ওষুধ পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সানোবারের কথায়, ‘‘জীবিত ১১ জনকে পরীক্ষা করা চিকিৎসকদের দল বলছে, তারা কখনও এমন অদ্ভুত ধরনের কামড় দেখেনি। আমরা সমস্ত দিক তদন্ত করে দেখছি।’’ অজানা ওই জন্তুর খোঁজেও নেমেছে বন দফতর। ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে প্রশাসনের তরফে ৮ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে।

Advertisement
আরও পড়ুন