বাড়িতেই লুকিয়ে হাজারো অসুখের কারণ! ছবি : এআই সহায়তায় প্রণীত।
বাড়িতে থাকলেই কি নিরাপদে থাকা যায়? দূষণ, বিষাক্ত পদার্থ থেকে দূরে থাকা যায়? যাঁরা নিয়মিত বাইরে বেরোচ্ছেন না, তাঁদের কি ধুলো-ধোঁয়া-জীবাণু থেকে রোগ হয় না? এক যাপন প্রশিক্ষক তথা পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, বাড়িতে এমন অনেক জিনিস নিয়মিত ভাবে ব্যবহার করা হয়, যাতে কমোডের সিটের থেকেও বেশি জীবাণু থাকে। কিংবা যা শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে শুরু করে হরমোনের সমস্যা এবং আরও নানা ধরনের রোগের কারণ হতে পারে।
দিল্লির ওই যাপনবিদের নাম লিমা মহাজন। তিনি বলছেন, বাড়িতে নিরাপদ ভেবে এমন অনেক জিনিসই নিয়মিত ব্যবহার করা হচ্ছে, যা অগোচরে শরীরের ভিতরে জীবাণুর সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। সেগুলি কী কী, তা-ও বলে দিয়েছেন ওই যাপন প্রশিক্ষক।
১। বাসন ধোয়ার স্পঞ্জ বা স্ক্রাব প্যাডে শৌচাগারের মেঝের থেকেও বেশি জীবাণু থাকতে পারে বলে জানাচ্ছেন লিমা। তিনি বলছেন ওই স্পঞ্জ প্রতি ৭-১০ দিন অন্তর বদলে ফেলা উচিত।
২। রান্নাঘরে টেবিল মোছার কাপড়েও থাকে ব্যাক্টেরিয়া। যা থেকে হাতে এবং হাত থেকে খাবারে জীবাণুর সংক্রমণ ঘটতে পারে। প্রতি বার ওই ধরনের কাপড় ব্যবহার করার পরে সাবান দিয়ে বিধি মেনে ভাল ভাবে হাত ধোয়া উচিত। শুধু তা-ই নয়, প্রতি বার ব্যবহারের তা রোদে ভাল ভাবে শুকিয়ে নেওয়াও দরকারি। তাতেও জীবাণু নষ্ট হয়ে যায়।
৩। পুরনো বালিশ থেকে শ্বাসের সমস্যা হতে পারে। লিমা জানাচ্ছেন, পুরনো তুলোয় ডাস্ট মাইট জমতে পারে। তা থেকেই সমস্যা হতে পারে শ্বাস-প্রশ্বাসের। সমস্যা এড়াতে প্রতি সপ্তাহে বালিশ রোদে দিন। ২-১ বছর অন্তর তুলো ভাল ভাবে ধুনিয়ে নিন।
৪। শ্বাসের সমস্যা হতে পারে নোনা ধরা দেওয়াল থেকেও। এ থেকে অ্যালার্জির সমস্যাও বাড়তে পারে। চেষ্টা করুন স্যাঁতসেঁতে দেওয়াল পরিষ্কার রাখতে, সেখানে রোদ পড়ার ব্যবস্থা করতে পারলে ভাল। তা না হলে নিয়মিত ভিনিগার বা জীবাণুরোধক তরল দিয়ে পরিষ্কার করা দরকার।
৫। কার্পেটেও থাকতে পারে ডাস্ট মাইট। শীতে ওই কার্পেট থেকে অ্যালার্জির সমস্যা বাড়তে পারে। তা থেকে জ্বর-সর্দি-কাশির মতো সমস্যাও হতে পারে। লিমার পরামর্শ, প্রতি মাসে ওই ধরনের কার্পেট রোদে দেওয়া দরকার। আর প্রতি সপ্তাহে ভ্যাক্যুম ক্লিনার দিয়ে ধুলো দূর করা দরকার।
৬। ফ্রিজে পরিষ্কার না করা সব্জি রাখলে তা থেকে ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে। পেটের সমস্যা হতে পারে।
৭। কালো স্তর উঠে যাওয়া ননস্টিক প্যান বা কড়াইও বিপজ্জনক। কারণ, তা বেশি গরম হলেই ক্ষতিকর রাসায়নিক নিঃসরণ ঘটায়। যা থেকে শরীরে নানা জটিল রোগ এমনকি, ক্যানসারও হতে পারে। তাই কালো স্তর উঠে গেলেই ওই প্যান ব্যবহার করা বন্ধ করুন।
৮। প্লাস্টিকের কৌটো বা বাসন বা জলের বোতল— এই ধরনের পাত্র গরম জিনিসের সংস্পর্শে এলেই তা থেকে ক্ষতিকর রাসায়নিক বেরোয়। যা শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। নানা রোগের কারণ হতে পারে। তাই প্লাস্টিকের বদলে কাচ বা স্টিলের পাত্র ব্যবহার করুন।
৯। স্নানের লুফাতে ছত্রাক জন্মানোর সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। যা থেকে ত্বকে সংক্রমণ হতে পারে। প্রতি দিন এবং প্রতি বার ব্যবহারের পরে লুফা রোদে শুকোনো উচিত। ৪ সপ্তাহ অন্তর তা বদলে ফেলতেও বলছেন লিমা।