দ্বিশতরানের পর জাস্টিন গ্রিভস। ছবি: এক্স।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে ৫৩১ রানের লক্ষ্য দিয়েও ঘরের মাঠে টেস্ট জিততে পারল না নিউ জ়িল্যান্ড! জাস্টিন গ্রিভসের ২০২ রানের অপরাজিত ইনিংস জিততে দিল না কিউয়িদের। কেমার কোচের ৫৮ রানের অপরাজিত ইনিংসের কথাও বলতে হবে। সপ্তম উইকেটের জুটিতে ৬৮.১ ওভারে ১৮০ রান তুললেন দুই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার। শাই হোপের ১৪০ রানের ইনিংসও হতাশ করে তোলে কিউয়িদের। ম্যাচ শেষ হওয়ার সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের রান ছিল ৬ উইকেটে ৪৫৭। প্রায় দু’দিন ধরে ব্যাট করে এই ড্রয়ের ফলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম পয়েন্ট পেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ়।
প্রথম ইনিংসে নিউ জ়িল্যান্ড ২৩১ রান করার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ় করেছিল ১৬৭ রান। ৬৪ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছিলেন টম লাথামেরা। দ্বিতীয় ইনিংসে নিউ জ়িল্যান্ড ৮ উইকেটে ৪৬৬ রান তুলে ডিক্লেয়ার করে দেয়। লাথাম করেন ১৪৫ রান। ১৭৬ রানের ইনিংস খেলেন রাচিন রবীন্দ্রও। মূলত তাঁদের শতরানের সুবাদেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে চতুর্থ ইনিংসে বড় রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় কিউয়িরা।
লাল বলের ক্রিকেটে ক্যারিবিয়ানদের গত কয়েক বছরের পারফরম্যান্স আশাপ্রদ নয়। বিদেশের মাটিতে তো বটেই, ঘরের মাঠেও একের পর এক টেস্ট হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়। স্বভাবতই জয়ের জন্য ৫৩১ রানের লক্ষ্যের সামনে চতুর্থ ইনিংসে চেজদের নিয়ে আশাবাদী ছিলেন না ক্রিকেট বিশেষজ্ঞেরা। ক্রিকেটপ্রেমীরাও নিউ জ়িল্যান্ডের জয়ের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু সব হিসাব উল্টে দিলেন গ্রিভস এবং রোচ।
নিউ জ়িল্যান্ডের জয়ের আশা আরও বাড়িয়ে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ব্যাটারেরাই। চাপের মুখে পর পর আউট হয়ে যান জন ক্যাম্পবেল (১৫), ত্যাগনারাইন চন্দ্রপল (৬), অ্যালিক অ্যাথানজ়ে (৫) এবং চেজ (৪)। ৭২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দলের হয়ে প্রথম প্রতিরোধ শুরু করেন হোপ। তাঁর সঙ্গে ২২ গজে যোগ দেন গ্রিভস। মাটি কামড়ে লড়াই চালিয়ে যান তাঁরা। হোপ খেলেন ১৪০ রানের লড়াকু ইনিংস। তাঁর ২৩৪ বলের ইনিংসে রয়েছে ১৫টি চার এবং ২টি ছক্কা। গ্রিভস কিন্তু শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। তিনি ১৯টি চারের সাহায্যে ৩৮৮ বলে ২০২ রান করে অপরাজিত থাকেন। পঞ্চম উইকেটে হোপ-গ্রিভসের ১৯৬ রানের জুটি খেলার রং বদলে দেয়। ভাল ফলের আশা তৈরি করে ক্যারিবিয়ান শিবিরেও।
জেকব ডাফির বলে হোপ আউট হওয়ার পর গ্রিভসের সঙ্গে জুটি বাঁধেন রোচ। অনেক চেষ্টা করেও এই জুটি ভাঙতে পারেননি নিউ জ়িল্যান্ডের ক্রিকেটারেরা। অনবদ্য ব্যাটিং করলেন রোচ। আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ২৩৩ বল খেললেন। অপরাজিত থাকলেন ৫৮ রান করে। মারলন ৮টি চারও। হোপ, গ্রিভস এবং রোচ— তিন জনেই যতটা সম্ভব ঝুঁকিহীন ব্যাটিং করার চেষ্টা করেছেন। তাঁদের হার না মানা লড়াই ক্রমশ হতাশা বাড়িয়েছে কিউয়ি ক্রিকেটারদের। এক সময় লাথামেরা প্রায় হাল ছেড়ে দেন। ২০২৫-২৭ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ষষ্ঠ ম্যাচে প্রথম পয়েন্ট পেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ়। উল্লেখ্য, এই টেস্ট ছিল নিউ জ়িল্যান্ডের প্রথম ম্যাচ। প্রথম বারের চ্যাম্পিয়নেরা ২০২৫-২৭ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্র শুরু করল ঘরের মাঠে ড্র দিয়ে।