Diabetes in Dogs

মানুষের মতো ডায়াবিটিস হয় কুকুরেরও, পোষ্যের কোন কোন লক্ষণ দেখে সতর্ক হতে হবে?

কুকুরেরও ডায়াবিটিস হতে পারে, এমন ধারণা না থাকায় অনেকেই লক্ষণগুলিকে সাধারণ ভেবে এড়িয়ে যান। পরে গিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। তাই গোড়া থেকেই প্রতিটি লক্ষণ চিনে নিয়ে সঠিক যত্ন নিতে হবে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:২৩
Early signs and symptoms of diabetes in dogs every pet owner must watch for

পোষা কুকুরের সুগার হয়নি তো, কী কী লক্ষণ এড়িয়ে যান অনেকেই? ছবি: ফ্রিপিক।

পোষ্য ঝিমিয়ে পড়ছে, তার ওজন কমছে, দেখলে চিন্তা হয়ই। যদি দেখেন, পোষা কুকুর বারে বারে জল খেতে চাইছে, খিদে অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়েছে, তা হলে বুঝতে হবে, সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে। প্রথম বার যাঁরা কুকুর পুষেছেন, তাঁদের কাছে এই সব লক্ষণ নতুনই মনে হবে। তবে আতঙ্কে না ভুগে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি। মানুষের মতো ডায়াবিটিসে ভোগে কুকুরেরাও। উপসর্গও অনেকটা একই রকম দেখা যায়। কুকুরেরও ডায়াবিটিস হতে পারে, এমন ধারণা না থাকায় অনেকেই লক্ষণগুলিকে সাধারণ ভেবে এড়িয়ে যান। পরে গিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। তাই গোড়া থেকেই প্রতিটি লক্ষণ চিনে নিয়ে সঠিক যত্ন নিতে হবে।

Advertisement

ডায়াবিটিসের কী কী লক্ষণ দেখা দেয় কুকুরের?

বারে বারে জল পিপাসা

বারে বারে জল খেতে চাইবে পোষ্য। এই সমস্যাকে বলে ‘পলিডিপসিয়া’। রক্তে শর্করা বাড়লেই শরীরে জলের ঘাটতি হতে থাকে। খেয়াল করবেন, পোষা কুকুর বেশির ভাগ সময়েই জলের পাত্রটির কাছে রয়েছে কি না বা রাতে বার বার উঠে জল খাচ্ছে কি না। ঘন ঘন মূত্রত্যাগও করবে।

খিদে বেড়ে যাবে

খাবার খাওয়ার কিছু সময়ের মধ্যে ফের খেতে চাইবে। যে পরিমাণ খাবার খেত এত দিন, তার চেয়ে বেশি খাবে। ডায়াবিটিসের এটিও একটি লক্ষণ। এই সমস্যাকে বলে ‘পলিফ্যাগিয়া’। রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়লে ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমে যায়, ফলে শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপগুলিতে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়।

হঠাৎ করেই ওজন কমবে

ডায়াবিটিস হলে ওজন দ্রুত হারে কমতে থাকবে। যদি দেখেন, পোষা কুকুরের ওজন কমছে, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

ঘোলাটে চোখ

ডায়াবিটিসে শরীরের যে অঙ্গটির ক্ষতি বেশি হয়, তা হল চোখ। রক্তে শর্করা বেড়ে গেলে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হবে, চোখ ঘোলাটে দেখাবে। অনেক কুকুরের চোখে ছানি পড়ে যায়, চোখ থেকে জল পড়তে থাকে।

খসখসে ত্বক, মাঝেমধ্যেই বমি

চামড়া শুকোতে থাকবে। লোম ঝরার লক্ষণ দেখা দিতে পারে, র‌্যাশও বেরোতে পারে। খেয়াল করবেন, পোষা কুকুর কিছু খাওয়ার পরেই বমি করছে কি না। সাধারণত ডায়াবিটিসের কারণে ‘ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস’ হয় কুকুরের। শরীর যখন গ্লুকোজ় পুড়িয়ে শক্তি তৈরি করতে পারে না, তখন শরীরে জমা মেদ ভাঙতে শুরু করে। ফলে কিটোন তৈরি হয়, যা রক্তে মিশে যায়। এই বর্জ্যের কারণেই বমি ভাব, অতিরিক্ত ক্লান্তি, শরীরে জলের ঘাটতি হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। চিকিৎসা সঠিক সময়ে না হলে এই সমস্যা প্রাণঘাতীও হতে পারে।

কী ভাবে যত্ন নেবেন?

লক্ষণ ধরা পড়লেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। পোষ্যদের জন্য গ্লুকোজ় মনিটর যে কোনও অনলাইন শপিং সাইটে পাওয়া যাবে। সেটি কিনে নিতে পারেন। গায়ে লাগিয়ে রাখলেই রক্তে শর্করার মাত্রা কখন কেমন, সেই ডেটা জানা যাবে। মোবাইল অ্যাপের সঙ্গে ডিভাইসটি লিঙ্ক করে রাখলেই ডেটা দেখা যাবে।

কুকুরের খাদ্যতালিকায় এই সময় বেশি পরিমাণে ফাইবার জাতীয় খাবার থাকা উচিত। পাশাপাশি, পোষ্যটির ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাও জরুরি। এর জন্য তাকে নিয়ম করে ব্যায়াম করানো প্রয়োজন। গাজর, ব্রকোলির মতো উচ্চ ফাইবার ও কম ফ্যাটের খাবার দিতে হবে। প্যাকেটের খাবার দেওয়া চলবে না। পোষ্যের ওজন, প্রজাতি দেখে ডায়েট চিকিৎসকই ঠিক করে দেবেন।

কোনও মাঠে নিয়ে গিয়ে পোষ্যকে রোজ খেলার সুযোগ করে দিন। বাড়িতেও সময় দিন আদরের পোষ্যকে। সব সময়ে খেলাধুলার মধ্যে রাখুন।

Advertisement
আরও পড়ুন