মুলতান সুলতান্স দল। ছবি: সমাজমাধ্যম।
কিছু দিন আগেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড দায়িত্ব নিয়েছিল সে দেশের টি-টোয়েন্টি লিগের দল চট্টগ্রাম রয়্যালসের। তিন দিন পর একই জিনিস দেখা গেল পাকিস্তানেও। সে দেশের মুলতান সুলতান্স দলের দায়িত্ব নিল পাক বোর্ড। এ বছরের মতো তারাই দলটি পরিচালনা করবে। ভারতে যেখানে আইপিএলের দলগুলির বাজারদর দিন দিন বেড়ে চলেছে, সেখানে দুই প্রতিবেশী দেশের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগের বেহাল দশা আরও প্রকট হচ্ছে।
রবিবার লাহোরে একটি সাংবাদিক বৈঠকে পাক বোর্ডপ্রধান মহসিন নকভি জানান, এ বছর বোর্ডই মুলতান দলের দায়িত্ব নিচ্ছে। তারাই প্রাক্তন ক্রিকেটারদের নিয়োগ করবে কোচ হিসাবে।
নকভি বলেন, “এ বছর মুলতান সুলতান্স খেলবে পিসিবি-র পরিচালনায়। পিএসএল শেষ হলে আমরা নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করব। তখন দলটা বিক্রি করা হবে। এ বছরের জন্যই দায়িত্বে থাকবে বোর্ড।”
নকভির সংযোজন, “আগামী আট-দশ দিনের মধ্যে একজন পেশাদারকে নিয়োগ করা হবে, যে গোটা দলের খেয়াল রাখবে। পাশাপাশি একজন পেশাদার ক্রিকেটারকে কোচ হিসাবে নিয়োগ করা হবে।”
২০১৮ সালে মুলতান দলটি কিনেছিলেন ব্যবসায়ী আলি তারিন। আর্থিক কারণ এবং পিএসএল পরিচালনায় অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে তিনি মালিকানা ছেড়ে দিয়েছেন। মালিকানা ছাড়ার পর পিসিবি-র তরফে তাঁকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। জবাবে একটি ভিডিয়ো করে সেই নোটিশ প্রকাশ্যেই ছিঁড়ে ফেলেন আলি।
এ দিকে, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) চট্টগ্রামের দল কিনেছিল ট্রায়াঙ্গল সার্ভিসেস লিমিটেড নামের এক সংস্থা। সেই সংস্থার মালিক কায়ুম রশিদ। গত মাসে নিলামেও অংশ নিয়েছিলেন রশিদ। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তিনি জানান, স্পনসর আগ্রহ না দেখানোয় সরে যেতে হচ্ছে তাঁকে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান ক্রিকইনফোকে বলেছিলেন, “কয়েক ঘণ্টা আগে ওরা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে চিঠি লিখে ওদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। তাই আমরা দলের দায়িত্ব নিয়েছি। চিঠিতে ওরা বলেছে, সংবাদমাধ্যমের খবরের জন্য ওরা কোনও স্পনসর পায়নি। কিন্তু এ বার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কোনও ক্রিকেটারের যাতে আর্থিক সমস্যা না হয়, সে দিকে নজর রাখব। গত বার রাজশাহীর ক্রিকেটারদের সঙ্গে যা হয়েছে, সেটা এ বার যেন না হয়। তাই দলের দায়িত্ব আমরা নিয়েছি।”
২০১২ সাল থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ। প্রথম বছর থেকেই ক্রিকেটারদের বেতন নিয়ে নানা রকম সমস্যা হয়েছে। তবে ২০১৬ সালের পর থেকে তা কমেছিল। গত বার সেই সমস্যা আবার দেখা যায়। বেতন না পেয়ে দুর্বার রাজশাহীর ক্রিকেটারেরা অনুশীলন বন্ধ করে দেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, হোটেলের খরচও মেটাচ্ছেন না দলের মালিক। সেই সময়ও বোর্ডকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল।
পিএসএলেও বার বার বিতর্ক হয়েছে। কখনও পাক বোর্ডের পরিচালনা নিয়ে। কখনও লাহোরে ক্রিকেটারদের খেলতে না চাওয়া নিয়ে। ২০১৭-য় ম্যাচ গড়াপেটা নিয়েও উত্তাল হয়েছিল পিএসএল।