শীতে ঘন দই পাতার জন্য কী করবেন? ছবি: সংগৃহীত।
শীত বাড়লে দই পাতার কাজ কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। অনেক সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা রেখে দেখা যায়, দই জলঝরা হয়েছে অথবা একেবারেই জমেনি। ঠান্ডার কারণে দই জমার গতি কমে যায়। শীতকালে দুধ গরম থাকলেও তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হয়ে যায়। ফলে দইয়ের সাজ বা দম্বল ঠিক ভাবে কাজ করতে পারে না। গরমকালে দই জমতে পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টা লাগে, কিন্তু শীতে সময় লাগে প্রায় ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত।
আগেকার দিনে দিদিমা-ঠাকুরমা এবং মায়েরা নানাবিধ টোটকা প্রয়োগ করতেন। সাবেক এবং সাম্প্রতিক, দু’রকমের পন্থা নিয়ে আরও এক বার আলোচনা করে নেওয়া যাক। আপনার যেটি সুবিধা, সেটি প্রয়োগ করে দেখতে পারেন।
শীতে দই জমাট বাঁধতেই চায় না যেন। ছবি: সংগৃহীত।
১. শীতে দই জমানোর সবচেয়ে পুরনো উপায় হল, ক্যাসারোল ব্যবহার করা। এই ধরনের পাত্র দীর্ঘ ক্ষণ তাপ ধরে রাখতে পারে, তাই দুধের উষ্ণতা নষ্ট হয় না। একটি কাচের পাত্রে, বা যে পাত্রে দই পাতেন, সেটি নিয়ে তাতে দই পাতার জন্য বসিয়ে দিন। অন্য দিকে ক্যাসারোলের ভিতরে হালকা গরম জল ঢেলে পাত্রটি তার মধ্যে রেখে ক্যাসারোল ঢাকা দিয়ে দিন। এতে দই দ্রুত জমবে।
২. আরও একটি কার্যকরী এবং সহজ পন্থা রয়েছে। যার জন্য কেবল একটি উপকরণের প্রয়োজন, তা হল গুঁড়ো দুধ। প্রথমে দুধ ফোটাতে হবে। একটু ঠান্ডা হলে এক-দু’চামচ গুঁড়ো দুধ মিশিয়ে নিতে হবে। তার পর এক চামচ দইয়ের দম্বল মিশিয়ে ভাল করে ঘেঁটে ক্যাসারোলে ঢেলে ঢাকা দিয়ে রেখে দিন। দেখবেন, যেন একচুলও না নড়ানো হয়।
৩. আর এক পদ্ধতিতে দই পেতে দেখতে পারেন। শীতে থকথকে, ঘন দইের জন্য কাঁচালঙ্কা ব্যবহারের টোটকা শিখে নিন। দুধ ফোটানোর পর অল্প ঠান্ডা হতেই দইয়ের সাজ বা দম্বল অথবা কালচার মিশিয়ে নিন। তার মধ্যে ডাঁটি-সহ একটি কাঁচালঙ্কা (জলে ধুয়ে শুকিয়ে নেওয়া) ফেলে দিতে পারেন। এতে দই ভাল ভাবে জমতে পারে। চাইলে পাত্রটিকে একটি কাপড়ে জড়িয়েও রাখতে পারেন। এতে উষ্ণতা বজায় থাকবে।
৪. এক ধরনের বিশেষ বৈদ্যুতিক যন্ত্র রয়েছে, যা বিশেষ ভাবে দই পাতার জন্যই বানানো হয়েছে। বড়সড় দোকানে বা বাজারে অথবা অনলাইনে সেটি কিনতে পাওয়া যায়। দেখতে একটি ক্যাসারোলের মতোই। যার ভিতরে একটি স্টিলের বাটি থাকে। এটির ভিতরে দই পাততে হবে। তার পর সেটিকে ঢাকা দিয়ে তার সঙ্গে সংযুক্ত প্লাগটি চালিয়ে দিতে হবে। প্রায় ৫-৬ ঘণ্টা বা তার বেশি ক্ষণ অপেক্ষা করার পর দই জমে যাবে। কিন্তু এই যন্ত্র ব্যবহার করার পর অনেকেই অভিযোগ করেন, এতেও না কি জলঝরা দই জমে।
৫. কেউ কেউ আবার মাইক্রোঅয়েভ অভেন ব্যবহার করে দই পাতেন। কাচের পাত্রে দই পেতে তার পর সেটিকে খুব সাবধানে মাইক্রোঅয়েভের ভিতরে রেখে দেন। সারা রাত পাত্র কেউ না সরালে বা নড়ালে সকালে দই জমে যায়। প্রয়োজনে পাত্র বসানোর আগে মিনিটখানেকের জন্য যন্ত্রটি চালিয়ে গরম করে নেন অনেকেই।