Celebi Aviation services India

‘১৭ বছর ধরে ভারতে কাজ করছি, আমরা তো ভারতীয়ই’! কোর্টে তুরস্কের সংস্থা, কী যুক্তি কেন্দ্রের

ভারত এবং পাকিস্তানের সংঘাতের আবহে তুরস্ক পাকিস্তানকে সমর্থন করে বলে অভিযোগ। এর পরেই গত ১৫ মে ভারতের বিমানবন্দরগুলিতে তুরস্কের সংস্থা সেলেবির কাজের অনুমতি বাতিল করে দেয় নয়াদিল্লি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৫ ২১:০৮
ভারতের বিমানবন্দরে কার্গো ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বা ব্যবস্থাপনার কাজে যুক্ত তুরস্কের সংস্থা সেলেবি।

ভারতের বিমানবন্দরে কার্গো ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বা ব্যবস্থাপনার কাজে যুক্ত তুরস্কের সংস্থা সেলেবি। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

ভারতের বিভিন্ন বিমানবন্দরে গত ১৭ বছর ধরে কাজ করছে তুরস্কের সংস্থা সেলেবি অ্যাভিয়েশন সার্ভিসেস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড। তাদের সকল কর্মচারীও ভারতীয়। দিল্লি হাই কোর্টে বুধবার এমনটাই জানালেন তাদের আইনজীবী মুকুল রোহতগি। তিনি জানান, সেলেবি ভারতীয় সংস্থাই। গত ১৭ বছরে তাদের কাজ নিয়ে এক বারও প্রশ্ন ওঠেনি। তাদের ‘সুরক্ষা ছাড়পত্র’ বাতিল করার যে সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সংস্থা নিয়েছে, তাকে ‘স্বেচ্ছাচার’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে আদালতে।

Advertisement

ভারত এবং পাকিস্তানের সংঘাতের আবহে তুরস্ক পাকিস্তানকে সমর্থন করে বলে অভিযোগ। তুরস্কের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পরপরই গত ১৫ মে ভারতের বিমানবন্দরগুলিতে তুরস্কের সংস্থা সেলেবির কাজের অনুমতি বাতিল করে দেয় নয়াদিল্লি। বাতিল করা হয় তাদের ‘সুরক্ষার ছাড়পত্র’। জাতীয় সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানায় কেন্দ্রীয় সরকার। এর পর সংস্থার তরফে আদালতে মামলা করা হয়। বুধবার দিল্লি হাই কোর্টে সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। আদালতে সেলেবি জানায়, তারা ভারতেরই সংস্থা। ভারত-পাক সংঘাতে তুরস্কের অবস্থানের কারণে এ দেশে তাদের কাজের অনুমতি বাতিল করা যুক্তিসঙ্গত নয়।

দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি শচীন দত্তের বেঞ্চে সেলেবির তরফে আইনজীবী রোহতগি বলেন, ‘‘এই পদক্ষেপের আগে আমার মক্কেলকে কোনও রকম নোটিস দেওয়া হয়নি। যদিও আগে থেকে নোটিস দেওয়াই নিয়ম। আমার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, তা যদি আমি আগে থেকে জানতে পারতাম, সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করতে পারতাম। যদি এমন কোনও সমস্যা হত যে, আমাদের সংস্থায় কিছু কর্মচারী তুরস্কের, তবে আমরা তাদের সরিয়ে দিতে পারতাম। কিন্তু সমস্যাটাই আমাদের আগে থেকে জানানো হল না। হঠাৎ অনুমতি বাতিল করে দেওয়া হল।’’

উল্লেখ্য, দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু-সহ দেশের ন’টি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরে কার্গো ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বা ব্যবস্থাপনার কাজে যুক্ত সেলেবি। তুরস্কের ইস্তানবুলে এই সংস্থার সূচনা। সারা বছরে ভারতে অন্তত ৫৮ হাজার বিমান এবং ৫.৪ লক্ষ টন মালপত্র নিয়ন্ত্রণ করে সেলেবি। অভিযোগ, ভারত অনুমতি বাতিল করার পর বিভিন্ন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সেলেবির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে দিচ্ছে। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার আবেদন জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী।

কেন্দ্রের তরফে এর পাল্টা যুক্তি দেওয়া হয় দিল্লি হাই কোর্টে। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, ভারতের জাতীয় সুরক্ষার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের কাছে তথ্য ছিল, সেলেবি বা এই ধরনের অন্য কোনও সংস্থার পরিষেবা চালু রাখা দেশের পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। সরকারের আইনজীবী বলেন, ‘‘আমরা জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলছি। শত্রুরা ১০ বার চেষ্টা করে এক বার সফল হয়। আর আমাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে ১০ বারের মধ্যে ১০ বারই সফল হতে হয়। বিমান সুরক্ষার উপরে জাতীয় সুরক্ষা অনেকাংশে নির্ভর করে আছে। ফলে সেই সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই হবে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন