দুর্ঘটনার পর দাউদাউ করে জ্বলছে যাত্রিবাহী সেই বাস। ছবি: পিটিআই।
তাঁর বাসটিকে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল সিবার্ড টুরিস্টের বাসটি। তার পর ১০০ মিটারের মধ্যেই পুরো ছবিটা বদলে গেল। কর্নাটকে বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সাক্ষী এবং উদ্ধারকারী তথা অন্য একটি বাসের চালক সচিন তাঁর ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন এক সংবাদসংস্থাকে।
সিবার্ড টুরিস্টের একটি বাতানুকূল বাসে বৃহস্পতিবার ভোরে আগুন লেগে ন’জনের মৃত্যু হয়েছে কর্নাটকের চিত্রদুর্গে। একটি ট্রাক এসে ধাক্কা মারে বাসে। তার পরই সেটিতে আগুন ধরে যায়। ওই বাসের ঠিক পিছনেই ছিল আরও একটি বাস। সেই বাসে ৪২ জন পড়ুয়া ছিল। তাদের শিক্ষামূলক ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেই বাসেরই চালক সচিন।
তিনি বলেন, ‘‘সিবার্ড টুরিস্টের বাস প্রথম দিকে আমাদের পিছনেই ছিল। কিন্তু সেটি আমার বাসটিকে ওভারটেক করে এগিয়ে যায়। মেরেকেটে ১০০ মিটার হবে। চোখের সামনে এক মিনিটের মধ্যে সব কিছু বদলে গেল। শুনশান জাতীয় সড়কে তখন মহিলা, শিশুদের কান্না আর চিৎকার।’’ সচিন জানান, এই দুর্ঘটনা তাঁদের সঙ্গে ঘটতে পারত। কারণ তাঁর বাসটি আগে ছিল। কিন্তু সিবার্ড টুরিস্টের বাসচালক ওভারটেক করে এগিয়ে যাওয়ায় সেটিকে উল্টো দিকের লেন থেকে ডিভাইডার টপকে এসে ধাক্কা মারে একটি ট্রাক। তবে এই দৃশ্য দেখে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে পারেননি সচিন। তাঁর বাসটিকে নিরাপদ দূরত্বে দাঁড় করিয়ে ছুটে যান অগ্নিদগ্ধ বাসটির দিকে। তার পর একা হাতেই সাত জনকে বাস থেকে টেনে বার করে আনেন।
সচিন বলেন, ‘‘যখন এক এক করে বাস থেকে সাত জনকে উদ্ধার করলাম, তার পরই একটি বিস্ফোরণ হয়। আর তার জেরেই আগুন আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল বাসটিতে। এক মহিলা আমাকে বলেন তাঁর সন্তানকে বার করে আনতে। কিন্তু আগুনের হলকা এত বেশি ছিল যে বাসের কাছে যাওয়া যায়নি।’’ সচিনের আক্ষেপ, আর একটু যদি সময় পাওয়া যেত, তা হলে হয়তো এতগুলি মানুষকে ঝলসে মরতে হত না। তিনি জানান, রাস্তায় বাস চালানোর সময় ছোট-বড় অনেক দুর্ঘটনার সাক্ষী থেকেছেন তিনি। কিন্তু বৃহস্পতিবার যে ঘটনার সাক্ষী থাকলেন, তা কোনও দিন ভুলতে পারবেন না।
বাসটিতে ২৯ জন যাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ন’জনের মৃত্যু হয়েছে। ১২ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। বাকিদের সামান্য আঘাত লেগেছে।