(উপরে) আইপিএল ট্রফি নিয়ে রজত পাটীদার এবং পদপিষ্ট হয়ে আহত সমর্থক (নীচে)। ছবি: পিটিআই।
দুর্ঘটনার জেরে দ্রুত বন্ধ করে দিতে হল বিরাট কোহলিদের আইপিএল জয়ের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। ১৮ বছরের অপেক্ষার অবসানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক ছিল কর্নাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনও। স্টেডিয়ামের বাইরে পদপিষ্ট হয়ে ১১ জনের মৃত্যু ও ৩৩ জন আহত হওয়ার পরও চলে কোহলিদের অনুষ্ঠান। কেন এমন ঘটল? ব্যাখ্যা দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।
বুধবার বেঙ্গালুরুতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার দায় কার, তা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়েছে। রাজনীতির মধ্যে ঢুকতে চায়নি বিসিসিআই এবং আইপিএল কর্তৃপক্ষ। দুর্ঘটনার খবর গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ার পরও কেন স্টেডিয়ামের ভিতর অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়া হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বেঙ্গালুরু কর্তৃপক্ষের পাশেই দাঁড়িয়েছেন বোর্ড কর্তারা। আইপিএল চেয়ারম্যান অরুণ ধুমল বলেছেন, ‘‘অত্যন্ত দুঃখজনক। স্টেডিয়ামের বাইরের ঘটনা সম্পর্কে আরসিবি কর্তৃপক্ষ কিছু জানতেন না। তাঁরা জানার পরই অনুষ্ঠান ছোট করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আমরাও বিজয় উৎসব বন্ধ করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। কর্নাটক সরকারের কাছে পরিস্থিতি সম্পর্কে খবর ছিল কিনা, বলতে পারব না।’’
বিসিসিআই সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লর বক্তব্য, ‘‘মর্মান্তিক। ঠিক কী কারণে এমন ঘটল, তা আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। আমরা কাউকে দোষারোপ করতে চাই না। কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থার কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর বোঝা যাবে।’’ বোর্ড সচিব দেবজিৎ শইকীয়া বলেছেন, ‘‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এটা জনপ্রিয়তার নেতিবাচক দিক। ভক্তেরা প্রিয় ক্রিকেটারদের দেখার জন্য পাগলের মতো আচরণ করেন। আরসিবির আইপিএল জয়ের উৎসবের আয়োজন আরও ভাল ভাবে করা উচিত ছিল আয়োজকদের। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’’ শইকীয়া আরও বলেছেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে বিসিসিআইয়ের কোনও যোগ নেই। তবু এর থেকে শিক্ষা নিতে হবে। নিশ্চয়ই কিছু খামতি ছিল।’’
বুধবারের অনুষ্ঠানের জন্য কর্নাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে পাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল আরসিবি ভক্তদের জন্য। বলা হয়, আগে আসার ভিত্তিতে পাস দেওয়া হবে। তাই এ দিন সকাল থেকেই চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন উচ্ছ্বসিত ভক্তেরা। কর্নাটক প্রশাসনের ধারণার থেকে অনেক বেশি মানুষের জমায়েত তৈরি হয়ে যায় দুপুরের মধ্যেই। নির্দিষ্ট সময় স্টেডিয়ামের গেট খুলতেই পাস নেওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু করে দেন বহু মানুষ। এ সময় পরিস্থিতি সামলাতে লাঠি চার্জ করে পুলিশ। তাতে উল্টে আরও জটিল হয় পরিস্থিতি। আরসিবি ভক্তেরা বিভিন্ন দিকে ছুটে পালানোর চেষ্টা করতে শুরু করেন। তাতেই ঘটে পদপিষ্টের ঘটনা।
বেঙ্গালুরুর এই ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৩৩ জন। কয়েক জনের আঘাত গুরুতর বলে জানা গিয়েছে। ভিড়ের মধ্যে কয়েক জন অসুস্থও হয়ে পড়েন।