Zohran Mamdani New Home Interior

নিউইয়র্কের মেয়র মামদানির ৮৯৮ কোটির ‘প্রাসাদ’টি কেমন? কতটা বিলাসের সুবিধা সেখানে?

‘প্রাসাদ’ যখন, তার ঠাঁটবাঁটও তেমনই হবে। ৮৯৮ কোটি টাকা মূল্যের ওই বাড়িতে ঠিক কতটা বদলাতে চলেছে মামদানির জীবন? এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:০২

ছবি : সংগৃহীত।

উত্তরণেই জীবনের মোক্ষ। সেই উত্তরণ নানা ধরনের হতে পারে। নিউ ইয়র্কের নব নির্বাচিত মেয়র জ়োহরান মামদানির ক্ষেত্রে নতুন পদমর্যাদার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বাসস্থানেরও উত্তরণ ঘটতে চলেছে। পুরনো এক কক্ষের ভাড়াবাড়িটি ছেড়ে তিনি নতুন বছরে সপরিবার এসে উঠবেন নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের এক সুসজ্জিত প্রাসাদ গ্রেসি ম্যানসনে। ‘প্রাসাদ’ যখন, তার ঠাঁটবাঁটও তেমনই হবে। ৮৯৮ কোটি টাকা মূল্যের ওই বাড়িতে ঠিক কতটা বদলাতে চলেছে মামদানির জীবন? এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।

Advertisement

ম্যানহাটনের ইয়র্কভিলের কার্ল শুর্জ় পার্কের ভিতর অনেকটা জায়গা নিয়ে তৈরি গ্রেসি ম্যানসন। হালকা মাখন হলুদ আর সাদা রঙের ছিমছাম রংমিলন্তি। কাচের বড় বড় পুরনো ইউরোপিয়ান কেতার জানলা। তাতে সবুজ রঙের খড়খড়ি। বাড়ির মাথায় চারটি ইঁটের চুল্লি দেখলে বোঝা যায় ভিতরে উষ্ণ আতিথেয়তায় কমতি হবে না কোনও।

নিউ ইয়র্কের নতুন মেয়র অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁর আগের বাড়ি, আগের পাড়াতেও উষ্ণতার কমতি ছিল না কোনও। সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে ঠিকানা বদলের খবর দিয়ে মামদানি লিখেছেন, ‘‘আমি আর আমার স্ত্রী রমা ওই এক কামরার ফ্ল্যাটে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে রান্না করা মিস করব। রাতে প্রতিবেশীদের সঙ্গে লিফ‌্‌টে প্রায় ঘুমোতে ঘুমোতে যাওয়া মিস করব। আমার অ্যাপার্টমেন্টের দেওয়ালে দেওয়ালে যে হাসি, উচ্চগ্রামের কথাবার্তা, গান স্পন্দন তুলত, তা-ও মিস করব।’’

তার বদলে তিনি গ্রেসি ম্যানসনে কী পেতে চলেছেন? ইতিহাস এবং ঐতিহ্যবাহী একটি বাড়ি। যা বহু দুর্মূল্য এবং দুষ্প্রাপ্য অন্দরসজ্জায় সুন্দর ভাবে সাজানো। একই সঙ্গে হাই এন্ড লিভিং বা উচ্চধারার জীবন যাপনের সবরকম সুযোগ সুবিধাও রয়েছে সেখানে।

১৭৯৯ সালে নিউ ইয়র্কের জাহাজ ব্যবসায়ী আর্চিবল্ড গ্রেসির তৈরি ওই প্রাসাদোপম বাড়িটি নিউ ইয়র্কের মেয়রের সরকারি নিবাস হিসাবেই ব্যবহৃত হয়। প্রতি বারই নিউ ইয়র্কের মেয়র হিসাবে যিনি নির্বাচিত হয়েছেন, তিনি সাজসজ্জায় কিছু না কিছু বদল এনেছেন। তবে বাড়ির মূল যে সাজ তাতে খুব বেশি পরিবর্তন আনা হয়নি।

