ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীর। ছবি: সমাজমাধ্যম।
গুয়াহাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে চুনকাম হওয়ার পর সরাসরি ভারতীয় বোর্ডের দিকে আঙুল তুললেন গৌতম গম্ভীর। তাঁর মতে, টেস্ট ক্রিকেটকে সঠিক ভাবে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে না। টেস্ট সিরিজ় শুরুর আগে প্রস্তুতির জন্য সময় চেয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, সকলকে অংশ নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ়ের পরেই ভারত চলে যায় অস্ট্রেলিয়ায়। সেখান থেকে সীমিত ওভারের সিরিজ় খেলে ফেরার চার দিনের মধ্যে নামতে হয়েছে কলকাতা টেস্টে। ফলে প্রস্তুতির সময়ই পাওয়া যায়নি। গম্ভীর বলেছেন, “সূচি তো একটা সমস্যা বটেই। ভাবুন, কলকাতায় টেস্ট খেলার তিন দিন আগে আমরা অস্ট্রেলিয়ায় ছিলাম। টেস্ট দলের সঙ্গে দু’দিন কাটানোর সময় পেয়েছি। তবে এটা কোনও অজুহাত নয়। মাঝেসাঝে এই বিষয়টাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। দুটো সিরিজ়ের মাঝে সময় থাকা উচিত, যাতে নির্দিষ্ট দক্ষতায় শান দেওয়ার সময় পাওয়া যায়।”
সামগ্রিক ভাবে টেস্ট ক্রিকেটেরই উন্নতি চান গম্ভীর। বলেছেন, “টেস্ট ক্রিকেটকে আরও প্রাধান্য দিতে হবে, যদি আমরা সত্যিই এই ফরম্যাটটা নিয়ে ভেবে থাকি। প্রত্যেককেই অংশ নিতে হবে। যদি আমরা চাই ভারতে টেস্ট ক্রিকেট আরও জনপ্রিয় হোক, তা হলে সকলের প্রচেষ্টা দরকার। শুধু ক্রিকেটার বা সাপোর্ট স্টাফদের দোষ দিলে চলবে না। আমরা কখনওই সব জিনিস ধামাচাপা দিতে চাই না। সাদা বলের সিরিজ় শুরু হোক। সেখানে সাফল্য পেলে আপনি রাতারাতি ভুলে যাবেন লাল বলের ক্রিকেটে কী হয়েছিল। এটা কখনওই হওয়া উচিত নয়।”
ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় টেস্টের পঞ্চম দিনের স্কোরকার্ড।
প্রথম ইনিংসে খারাপ শট খেলে আউট হয়েছিলেন ধ্রুব জুরেল এবং ঋষভ পন্থ। দ্বিতীয় ইনিংসে সাইমন হারমারের সামনে কেউই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি। ভবিষ্যতে দলে কী রকম ক্রিকেটার চান সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন গম্ভীর। গম্ভীরের সংযোজন, “লাল বলের ক্রিকেটে আলাদা দক্ষতা থাকতে হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, দৃঢ় চরিত্রের ক্রিকেটার দরকার। সবচেয়ে দক্ষ বা জাঁকজমকপূর্ণ খেলোয়াড় না হলেও চলবে। কিন্তু কম দক্ষতা থাকা কঠিন চরিত্রের ক্রিকেটার যে কোনও পরিবেশে মানানসই।”
ভারতীয় ক্রিকেটে একের পর এক ধসের নেপথ্যে মানসিক বা টেকনিক্যাল, কোন বিষয়টি দায়ী? গম্ভীরের মতে, দলের অনেক ক্রিকেটারই পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলার জন্য এখনও তৈরি নন। ভারতের কোচ বলেছেন, “সবার আগে যত্ন দরকার। সাজঘর এবং দলের জন্য আপনার যত্ন কতটা, সেটাই আসল। দায়বদ্ধতা এবং ম্যাচের পরিস্থিতি কখনও হাতে ধরে শেখানো যায় না। আপনি দক্ষতা নিয়ে কথা বলতে পারেন, কাজ করতে পারেন, মানসিক বিষয়ের খেয়াল রাখতে পারেন। কিন্তু মাঠে নামলে নিজের আগে দলকে রাখতে হবে। যদি কেউ ভাবে আমি এ ভাবেই খেলি, আমার বিকল্প পরিকল্পনা নেই, তা হলে এ রকম হবেই। দায়বদ্ধতা দরকার। তার চেয়েও বেশি দরকার যত্ন। ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতি আপনি কতটা যত্নবান, সেটা মাঠে নেমে দেখাতে হবে।”