(বাঁ দিকে) খুনের অভিযোগে গ্রেফতার মহম্মদ বিলাল। লিভ ইন সঙ্গী উমা সিংহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বিয়ের জন্য খুব চাপ দিচ্ছিলেন লিভ ইন সঙ্গী। এত চাপ ভাল লাগেনি তাঁর। তাই সঙ্গীকে খুন করেছেন। হরিয়ানা পুলিশের জেরায় এমনই স্বীকারোক্তি ধৃত মহম্মদ বিলালের!
বিলালের বয়স ২৮ বছর। বাড়ি উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরের একটি গ্রামে। ৩৩ বছরের প্রেমিকা তথা লিভ ইন সঙ্গী উষা সিংহকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ওই যুবককে গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে হরিয়ানা পুলিশ। অন্য দিকে, কালেসার জাতীয় উদ্যান থেকে উষার দেহ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু কাটা মুন্ডুর খোঁজ মেলেনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, বছর দুয়েক ধরে স্বামী পরিত্যক্তা উষার সঙ্গে সাহারানপুরের ডিফেন্স কলোনি এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন ট্যাক্সিচালক বিলাল। বছর দুয়েক ধরে লিভ ইন করছিলেন তাঁরা। সম্প্রতি বিলালের বিয়ের জন্য বাড়ি থেকে পাত্রী দেখা হচ্ছিল। সঙ্গে সঙ্গে সম্মতি জানান যুবক। এ নিয়ে লিভ ইন সঙ্গীর সঙ্গে অশান্তি হতেই তাঁকে খুনের ছক কষেন ওই ট্যাক্সিচালক।
জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে ঝগড়া মেটানোর নাম করে উষাকে হরিয়ানা বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিলেন বিলাল। কালেসার জাতীয় উদ্যানে বেড়ানোর সময় উষাকে তিনি খুন করেন। শুধু তা-ই নয়, পুলিশ যাতে দেহ শনাক্ত করতে না পারে সে জন্য প্রেমিকার মুন্ডু কেটে কোথাও লুকিয়ে দেন। তার পর গ্রামের বাড়ি ফিরে নিজের বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বিলাল।
মঙ্গলবার হরিয়ানা পুলিশ জানিয়েছে, উষার মুন্ডুহীন দেহ উদ্ধারের পর বেশ কিছু তথ্যের ভিত্তিতে গত শনিবার রাতে উত্তরপ্রদেশে হাজির হয় তারা। গ্রেফতার করা হয় বিলালকে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) ১০৩ (খুন) এবং ২৩৮ (প্রমাণ লোপট) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ধৃতকে জেরা করে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। প্রাথমিক ভাবে খুনের কথা স্বীকার করেছেন তিনি। খুনের কারণ হিসাবে জানিয়েছেন, উষা তাঁকে বিয়ের জন্য ক্রমাগত চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু তিনি লিভ ইন সঙ্গীকে বিয়ে করতে চাননি। ভবিষ্যতে যাতে অশান্তি না হয়, সে জন্য খুন করেছেন প্রেমিকাকে।
যমুনা নগরের পুলিশ সুপার কমলদীপ গয়াল বলেন, ‘‘গত ৭ ডিসেম্বর একটি দেহ উদ্ধার করি আমরা। কিন্তু কিছুতেই দেহ শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। কারণ, মৃতার মাথা কেটে নিয়েছিল খুনি। তা ছাড়াও পরনের পোশাকও খুলে নেওয়া হয়। পরে পোশাক উদ্ধার হয় জঙ্গল থেকে। কিন্তু কাটা মুন্ডু পাওয়া যায়নি।’’ তিনি জানান, মৃতার কাটা মাথা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এ জন্য হরিয়ানার সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির পুলিশকেও অবহিত করা হয়েছে। আপাতত পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন বিলাল।
ধৃতের পরিবারের দাবি, বিলালের এই সম্পর্ক সম্পর্কে তারা কিছুই জানত না। ধৃতের এক আত্মীয়ের কথায়, ‘‘কোনও বিবাহিতার সঙ্গে বিলাল সম্পর্কে জড়িয়েছে, এটাই কেউ জানতাম না। লিভ ইন তো অনেক দূরের কথা। এ ব্যাপারে বাড়ির সকলেই অন্ধকারে ছিলাম। তবে অপরাধ করে থাকলে ওর শাস্তি হোক।’’