যেমন ১০ হাজার বর্গফুটেরও বেশি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই দ্বিতল বাড়িতে ঢোকার দরজাটি হলুদ রঙের। সেটি দিয়ে প্রবেশ করলে দেখা যায় চকমেলানো সাদা-কালো ফ্লোরিং। তবে সেটি মার্বেলের নয়। শীতের দেশে কাঠের ফ্লোরিংয়ে ঘর গরম থাকে বেশি। আবার মার্বেলের নকশা দেখতে বেশি ভাল লাগে। তাই এখানে কাঠের মেঝেতেই দেওয়া হয়েছে মার্বেলের ফিনিশ। সাদা কালো দাবার বোর্ডের মতো নকশার পুরোটাই হাতে আঁকা। সে আঁকার নৈপুন্য এতটাই যে অভিজ্ঞ চোখও এক নজরে তফাত করতে পারবে না।

এটি গ্রেসি ম্যানসনের এন্ট্রেন্স লবি। এর পাশেই রয়েছে গ্রেসি ম্যানশনের গ্রন্থাগার। যার আপাদমস্তক ‘টিল ব্লু’ রঙে মোড়া। খানিকটা কালচে সমুদ্র নীল বললে রংটা বোঝা যায়। এ ঘরের দেওয়াল থেকে শুরু করে ফ্লোরিং সোফা এমনকি পর্দাতেও সেই রং। তার সঙ্গে রয়েছে মেহগনি রঙের বইয়ের আলমারি।

লাইব্রেরি পেরিয়ে যেতে হয় খাবার ঘরে। এ ঘরটির দেওয়াল সাজানো ফ্রেঞ্চ ওয়ালপেপারে। আর তাতে আঁকা সবুজ গাছপালা। ১৮০০সালে আঁকা এই ওয়ালপেপারের ছবি এতটাই প্রাণবন্ত যে এ ঘরে ঢুকলে হঠাৎ মনে হতে পারে বাগানেই এসে পড়েছেন। ঠিক মাঝখানে কাঠের বড় টেবিল। দশ জনের খাওয়ার জায়গা। মেঝের কার্পেটও ঘাসের মতোই সবুজ। তবে তাতে রয়েছে ফরাসি ধাঁচের কলকার নকশা।

গ্রেসি ম্যানসেনর আকর্ষণ এর বলরুমটিও। এটি দোতলায়। কাঠের ফ্লোরিংয়ের উপর লাল ম্যাপল পাতার রঙের কার্পেট পাতা। দেওয়ালের রঙে ক্লাসিক আকাশি আর সাদার বৈপরীত্য।

এ ঘরের মূল আকর্ষণ কালো কাঠের বড় পিয়ানো। মেয়রের বাসভবনে কোনও বড় মিটিং হলে বা পার্টি হলেও তার আয়োজন হয় এই বলরুমেই।

এ ছাড়াও গ্রেসি ম্যানসনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আরও অনেক ধরনের ঘর। যার একটি ইয়েলো পার্লার রুম। মূলত অতিথিদের নিয়ে বসার বা আড্ডা দেওয়ার ঘরই বলা যায় একে।

আছে পিচ রুম। এটিও বসার ঘরই। দেওয়ালের রং নামের মতোই পিচ রঙা।

ব্লু রুমটির দেওয়াল গাঢ় নীল রঙের। এ ঘরের অনেকটা জুড়ে রয়েছে বইয়ের আলমারি।

গ্রেসি ম্যানসনে আসা অতিথিদের থাকার জন্য যে ঘর রয়েছে সেটিও সুন্দর ভাবে সাজানো।

অতিথির ঘরের সঙ্গেই লাগোয়া স্নানের ঘরটিও। সেটির পুরনো ধাঁচে কোনও পরিবর্তন আনা হয়নি।

মেয়রের নতুন বাসস্থানের বেডরুমটি কেমন? তার ছবি অবশ্য প্রকাশ করা হয়নি। নিরাপত্তার কারণেই। তবে এক অন্দরসজ্জা বিষয়ক পত্রিকায় লেখা হয়েছে, ওই ঘরের আসবাব বাঁশের জিনিস দিয়ে তৈরি।

Advertisement
আরও পড়ুন