মুম্বইয়ে গত বছরের বিএমডব্লিউ-কাণ্ডে অভিযুক্তকে জামিন দিল না সুপ্রিম কোর্ট। — ফাইল চিত্র।
দেড় বছর আগের ঘটনা। বিএমডব্লিউ-এর তলায় চাপা দিয়ে পালিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের এক নেতার পুত্র। দিনতিনেক গা-ঢাকা দিয়ে থাকার পরে গ্রেফতার হন তিনি। মুম্বইয়ের ওই বিএমডব্লিউ-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত মিহির শাহের জামিনের আর্জি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্টও। শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, “এই ধরনের ছেলেদের উচিতশিক্ষা হওয়ার দরকার।”
মিহিরের বাবা রাজেশ শাহ শিবসেনার প্রাক্তন নেতা। মহারাষ্ট্রের শাসক জোটের অন্যতম শরিক শিবসেনা (শিন্দে গোষ্ঠী)-র নেতা ছিলেন তিনি। মিহিরের গ্রেফতারির পরে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় রাজেশকে। দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল গত বছরের জুলাইয়ে। মুম্বইয়ের ওরলিতে বিলাসবহুল বিএমডব্লিউ সেডান চালিয়ে বাড়ি ফেরার সময় একটি স্কুটারে ধাক্কা মারেন মিহির। তার জেরে মৃত্যু হয় স্কুটার আরোহী কাবেরী নাকওয়ারের। গুরুতর আহত হন কাবেরীর স্বামীও। এর পরেই বেগতিক বুঝে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান মিহির। ধাক্কা মারার পরে ওই মহিলা কিছু ক্ষণ গাড়ির বনেটে আটকে ছিলেন। তার পরে প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ গাড়ির চাকায় জড়িয়ে ছিলেন মহিলা। সেই অবস্থাতেই গাড়ি ছুটিয়ে নিয়ে যান ২৪ বছর বয়সি মিহির।
বম্বে হাই কোর্ট আগেই মিহিরের জামিনের আর্জি খারিজ করে দেয়। পরে তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। অভিযুক্ত যে এক প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য এবং তাঁর বাবা যে উপমুখ্যমন্ত্রী শিন্দের শিবসেনা গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তা-ও উঠে আসে সুপ্রিম কোর্ট। এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন শীর্ষ আদালতের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহ। মিহিরের জামিনের আর্জি খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, “তিনি প্রথমে একটি মার্সেডিজ় গাড়ি থেকে নামেন। তার পরে বিএমডব্লিউ নিয়ে বেরোন। সেটি নিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যান। তাঁকে কিছু দিন জেলেই থাকতে দেওয়া হোক। এই ধরনের ছেলেদের একটি শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন।”
এই মামলার পুলিশি তদন্তে জানা যায়, দুর্ঘটনার আগের রাতে বন্ধুদের সঙ্গে জুহুর একটি বারে মদ্যপান করেছিলেন তিনি। তিন বন্ধু মিলে পান করেন ১২ পেগ হুইস্কি। দুর্ঘটনার সময়েও মত্ত অবস্থাতেই ছিলেন মিহির। এর পর গ্রেফতার হন মিহিরের রাজনীতিক বাবাও। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান। তাঁকে দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় গাড়ির চালক রাজঋষি বিদাওয়াতকেও। দুর্ঘটনার পর তিনি মিহিরকে সরিয়ে চালকের আসনে বসেছিলেন বলে অভিযোগ।