Senuran Muthusamy

শতরান করে জল ঢাললেন ভারতের আশায়, ক্রিকেট খেলা নিয়েই দ্বিধায় ছিলেন সমাজ বিজ্ঞানে স্নাতক ‘ভারতীয়’ মুথুস্বামী

স্কুলে পড়ার সময় ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় সেনুরাম মুথুস্বামীর। স্কুলেই শুরু খেলা শেখা। কাওয়াজ়ুলু নাটালের সব বয়স ভিত্তিক দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন সমাজ বিজ্ঞানে স্নাতক মুথুস্বামী।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:১৩
Picture of Senuran Muthusamy

সেনুরাম মুথুস্বামী। ছবি: বিসিসিআই।

পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট সিরিজ়ে ভাল পারফর্ম করেও ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে খেলার সুযোগ পাননি সেনুরাম মুথুস্বামী। গুয়াহাটি টেস্টে খেলার সুযোগ পেয়েই প্রমাণ করে দিলেন ইডেন গার্ডেন্সে ভুল করেছিলেন টেম্বা বাভুমারা। প্রথম টেস্ট শতরান করলেন মুথুস্বামী।

Advertisement

সাত নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ১০৯ রানের ইনিংস খেললেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অলরাউন্ডার। মুথুস্বামী শতরান করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে দ্বিতীয় টেস্টে ভাল জায়গাতে পৌঁছে দিলেন। একই সঙ্গে হতাশা বাড়ালেন ঋষভ পন্থ, জসপ্রীত বুমরাহদের। এর আগে টেস্টে তাঁর সর্বোচ্চ রান ছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপরাজিত ৮৯।

১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে জন্ম মুথুস্বামীর। তাঁর বাবা-মা দু’জনেই ভারতীয়। তামিলনাড়ুর নাগাপাত্তিনামে থাকেন প্রোটিয়া অলরাউন্ডারের আত্মীয়েরা। তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে ডারবানের মুথুস্বামী পরিবারের। দীর্ঘ দিন দক্ষিণ আফ্রিকার স্থায়ী বাসিন্দা হলেও ভারতীয় সংস্কৃতি বজায় রয়েছে তাঁদের পরিবারে। সকলে হিন্দু ধর্মের প্রতি আস্থাশীল। এক সাক্ষাৎকারে মুথুস্বামী বলেছেন, ‘‘আমাদের পরিবার ভীষণ ভাবে ভারতীয়। ভারতের সংস্কৃতি, আচার মেনে চলি আমরা। মন্দিরে যাই।’’

ডারবানে স্কুলে পড়ার সময় ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। স্কুলেই শুরু ক্রিকেট শেখা। স্কুল এং জেলা পর্যায় নজর কাড়তে শুরু করেন কিছু দিনের মধ্যেই। কাওয়াজ়ুলু নাটালের অনূর্ধ্ব-১১ থেকে অনূর্ধ্ব-১৯— সব বয়স ভিত্তিক দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন মুথুস্বামী। তবু একটা সময় পর্যন্ত ক্রিকেটকে পেশা হিসাবে বেছে নেওয়ার ব্যাপারে তাঁর দ্বিধা ছিল। ২০১৫-১৬ মরসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার অনূর্ধ্ব-১৯ দলে সুযোগ পেয়েছিলেন টপ অর্ডার ব্যাটার হিসাবে। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্লাব ক্রিকেটেও খেলতেন বিশেষজ্ঞ ব্যাটার হিসাবে।

২০১৭ সালে ক্লাব ক্রিকেটে ১৮১ রানের ইনিংস খেলেন ডলফিনের হয়ে। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি স্পিন বল করতেও ভালবাসেন ৩১ বছরের ক্রিকেটার। একটা সময় ব্যাটার হিসাবে প্রত্যাশিত সাফল্য না পাওয়ায় বোলিংয়ে গুরুত্ব দেন। নিজেকে অলরাউন্ডার হিসাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেন। তাতে সাফল্যও পান। ২০১৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা দলে ডাক পান ভারত সফরের জন্য। বিশাখাপত্তম টেস্টে ৫ উইকেট নিয়ে চমকে দিয়েছিলেন বিরাট কোহলির দলকে। আউট করেছিলেন কোহলিকেও। তবু জাতীয় দলে পাকা জায়গা করতে পারেননি ধারাবাহিকতার অভাবে।

গত মরসুম থেকে ভাল ফর্মে রয়েছেন মুথুস্বামী। পাকিস্তান সফরে সাফল্য পাওয়ার পর ভারত সফরের দলেও তাঁকে নেওয়া হয়। রবিবার শতরান করার পর মুথুস্বামী বলেছেন, ‘‘শতরানের মুহূর্তটা আমার ক্রিকেটজীবনের বিশেষ মুহূর্ত। ভর্তি স্টেডিয়ামে এমন ইনিংস খেলার অনুভুতি অন্যরকম। তবে বেশি খুশি হয়েছি দলকে সাহায্য করতে পেরে। লক্ষ্য ছিল ভাল জুটি তৈরি করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। মার্কো জানসেন দুর্দান্ত খেলল। বাকিদের থেকেও ভাল সাহায্য পেয়েছি।’’

ক্রিকেটের পাশাপাশি পড়াশোনাতেও ভাল মুথুস্বামী। কাওয়াজ়ুলু নাটাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানের স্নাতক তিনি। ‘মিডিয়া এবং মার্কেটিং’ নিয়েও তাঁর পড়াশোনা রয়েছে। গুয়াহাটি টেস্টের আগে পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সাতটি টেস্ট খেলেছেন মুথুস্বামী। দেশের হয়ে পাঁচটি করে এক দিনের ম্যাচ এবং টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলারও অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।

Advertisement
আরও পড়ুন