IPL Auction 2026

আইপিএলে নতুন দলের থেকে ৮ কোটি ৬০ লক্ষ পেতেই মধুচন্দ্রিমা পিছিয়ে দিলেন ক্রিকেটার! বোর্ডের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছে পুরনো দল

প্রথমে জানা গিয়েছিল, মাত্র চারটি ম্যাচ খেলতে পারবেন বিদেশি ক্রিকেটার। কিন্তু নিলামে ৮ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা পেতেই নাকি সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেছেন তিনি। ফলে বিতর্ক আরও বেড়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:৪১
cricket

আইপিএল নিলামে পঞ্জাব কিংসের টেবিল। —ফাইল চিত্র।

আইপিএলের নিলামের পর বিতর্কের কেন্দ্রে জশ ইংলিস। প্রথমে জানা গিয়েছিল, মাত্র চারটি ম্যাচ খেলতে পারবেন বিদেশি ক্রিকেটার। ফলে তাঁকে ধরে রাখেনি পঞ্জাব কিংস। কিন্তু নিলামে ৮ কোটি ৬০ লক্ষ টাকায় তাঁকে কিনেছে লখনউ সুপার জায়ান্টস। এত টাকা পাওয়ার পর নাকি সিদ্ধান্ত বদলে

Advertisement

ফেলেছেন ইংলিস। ফলে বিতর্ক আরও বেড়েছে। জানা গিয়েছে, ইংলিসের বিরুদ্ধে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে অভিযোগ দায়ের করতে পারে পঞ্জাব।

‘ক্রিকবাজ়’-এর একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, পঞ্জাবের কোচ রিকি পন্টিংয়ের তুলনায় লখনউ সুপার জায়ান্টসের কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টরির সঙ্গে সম্পর্ক ভাল ইংলিসের। ফলে তিনি আইপিএলে কতগুলি ম্যাচ খেলতে পারেন, সেই তথ্য তাঁদের কাছে ছিল। সেই কারণেই এই দুই দল ইংলিসকে নিতে ঝাঁপিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ৮ কোটি ৬০ লক্ষ টাকায় বাজিমাত করে লখনউ।

প্রশ্ন উঠছে, মাত্র চারটি ম্যাচের জন্য কেন কোনও ক্রিকেটারকে ৮ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা দেবে লখনউ? ইংলিসের নিলামের পর অবাক হয়ে গিয়েছিলেন এবি ডিভিলিয়ার্স। তিনি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বলেন, “আমি জীবনে এ রকম নিলাম দেখিনি। ও তো শুধু চারটে ম্যাচ খেলবে। তার জন্য লখনউ ৮ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা খরচ করল। আমার মনে হয় না, ও এত টাকা পাওয়ার মতো ক্রিকেটার। জনি বেয়ারস্টো, ডেভন কনওয়ের মতো ক্রিকেটারেরা গোটা মরসুম খেলতে পারত। অথচ ওদের কেউ নিল না। লখনউ এর থেকে ভাল সিদ্ধান্ত নিতে পারত।”

তবে কি ভুল করল লখনউ? তাদের সঙ্গে ইংলিসকে কেনার লড়াইয়ে থাকা সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বোলিং কোচ বরুণ অ্যারনের একটি মন্তব্য ছবিটা বদলে দিয়েছে। তিনি বলেন, “ও জানিয়েছিল, ব্যক্তিগত কারণে পুরো মরসুম খেলতে পারবে না। কিন্তু সেটা তো বদলাতেও পারে। কে, কখন সিদ্ধান্ত বদলাবে তা কেউ জানে না। ভেট্টরির সঙ্গে ওর সম্পর্ক খুব ভাল। ভেট্টরির কথা শুনে ও হয়তো আরও কয়েকটা ম্যাচ খেলত। তাই আমরা ঝাঁপিয়েছিলাম।”

