Donald Trump Tariff Row

ব্যবসার প্রস্তাব দিয়ে ভারত-পাক সংঘাত থামান ট্রাম্প, শুল্কনীতির পক্ষে সওয়ালে কোর্টে বলল হোয়াইট হাউস

এর আগে একাধিক বার ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, তিনিই ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বিরোধের মীমাংসা করেছেন। এ-ও জানিয়েছেন যে, তাঁরই মধ্যস্থতায় ‘বাণিজ্যের মাধ্যমে’ ভারত-পাক বিরোধের অবসান ঘটেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২৫ ১৪:৫৯
(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং শাহবাজ় শরিফ।

(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং শাহবাজ় শরিফ। —ফাইল চিত্র।

ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতির ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা নিয়েছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের পারস্পরিক শুল্কনীতি বহাল রাখার আর্জি জানিয়ে আমেরিকার একটি আদালতে এমনটাই জানাল হোয়াইট হাউস।

Advertisement

এর আগে একাধিক বার ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, তিনিই ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বিরোধের মীমাংসা করেছেন। এ-ও জানিয়েছেন যে, তাঁরই মধ্যস্থতায় ‘বাণিজ্যের মাধ্যমে’ ভারত-পাক বিরোধের অবসান ঘটেছে। তবে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের একাধিক সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতির ক্ষেত্রে তৃতীয় কোনও পক্ষের হাত নেই। তবে এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে এই বিষয়ে কিছু বলেনি নয়াদিল্লি। তেমনই ট্রাম্পের দাবি খারিজও করেননি সরকার বা প্রশাসনের শীর্ষস্তরের কেউ।

এই আবহেই নিউ ইয়র্কের একটি আদালতে আমেরিকার বিদেশসচিব হাওয়ার্ড লুটনিক ট্রাম্পের শুল্কনীতি বহাল রাখার পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে ভারত-পাক সংঘাতের প্রসঙ্গ তোলেন। বুধবারই আমেরিকার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক একটি আদালত জানিয়েছে, বিভিন্ন দেশ থেকে আমেরিকায় আমদানি হওয়া পণ্যে শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্প তাঁর আইনি বাধ্যবাধকতার বাইরে বেরিয়ে কাজ করেছেন। আদালতে পারস্পরিক শুল্কনীতি রদ হওয়া আটকাতে ট্রাম্প প্রশাসন ঢাল করেছিল ১৯৭৭ সালের ‘ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকনমিক পাওয়ার্স অ্যাক্ট’কে।

আদালতে এই আইনের পক্ষে সওয়াল করেন আমেরিকার বাণিজ্যসচিব। দাবি করেন, আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা এবং অর্থনীতি রক্ষা করতেই ওই আইনবলে বিদেশি পণ্যে আমদানিশুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প।

এই সূত্রেই ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতির ক্ষেত্রে বাণিজ্যের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন ট্রাম্পের বাণিজ্যসচিব। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, তিনি আদালতে বলেন, “ভারত এবং পাকিস্তান, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল। গত ১০ মে একটি সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয় দু’পক্ষ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করার পরে এবং‌ পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ এড়াতে দু’পক্ষকেই বাণিজ্য করার প্রস্তাব দেওয়ার পর এই সংঘর্ষবিরতি সম্ভব হয়।”

এর আগে ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতি নিয়ে মুখ খুলে ট্রাম্প বলেছিলেন, “আমরা বলেছিলাম, এটা বন্ধ করুন। আমরা আপনাদের সঙ্গে অনেক বাণিজ্য করতে পারি। আপনারা এটা বন্ধ করলে আমরা বাণিজ্য করতে পারি। কিন্তু যদি আপনারা এটা বন্ধ না-করেন, আমরা (আপনাদের সঙ্গে) কোনও বাণিজ্য করব না।” এর পরে ট্রাম্প নিজেই জানান, বাণিজ্যিক বিষয়টিকে তিনি যে ভাবে ব্যবহার করেন, তা অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারেন না। প্রসঙ্গটি উত্থাপন করে মার্কিন বাণিজ্যসচিব আদালতে বলেন, যদি অন্য কোনও রায় আসে (শুল্কনীতি স্থগিত বা রদ), তা হলে ট্রাম্পের বাণিজ্য করার প্রস্তাব সংক্রান্ত ঘোষণার বৈধতা নিয়ে নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে ভারত এবং পাকিস্তান।” এর ফলে গোটা এলাকার নিরাপত্তা ফের ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করেন তিনি।

আদালত অবশ্য শুল্কনীতি রদ করে জানায়, আমেরিকার আইন কোনও প্রেসিডেন্টকে অন্য দেশের উপর শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি নিয়ন্ত্রণ করার চূড়ান্ত ক্ষমতা দেয় না। হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, ট্রাম্প প্রশাসন এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে চলেছে। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কুশ দেশাই সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, দেশে জরুরি পরিস্থিতির মোকাবিলা কী করে করতে হবে, তা অনির্বাচিত বিচারকেরা স্থির করে দিতে পারেন না।

Advertisement
আরও পড়ুন