ক্লাব বিশ্বকাপই কি ফুটবলের ভবিষ্যৎ? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
লুই এনরিকে বলছেন, ‘‘‘গর্তে ভরা কোর্টে বাস্কেটবল খেলা হচ্ছে। লাফানো বল দেখে মনে হচ্ছে, একটা খরগোশ খেলছে।’’
জুরগেন ক্লপ বলছেন, ‘‘ফুটবলে নতুন যা যা হয়েছে, এটা তার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ!’’
এনজ়ো মারেস্কা বলছেন, ‘‘এটা ফুটবল হচ্ছে? মনে হয়, আমাদের সঙ্গে রসিকতা করা হচ্ছে।’’
এঁরা কারা? বিশ্ব ফুটবলের নামী কোচ। এনরিকে প্যারিস সঁ জরমঁ-কে এ বছর ইউরোপ-সেরা করেছেন। ক্লপ লিভারপুলের প্রাক্তন কোচ। মারেস্কা চেলসির কোচ। এমনিতে এঁদের মধ্যে পেশাগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা তুমুল। কিন্তু এই জায়গাটায় তাঁরা প্রতিবাদে একজোট। কিসের প্রতিবাদ? নতুন ফরম্যাটে যে ক্লাব বিশ্বকাপ হচ্ছে, তার প্রতিবাদ।
লুই এনরিকে, জুরগেন ক্লপ, এনজ়ো মারেস্কা। — ফাইল চিত্র
বিশ্ব ফুটবলে গত কয়েক দশক ধরে ইউরোপীয়দের রমরমা। ক্লাব হোক বা দেশ, ইউরোপই শেষ কথা বলে। ইচ্ছা না থাকলেও মেনে নিতে বাধ্য হয় বাকি বিশ্ব। সেই ‘দাপট’ কমাতেই ফিফার উদ্যোগে নতুন অবতারে চালু করা হয়েছে ‘ক্লাব বিশ্বকাপ’। কিন্তু শুরু থেকেই এই প্রতিযোগিতা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে। কখনও মাঠের অবস্থা, কখনও গরম, কখনও আয়োজকদের গাফিলতি— অভাব-অভিযোগের শেষ নেই। ক্লপ তো বলেই দিয়েছেন, ‘‘ক্লাব বিশ্বকাপ ফুটবলের সবচেয়ে খারাপ আবিষ্কার!’’
তা হলে এই প্রতিযোগিতার ভবিষ্যৎ কী?
১৯৩০ সাল থেকে ফুটবল বিশ্বকাপ হচ্ছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা ফিফার উদ্যোগে। বিশ্বকাপের জনপ্রিয়তা এবং মান প্রশ্নাতীত। সেই জায়গা থেকেই ক্লাবগুলোকে নিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজন করার ভাবনা। যা বহু দিন ধরেই ছিল। অবশেষে ২০০০ সাল থেকে চালু হয়েছিল ক্লাব বিশ্বকাপ। ছ’টি মহাদেশের চ্যাম্পিয়ন দল এবং আয়োজক দেশের লিগজয়ীকে নিয়ে এত দিন ধরে হয়ে এসেছে আট দলের এই প্রতিযোগিতা। প্রতি বছর মরসুমে মাঝপথে (সাধারণত ডিসেম্বর বা ফেব্রুয়ারিতে) হত এই প্রতিযোগিতা।
২০১৬ সালে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো প্রস্তাব দেন, ক্লাব বিশ্বকাপে দলের সংখ্যা বাড়িয়ে ৩২ করা হোক এবং চার বছর অন্তর এই প্রতিযোগিতা হোক। ফুটবল বিশ্বকাপের ধাঁচেই। বিস্তর টালবাহানার পর সেই প্রস্তাব গৃহীত হয়। এ বছর থেকে নতুন ভাবে শুরু হয়েছে ক্লাব বিশ্বকাপ। যাতে শুরু থেকেই সমস্যার জট দেখা দিয়েছে।
এত দিন আপত্তি ওঠেনি কেন?
