খেলার মুহূর্ত। — নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘ বিরতির পর বর্ধমানের মাটিতে বড় ফুটবল প্রতিযোগিতার আবহ ফিরে এল। শুক্রবার মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন তারকাদের প্রদর্শনী ম্যাচে শহরের মিউনিসিপ্যাল বয়েজ হাইস্কুলের মাঠে জয়ের হাসি ফুটল সবুজ মেরুন শিবিরে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের বন্ধুত্বপূর্ণ ‘লড়াই’ দেখার উত্তেজনায় গ্যালারিতে ছিলেন ব্যারেটো, মেহেতাব, অ্যালভিটো, রহিম, নবি, দীপক মণ্ডল প্রমুখ।
মাঠের দু’পাশে সমর্থকদের জন্য আলাদা ভাবে বসার ব্যবস্থা থাকলেও খেলার সময়ে সমর্থকদের উত্তেজনায় কোথাও কোথাও নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি আয়োজক বা পুলিশ-প্রশাসন। জাতীয় দলের প্রাক্তন তারকাদের এত কাছ থেকে দেখার আনন্দে অনেক দর্শক মাঠের ধারে চলে আসার ফলে তৈরি হয়েছিল চাপা উত্তেজনা। তবে আনন্দের মাঝেও এ দিন প্রশ্ন উঠল মাঠের বেহাল ও অসমান অবস্থা নিয়ে।
প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে জোড়া গোল করেন মহম্মদ রফিক। তাঁর দুটি গোলই ছিল দেখার মতো। প্রথমটি ডান পায়ে গ্রাউন্ডার, দ্বিতীয়টি সেন্টার থেকে স্পট জাম্প হেডে। পরের মুহূর্তেই ব্যবধান কমান মোহনবাগানের রহিম নবি। বাঁ পায়ের শটে বল ঢোকালেন প্রতিপক্ষের জালে।
প্রথমার্ধে কিছুটা নিস্তেজ থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে দেখা যায় পুরনো ব্যারেটোকে। কড়া মার্কিং ভেদ করে ডান প্রান্ত থেকে আক্রমণ সাজাতে থাকেন তিনি। অবশেষে তাঁর গোলেই সমতা ফেরায় সবুজ মেরুণ। মাটিতে গড়ানো বল তুলে নিয়ে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের মাথার উপর দিয়ে ফ্লিক করে বাঁ-পায়ের ভলিতে জালে পাঠান ব্যারেটো।
টাইব্রেকারে দু’দলই চারটি করে গোল করে। সাডেন ডেথে মোহনবাগান দু’টি গোল করে। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ইস্টবেঙ্গলের দীপঙ্করের শট আটকান মোহনবাগানের গোলরক্ষক সন্দীপ নন্দী। এই সেভের জন্যই ম্যাচ জিতে নেয় সবুজ মেরুণ।
জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রাসবিহারী হালদারের আয়োজনে এই খেলা দেখতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার, বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান উজ্জ্বল প্রামাণিক, ভাইস চেয়ারম্যান আইনুল হক, জেলার পুলিশ সুপার সায়ক দাস প্রমুখ। বেহাল মাঠ, দর্শক নিয়ন্ত্রণে ত্রুটি— সবকিছু সত্ত্বেও দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ডার্বি শহরবাসীকে উপহার দিল স্মরণীয় এক বিকেল।