আকাশদীপের উচ্ছ্বাস। ছবি: পিটিআই।
এজবাস্টন টেস্টে জসপ্রীত বুমরাহের জায়গায় খেলানো হচ্ছে তাঁকে। তবে কেউই বুঝতে পারেননি গোটা টেস্টে এত ভাল বল করবেন আকাশদীপ। বাংলার জোরে বোলারকে খেলতে গিয়ে শুরু থেকেই বিপাকে ইংল্যান্ড। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ছয় উইকেট নিয়েছেন তিনি। সেই আকাশদীপের ক্রিকেট খেলা শুরু হয়েছিল বাবা-মাকে মিথ্যা কথা বলে।
বিহারের সাসারামের ছেলে আকাশদীপ। সেই রাজ্যে ক্রিকেটীয় পরিকাঠামো না থাকায় চলে এসেছিলেন কলকাতায়। ক্লাব ক্রিকেটে খেলার পর বাংলার হয়ে রঞ্জিতে ভাল খেলে আইপিএলের চুক্তি আদায় করেছেন। সেখানেও ভাল খেলে ঢুকে গিয়েছেন জাতীয় দলে। লাল বলে অন্য রূপের আকাশদীপকে দেখা যাচ্ছে ইংল্যান্ড সিরিজ়ে।
পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনের খেলা শেষে ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার চেতেশ্বর পুজারাকে এক সাক্ষাৎকারে আকাশদীপ বলেন, “যখন ক্রিকেট খেলা শুরু করি সময় বাবা-মা জানত না। ওদের বলিনি। একটা প্রতিযোগিতায় খেলতে বেঙ্গালুরু যাওয়ার সময় বাবা-মাকে মিথ্যা কথা বলে গিয়েছিলাম। বলেছিলাম, কাজ করতে যাচ্ছি। ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছি বলিনি।”
কেন মিথ্যা বলেছিলেন সেটাও জানিয়েছেন আকাশদীপ। তাঁর কথায়, “আসলে আমি বিহারের ছেলে। সেখানে ক্রিকেটের অতটা চল নেই। তাই সত্যি কথা বললে কোনও ভাবেই বাবা-মা বুঝত না। আপত্তি করত। ওদের খেলাধুলো নিয়ে উৎসাহও ছিল না। তাই সত্যি কথা বলিনি। আইপিএলে সুযোগ পাওয়ার পর ওরা বুঝল যে, ক্রিকেট খেলাটা ঠিক কী এবং ক্রিকেট খেলেও টাকা রোজগার করা যেতে পারে।”
ভারতের হয়ে আকাশদীপের অভিষেক হয়েছিল এই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেই। গত বছর রাঁচী টেস্টে। বছরের শেষের দিকে অস্ট্রেলিয়াতেও দু’টি টেস্ট খেলেছিলেন। ইংল্যান্ড সফর এই প্রথম। আকাশদীপ স্বীকার করলেন, ইংল্যান্ডে গিয়ে বোকা বনে গিয়েছেন। তাঁর কথায়, “ইংল্যান্ডে আসার আগে সবাই বলেছিল, এই দেশটা জোরে বোলারদের কাছে স্বর্গ। বল সুইং করবে, পিচে ঘাস থাকবে। মেঘলা আকাশের নীচে বল করে মজা পাওয়া যাবে। তবে এখানে এসে আমি ধোঁকা খেয়ে গিয়েছিলাম পিচ দেখে। যা শুনেছি তার কিছুই দেখছি না।”
পরিশ্রম করলেও নিয়মিত সুযোগ পান না আকাশদীপ। তখন কী করেন? পুজারার প্রশ্নে বাংলার পেসারের উত্তর, “সুযোগ না পেলে খেলার দিকে নজর রাখি। ম্যাচের পরিস্থিতি বিচার করি। নিজেকে ম্যাচ ফিট রাখার চেষ্টা করি।”
জোরে বোলিংয়ের জন্য প্রিয় বাইক চালানো ছেড়ে দিতে হয়েছে আকাশদীপকে। নিজেই সে কথা ফাঁস করে বলেছেন, “বাইক চড়তে খুব ভালবাসতাম। জোরে বোলার হওয়ার সময় বুঝলাম শরীরটাই আসল। শরীর ঠিক রাখতে হবে। তখন থেকে বাইক চালানো ছেড়ে দিয়েছি। আর বাইক চড়িনি।”