তা হলে কি লখনউ তাঁকে কেনার পরেই সিদ্ধান্ত বদলাবেন ইংলিস। তেমন ইঙ্গিতই পাওয়া গিয়েছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, এত টাকা পাওয়ার পর ইংলিস আরও কয়েকটি ম্যাচ খেলবেন। তিনি আইপিএলের শুরু থেকেই আসবেন। ১৮ এপ্রিল ইংলিসের বিয়ে। সেই সময় তিনি দেশে ফিরবেন। তার পর আবার আইপিএলে ফিরবেন। মধুচন্দ্রিমা পিছিয়ে দিয়েছেন তিনি।

ইংলিস অবশ্যে সেটা এখনও নিশ্চিত করেননি। তবে আইপিএলে দল পাওয়ায় অবাক হয়ে গিয়েছেন তিনি নিজেই। ‘এবিসি স্পোর্ট’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি জানতাম, পুরো মরসুম খেলতে পারব না। এপ্রিলে আমার বিয়ে। সেই কথা বোর্ডকে জানিয়েছিলাম। সেই কারণেই আমার ন্যূনতম মূল্য বাড়িয়ে ২ কোটি করেছিলাম। ভেবেছিলাম, আমাকে কেউ কিনবে না। তাই নিলাম দেখিনি। অ্যাশেজ় থাকায় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। পরের দিন খবর পেলাম এত টাকা পেয়েছি। আমি নিজেই অবাক হয়েছি।”

ইংলিস পুরো আইপিএলে ক’টা ম্যাচ খেলবেন তা এখনও জানা না গেলেও বিষয়টি হালকা ভাবে নিচ্ছে না পঞ্জাব। বোর্ডের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে পারে তারা। আগেই ইংলিসকে নিশানা করেছেন পঞ্জাবের অন্যতম মালিক নেস ওয়াদিয়া। তিনি বলেন, “আমরা জশকে ছাড়তে চাইনি। কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্তে ও বলল যে খেলতে পারবে না। ও যেটা করেছে সেটা অপেশাদারিত্ব। একজন ক্রিকেটার হিসাবে ওর কাছে এটা আশা করিনি। ও যে খেলতে পারবে না, সেটা ওর আগেই জানানো উচিত ছিল। তা হলে আমাদের পরিকল্পনা করতে সুবিধা হত।”

ওয়াদিয়া জানিয়েছেন, প্রতিটি দল কাদের ধরে রেখেছে তা জানানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় দিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। সকলেই তা জানতেন। কিন্তু ইংলিস আগে জানাননি যে, তিনি খেলতে পারবেন না। ওয়াদিয়া বলেন, “আমি নিশ্চিত, প্রত্যেকে জানত কবে নাম জমা দিতে হবে। কিন্তু ও নাম জমা দেওয়ার ৪৫ মিনিট আগে ফোন করে বলল, বিয়ে করতে চলেছে। আপাতত ছুটি কাটাতে চায়। তাই খেলতে পারবে না। আমাদের প্রধান কোচ রিকি পন্টিং জানাল, ওকে ধরে রেখে লাভ নেই। তাই ছেড়ে দিলাম।”

ইংলিস নাকি জানিয়েছিলেন, এ বারের নিলামে নামবেন না তিনি। তবে শেষ মুহূর্তে নিলামে নাম লেখান। নিলামে পঞ্জাব ইংলিসের জন্য লড়েনি। তার পরেও ৮ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা পেয়েছেন তিনি। শোনা যাচ্ছে, আইপিএলে চার ম্যাচের বেশি খেলবেন অসি ব্যাটার। সেই কারণে কি ক্ষোভ আরও বেড়েছে পঞ্জাবের? সেই কারণেই কি বোর্ডের কাছে অভিযোগ করতে চলেছে তারা? কারণ যা-ই হোক, আইপিএলের নিলামের পর থেকে ইংলিসকে নিয়ে বিতর্ক বেড়েই চলেছে।

Advertisement
আরও পড়ুন