বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন ইভ জোবস। চলতি সপ্তাহেই দীর্ঘ দিনের প্রেমিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছেন অ্যাপ্লের সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জোবসের কন্যা। তেমনটাই উঠে এসেছে সংবাদমাধ্যম ‘নিউইয়র্ক পোস্ট’-এর প্রতিবেদনে।
ওয়াকিবহাল মহলের এক জন সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, পেশায় মডেল ইভের বিয়েতে খরচ হচ্ছে ৬৭ লক্ষ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৫৮ কোটি টাকা। বিয়েটিকে ‘বহু কোটি টাকার রূপকথা’ বলেও বর্ণনা করেছে ওই সূত্র।
কার সঙ্গে বিয়ে হচ্ছে জোবস-কন্যার? জানা গিয়েছে, অলিম্পিকে স্বর্ণপদকজয়ী অশ্বারোহী হ্যারি চার্লসের সঙ্গে চার হাত এক হতে চলেছে ইভের। বয়সে ইভের চেয়ে হ্যারি এক বছরের ছোট।
স্টিভ জোবসের কনিষ্ঠ কন্যা ইভ। ১৯৯৮ সালের ৯ জুলাই ক্যালিফর্নিয়ায় জন্ম তাঁর। দিদির নাম এরিন এবং দাদার নাম রিড। লিসা নামে এক সৎবোনও রয়েছে তাঁর।
২৭ বছর বয়সি ইভ একজন প্রতিষ্ঠিত অশ্বারোহী। পড়াশোনা করেছেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ২০২১ সালে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং সমাজ (সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি) বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
মডেলিং দুনিয়ায় পা রেখেই চমকে দিয়েছিলেন স্টিভ-তনয়া। ২০২১ সালে প্যারিসে ‘কোপের্নি’ সংস্থার হাত ধরে মডেলিং দুনিয়ায় পা রেখেছিলেন স্টিভ-কন্যা।
অনেকে নামীদামি ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন ইভ। বিখ্যাত ব্যাগ প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘লুই ভিত্তোঁ’র মডেল হিসাবেও কাজ করেছেন তিনি।
মডেলিংয়ের পাশাপাশি অশ্বারোহী হিসাবেও খ্যাতি রয়েছে ইভের। এক সময় বিশ্বের ২৫ বছরের কম বয়সি ১০০০ সেরা অশ্বারোহীর মধ্যে পঞ্চম স্থানে ছিলেন তিনি।
মাত্র ছ’বছর বয়সে ঘোড়ার পিঠে চড়ে দৌড় শুরু করেছিলেন জোবস-তনয়া। ঘোড়ায় চড়ার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মেয়ে যাতে পড়াশোনায় মন দেয়, সে দিকে বরাবরই সজাগ দৃষ্টি ছিল ইভের বাবা-মায়ের।
তবে, গ্রীষ্মাবকাশ ও বসন্তের ছুটির সময় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য বাবা-মায়ের থেকে ছাড়পত্র পেতেন ইভ। ঘোড়দৌড়ের প্রতিযোগিতা বেশ কঠিন। তাই সঠিক প্রশিক্ষণ নিতে হত তাঁকে। করতে হত কঠোর পরিশ্রম।
ইভ যেখানে অশ্বারোহণের প্রশিক্ষণ নেন, সেই জায়গার মূল্য দেড় কোটি ডলার। তিনি প্রশিক্ষণ শুরু করার পর তাঁর মা ওই জায়গা কিনে নিয়েছিলেন।
তবে মডেল হবেন, সে কথা নাকি কখনও কল্পনাও করেননি ইভ। এক সাক্ষাৎকারে তিনি এক বার বলেছিলেন, ‘‘আগে কখনওই মডেলিং করিনি। তবে প্রস্তাব পেয়ে ঘাবড়ে যাইনি। আমার মনে হয়েছিল, কেন নয়? এই প্রস্তাব আমায় আকৃষ্ট করেছিল।’’
২০১১ সালে প্রয়াত হন স্টিভ জোবস। মাত্র ১৩ বছর বয়সে পিতৃহারা হন ইভ। কিশোরীবেলায় তাঁর পথনির্দেশকের ভূমিকা পালন করেছিলেন ইভের মা লরেন পাওয়েল জোবস। কী ভাবে আগামীর পথে চলতে হবে, সে ব্যাপারে যাবতীয় পরামর্শ দেন তাঁর মা।
স্বর্ণপদকজয়ী অশ্বারোহী হ্যারির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চললেও এক সময় হ্যারি হাডসন নামে এক সঙ্গীতশিল্পীর সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল স্টিভ-কন্যার।
স্টিভ জোবসের কন্যার সম্পত্তির পরিমাণও নেহাত কম না। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, ইভের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ৫ থেকে ১০ লক্ষ ডলারের মধ্যে।
অন্য দিকে, ইভের মা লরেন ২১৭০ কোটি ডলারের মালিক। যদিও লরেন স্পষ্ট করেছেন, সম্পত্তি সন্তানদের দেবেন না তিনি। জানিয়েছেন, সন্তানেরা যাতে স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারে, তার জন্যই তিনি সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ছবি: সংগৃহীত।