ভারত এবং পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকায় পাক সেনার গোলাবর্ষণ কী ভাবে মোকাবিলা করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী? তারই বর্ণনা দিলেন সেনাবাহিনীর এক মেজর। সংবাদ সংস্থা এনআইএ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, গুলি প্রথমে পাকিস্তানই চালিয়েছে। তবে ধামাকা দেখিয়েছে ভারতীয় সেনাই! পহেলগাঁও কাণ্ডের প্রত্যাঘাত হিসাবে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে ভারতীয় সেনা একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে আগেই জানিয়েছিল, এই অভিযান ছিল ‘শক্তিশালী, নির্ভুল এবং কার্যকর’।
এনআইএ-র সঙ্গে কথা বলার সময় ভারতীয় সেনার ওই মেজর অবশ্য জানান, ‘অপারেশন সিঁদুর’ কোনও কিছুর প্রতিক্রিয়া ছিল না। এটি ছিল সুপরিকল্পিত। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের উদ্দেশ্য ছিল খুবই স্পষ্ট। সন্ত্রাসী পরিকাঠামো এবং অনুপ্রবেশ সহায়ক পোস্টগুলি ধ্বংস করাই লক্ষ্য ছিল। সেই লক্ষ্যেই আমরা অবিচল ছিলাম। আমরা মানসিক এবং কৌশলগত ভাবে প্রস্তুত ছিলাম।’’
শত্রুদের মোকাবিলা করার জন্য কী কী ব্যবস্থা ছিল ভারতীয় সেনার হাতে? মেজরের কথায়, ‘‘আমাদের কাছে উন্নতমানের দেশীয় রেডার সিস্টেম। শুধু তা-ই নয়, আমাদের সেনাবাহিনীর মনোবলই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল এই লড়াইয়ে।’’
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর লক্ষ্যই ছিল পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করা। সেই লক্ষ্যই বাস্তবায়িত হয়েছে বলে জানালেন মেজর। তিনি নিশ্চিত করেন, ৭ মে মধ্যরাতে অভিযান ‘সিঁদুর’-এ ভারতের পক্ষে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি! তাঁর কথায়, ‘‘পাকিস্তানের দিক থেকে প্রচুর গোলাবর্ষণ হয়েছিল। তবে আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারি যে আমাদের দিক থেকে কোনও হতাহত হয়নি।
আরও পড়ুন:
ভারতীয় সেনার আরও এক কর্তা বলেন, ‘‘ওরা (পাকিস্তান) যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে আমাদের পোস্টগুলিতে হামলা চালানোর চেষ্টা করে, তখন আমাদের প্রতিক্রয়াও ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী এবং কার্যকর। আমাদের প্রতিক্রিয়ায় তছনছ হয়েছে শত্রুদের অনেক ঘাঁটি।’’
পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকেই ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায়। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জন্য পাকিস্তানের দিকে আঙুল তোলে ভারত। যদিও পাকিস্তানের দাবি, তারা কোনও ভাবেই পহেলগাঁওয়ের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়! সেই উত্তেজনার আবহেই জঙ্গিদমনে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সূচনা করে ভারত। পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কশ্মীরের বেশ কয়েকটি জঙ্গিঘাঁটি উড়িয়ে দেওয়া হয়। তার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে গোলাবর্ষণের পরিমাণ বেড়ে যায়। আকাশপথেও একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা চালায়। চার দিন ধরে চলা এই সামরিক অস্থিরতা শেষ হয় যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে। ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়, আপাতত বহাল থাকবে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি, যার মেয়াদ শেষ হওয়ার কোনও তারিখ নেই।