Advertisement
E-Paper

‘দুঃখিত হওয়ার থেকে নিরাপদে থাকা ভাল’! তুরস্কের সংস্থার ‘ছাড়পত্র’ বাতিল-মামলায় বলল দিল্লি হাই কোর্ট

ভারতের ন’টি বিমানবন্দরে কার্গো ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বা ব্যবস্থাপনার কাজে যুক্ত ছিল সংস্থাটি। কিন্তু ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে তুরস্কের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর থেকেই আতশকাচের নীচে ছিল সেলেবির কাজকর্ম।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৫ ২৩:১৫
Delhi High Court comments on Turkey-based company\\\'s clearance revoked

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

ভারত-পাক সংঘাতের আবহে পাকিস্তানকে সমর্থনের অভিযোগ উঠেছে তুরস্কের বিরুদ্ধে। সেই আবহেই ভারতীয় বিমানবন্দরগুলিতে তুর্কি সংস্থা সেলেবির কাজ করার অনুমতি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয় নয়াদিল্লি। কেন তাদের ‘সুরক্ষা ছাড়পত্র’ বাতিল করা হল সেই প্রশ্ন তুলে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ওই সংস্থা। সোমবার সেই মামলা শুনানিতে আশঙ্কা প্রকাশ করে আদালত। জানায়, কোনও কিছুতে দুঃখিত হওয়ার চেয়ে নিরাপদে থাকা ভাল!

ভারতের ন’টি বিমানবন্দরে কার্গো ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বা ব্যবস্থাপনার কাজে যুক্ত ছিল সংস্থাটি। ‘সেলেবি এয়ারপোর্ট সার্ভিসেস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড’-সহ সেলেবির আরও দু’টি সংস্থা ভারতের ন’টি বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সংক্রান্ত কাজ করে। কিন্তু ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে তুরস্কের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর থেকেই আতশকাচের নীচে ছিল সেলেবির কাজকর্ম। শেষপর্যন্ত ‘জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের’ কথা উল্লেখ করে সেলেবির ভারতীয় বিমানবন্দরগুলিকে কাজ করার ছাড়পত্র বাতিল করে ভারত সরকার।

নয়াদিল্লির এই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় ওই সংস্থা। সোমবার বিচারপতি শচীন দত্তের সিঙ্গল বেঞ্চে মামলার শুনানি ছিল। সেই শুনানিতে কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা যুক্তি দেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিছু নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ওই সংস্থার পরিষেবা অব্যাহত রাখা বর্তমান পরিস্থিতির জন্য উদ্বেগের। মেহতার কথায়, ‘‘শত্রুরা ১০টি প্রচেষ্টা করে একটিতে সফল হতে চায়। কিন্তু নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে সেই সব চেষ্টা আটকাতে ১০ বারই সফল হতে হয়। বেসামরিক বিমান চলাচলের নিরাপত্তা উপর ভিত্তি করে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার পায়।’’

তবে আবেদনকারী সংস্থার পক্ষে আইনজীবী মুকুল রোহতগি দাবি করেন, সেলেবির বিরুদ্ধে একতরফা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের কোনও কিছু বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। মামলাকারীর হয়ে রোহতগি বলেন, ‘‘আমরা গত ১৭ বছর ধরে কোনও ত্রুটি ছাড়াই কাজ করে আসছি। আমরা বিভিন্ন বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং-সহ নানা পরিষেবা সংক্রান্ত কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। আমার মনে হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণের মধ্যে যে ধারণা তৈরি হয়েছে, সেই কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ সেলেবির সঙ্গে কেন্দ্রের চুক্তির বিষয় মুখবন্ধ খামে আদালতে জমা দেওয়া হয়। যদিও কেন্দ্রের যুক্তি, জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে কখনই আপস করা যাবে না। তার পরেই হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণে উঠে আসে ‘নিরাপদে থাকার’ বিষয়টি। আগামী ২১ মে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

প্রসঙ্গত, পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের জবাবে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিতে ভারতীয় সেনার অপারেশন সিঁদুরের পরে খোলাখুলি পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোয়ান। তাঁদেরই দেওয়া ড্রোন ব্যবহার করে ভারতের জনবসতি এবং সামরিক পরিকাঠামোর উপর আঘাত হানার চেষ্টা করেছে পাক ফৌজ। এমনকি, সংঘাতের আবহেও বিমানবোঝাই অস্ত্র আঙ্কারা থেকে ইসলামাবাদে পৌঁছেছিল বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে ভারতের কয়েকটি বিমানবন্দর পরিচালনা এবং পরিষেবা-ক্ষেত্রে সেলেবি অ্যাভিয়েশনের অংশগ্রহণ এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সেলেবি অ্যাভিয়েশনের কার্যকলাপের উপর নজরদারি শুরু করেছে বলে প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি করা হয়েছিল। সেই আবহেই গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্র ‘সুরক্ষা ছাড়পত্র’ বাতিলের নির্দেশিকা জারি করে। যদিও ওই সংস্থা পরে বিবৃতি দিয়ে জানায়, তারা তুরস্কের সংস্থা নয়। এমনকি তাদের সঙ্গে এর্ডোয়ানের পরিবারের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। তবুও ছাড়পত্র বাতিলের সিদ্ধান্তে অনড় কেন্দ্র। তার পরেই বিষয়টি গড়ায় আদালতে।

Celebi Aviation Delhi High Court Turkey
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy