ভারত এবং পাকিস্তানকে ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী’ মনে করে চিন। শুধু তা-ই নয়, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি সমঝোতা বজায় রাখার ব্যাপারেও তারা গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে বলে জানাল বেজিং। পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী ইশাক দারের চিন সফরের মধ্যেই আবার ভারত-পাক নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল তারা।
বেজিং চায়, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে ‘স্থায়ী যুদ্ধবিরতি’ হোক। তা বাস্তবায়িত করার জন্য তারা গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতেও প্রস্তুত, জানাল চিন। সে দেশের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, ‘‘ভারত-পাকিস্তান নিয়ে একাধিক বার চিন নিজের অবস্থান জানিয়েছে। আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে, একটি পূর্ণ ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে এবং আঞ্চলিক শান্তিতে গঠনমূলক ভূমিকা পালনে ইচ্ছুক। ভারত এবং পাকিস্তান— উভয়ই চিনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। উভয় দেশের সঙ্গেই সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দিই আমরা।’’ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র আরও জানান, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা শুরু হওয়ার পর থেকেই চিন বস্তুনিষ্ঠ এবং ন্যায্য অবস্থান গ্রহণ করেছে। উত্তেজনা এড়িয়ে দুই দেশকেই শান্ত এবং সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয় ২৬ জনের। সেই ঘটনায় প্রথম থেকেই পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করে ভারত। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ পাকিস্তানে হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় জঙ্গিদের ঘাঁটি। পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালায়। দুই দেশের মধ্যে টানা চারদিন সংঘর্ষ চলেছে। গত ১০ মে ভারত এবং পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এই পর্বে আমেরিকা থেকে শুরু করে চিন, রাশিয়া, বিভিন্ন দেশ ভারত এবং পাকিস্তানকে উত্তেজনা প্রশমনের বার্তা দিয়েছিল। চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই আলাদা আলাদা করে পাক বিদেশমন্ত্রী দার এবং ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করকে সেই বার্তাও দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:
ভারত-পাক সামরিক অস্থিরতার সময় বিভিন্ন মহল চিনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। অনেকেই দাবি করেছিল, পাকিস্তানকে বিমান প্রতিরক্ষা এবং উপগ্রহ সহয়তা প্রদান করেছে চিন! তবে সেই দাবি নস্যাৎ করে বেজিং। এই আবহেই পাক বিদেশমন্ত্রীর চিন সফর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল। এই সফরে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াঙের সঙ্গেও বৈঠক করবেন পাক বিদেশমন্ত্রী। দারের চিন সফর নিয়ে মাও বলেন, ‘‘চিন এবং পাকিস্তান সব সময়ই কৌশলগত অংশীদার। চিন-পাকিস্তান সম্পর্কের উন্নয়নের ব্যাপারে পাক সরকার কতটা গুরুত্ব দেয়, তা সে দেশের বিদেশমন্ত্রীর সফর থেকেই স্পষ্ট।’’