সনিয়া গান্ধীর। —ফাইল চিত্র।
দেশে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প (মনরেগা) নিয়ে নতুন আইন আনতে চলেছে কেন্দ্র। এই সংক্রান্ত বিল পাশও হয়েছে লোকসভা ও রাজ্যসভায়। নতুন বিলে ১০০ দিনের কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে তা ১২৫ দিন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে চমক রয়েছে নামে। নয়া বিলে এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে বিকশিত ভারত-গ্যারান্টি ফর রোজগার অ্যান্ড আজীবিকা মিশন (গ্রামীণ)। সংক্ষেপে জিরামজি। কেন্দ্রের এই বিল নিয়ে এ বার মুখ খুললেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। তাঁর মতে, ‘মনরেগা’র উপর বুলডোজ়ার চালিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এটাকে কেন্দ্রের ‘কালো আইন’ বলে উল্লেখ করেছেন কংগ্রেসের সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন।
এত দিন ১০০ দিনের প্রকল্পের নাম ছিল মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপাওয়ারমেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট, ২০০৫, যা সংক্ষেপে মনরেগা নামে পরিচিত। কিন্তু কেন্দ্রের প্রস্তাবিত নামে ওই প্রকল্প থেকে বাদ যাচ্ছে মহাত্মা গান্ধীর নাম! ‘জিরামজি’ নাম নিয়ে আপত্তি তোলে বিরোধীরা। সনিয়ার বক্তব্য, ‘‘মনরেগা-কে দুর্বল করে মোদী সরকার লক্ষ লক্ষ কৃষক, শ্রমিক, ভূমিহীন মানুষের স্বার্থে আঘাত হেনেছে।’’ কংগ্রেস নেত্রীর অভিযোগ, গত ১১ বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার গ্রামের গরিব মানুষদের স্বার্থ উপেক্ষা করেছে।
বছর ২০ আগে মনমোহন সিংহের জমানায় কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকার মনরেগা আইন পাশ করেছিল। প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রীর মতে, সরকার সেই সময় এক ‘সাড়াজাগানো পদক্ষেপ’ করেছিল। ১০০ দিনের কাজ দেশের বঞ্চিত, শোষিত এবং গরিবদের সামনে জীবিকা নির্বাহের এক পথ খুলে দিয়েছিল। এই প্রকল্প সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থানের আইনি অধিকার নিশ্চিত করে। সনিয়ার কথায়, ‘‘এটা দুর্ভাগ্যজনক বিষয় যে, সম্প্রতি সরকার মনরেগার উপর বুলডোজ়ার চালিয়েছে। শুধু মহাত্মা গান্ধীর নাম মুছেছে তা নয়, মনগেরার আসল রূপ এবং কাঠামো যথেচ্ছ ভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে। কোনও আলোচনা ছাড়াই, বিরোধীদের পরামর্শ ব্যতীত এ হেন কাজ করেছে কেন্দ্র।’’
বৃহস্পতিবার সকালেই প্রকল্প থেকে গান্ধীর নাম সরানোর প্রতিবাদ করে সংসদ চত্বরে মিছিল করেন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদেরা। লোকসভার অধিবেশন শুরু হলে গান্ধীর ছবি নিয়ে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখান তাঁদের অনেকে। বিলের কপি ছিঁড়ে ফেলা হয়। প্রস্তাবিত বিল নিয়ে বিতর্কে যোগ দেন কংগ্রেসের প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা, ডিএমকের টিআর বালু, এসপির ধর্মেন্দ্র যাদব। বিলের বিরোধিতা করে তাঁরা সেটি নিয়ে সবিস্তার আলোচনার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানান। তৃণমূল সাংসদেরা সংসদের বাইরে রাতভর বিক্ষোভও দেখান।