২০০০ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত গত ২৪ বছরে এই প্রতিযোগিতা হয়েছে ২০ বার। কিন্তু এত দিন পর্যন্ত কোনও শোরগোল পড়েনি। কারণ, মাত্র আটটি দল খেলত। প্রতিযোগিতা ছিল নকআউট ফর্ম্যাটের। সর্বাধিক দু’টি বা তিনটি (ইউরোপীয় দলগুলি সেমিফাইনাল থেকে) ম্যাচ খেলতে হত। কারও সমস্যা ছিল না। কিন্তু নতুন কলেবরের প্রতিযোগিতায় প্রতিটি দলকে অন্তত তিনটি ম্যাচ খেলতেই হবে। ফাইনালে উঠলে আরও চারটি। অর্থাৎ, মোট সাতটি ম্যাচ খেলতেই হবে। সেখানেই উঠছে প্রশ্ন। ইউরোপের বেশির ভাগ ক্লাব এই বিশ্বকাপের বিরোধিতা করেছে ফুটবলারদের শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে। ফুটবল ক্যালেন্ডারে এই সময়টা ফুটবলারদের বিশ্রামের। সেখানে আরও এক মাস বাড়তি ফুটবল তাঁদের আরও ক্লান্ত করবে। মেয়াদ সংক্ষিপ্ত হতে পারে ফুটবলজীবনের। ফিফা পাল্টা জানিয়েছে, এখন থেকে চার বছর অন্তর ক্লাব বিশ্বকাপ হবে। একটা বছর একটু বাড়তি পরিশ্রম করতে হলে ক্ষতি কী? ক্লাব বিশ্বকাপের অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এই চাপান-উতর থামেনি।
কোণঠাসা হওয়ার ভয়ে উয়েফার বিরোধিতা
ফ্রান্স তথা রিয়াল মাদ্রিদের কিলিয়ান এমবাপে বছর দুয়েক আগে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বিশ্বকাপের থেকে অনেক কঠিন ইউরো কাপে (ইউরোপের দেশগুলিকে নিয়ে প্রতিযোগিতা) খেলা। ইউরোপের ফুটবল নিয়ে এমবাপের সেই নাক-উঁচু মনোভাব ভাল ভাবে নেননি লিয়োনেল মেসি। পাল্টা বলেছিলেন, ‘‘তুমি বোধ হয় লাতিন আমেরিকার কথা ভুলে গিয়েছো?’’
কিলিয়ান এমবাপে। — ফাইল চিত্র।
লাতিন আমেরিকা, বলা ভাল, বাকি বিশ্বের প্রতি ইউরোপীয়দের এই ‘অহংকারী’ মনোভাব বরাবর রয়েছে। ইউরোপের সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ এবং ক্লাব মনে করে, তাদের সঙ্গে কেউ টক্কর দিতে পারবে না। জনপ্রিয়তার নিরিখে ইউরো কাপ এবং ফিফা বিশ্বকাপ প্রায় সমান-সমান। কিন্তু ক্লাব পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বিশ্বের সেরা। এখানেই খানিকটা ভীত ইউরোপের ফুটবল নিয়ামক সংস্থা উয়েফা। তারা মনে করে, ফিফার নতুন ক্লাব বিশ্বকাপ আয়োজন করার নেপথ্যে আসলে রয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগকে ‘কোণঠাসা’ করার ভাবনা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জনপ্রিয়তায় ভাগ বসানোর চেষ্টা। ফিফা নিজেও বিষয়টা অস্বীকার করছে এমন নয়। তবে খোলাখুলি কেউ কিছু এখনও বলেননি। তার কারণ, ক্লাব বিশ্বকাপ আয়োজন করে এখনও প্রত্যাশা মাফিক সাড়া পায়নি ফিফা। না মাঠে সে রকম দর্শক, না বাড়ছে জনপ্রিয়তা, না হয়েছে মনের মতো সম্প্রচার স্বত্ব। ফিফা চেয়েছিল ৪০০ কোটি ডলারে (৩৪,৩২৬ কোটি টাকা) সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করতে। কেউ সেই দাম দিতে রাজি হয়নি। কোনও মতে একটি ওয়েবসাইটের সঙ্গে ১০০ কোটি ডলারে (৮,৫৮০ কোটি টাকা) চুক্তি হয়েছে। ভারতের কোনও চ্যানেল খেলা দেখাচ্ছে না। ফলে আগ্রহ থাকলেও অনেকেই ক্লাব বিশ্বকাপ দেখতে পাচ্ছেন না। মার খাচ্ছে ফিফার ব্যবসা।
আমেরিকার প্রবল গরম
১৯৯৪ সালে শেষ বার আমেরিকায় বিশ্বকাপ হয়েছিল। সম্প্রচারের বাধ্যবাধকতার কারণে স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয়েছিল ম্যাচ। ফাইনালের দিন গরমের চোটে ধারাভাষ্যকারেরা জামা খুলে ধারাবিবরণী দিয়েছিলেন। আগামী বছর আবার আমেরিকায় ফুটবল বিশ্বকাপ। তার আগে, ‘মহড়া’ হিসাবে সেই দেশকেই ক্লাব বিশ্বকাপের দায়িত্ব দিয়েছে ফিফা। কিন্তু প্রকৃতির সঙ্গে লড়াইয়ে পেরে ওঠা যাচ্ছে না। বোঝা যাচ্ছে, এই গরমে খেলা কতটা কঠিন। সবচেয়ে খারাপ দশা ইউরোপের ক্লাবগুলোর। তারা এত তাপমাত্রায় খেলে অভ্যস্ত নয়। গরমের প্রভাব পড়েছে পারফরম্যান্সে। অনেকেই নিজেদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারছেন না। বার বার দিতে হচ্ছে জলপানের বিরতি। বিভিন্ন মহল থেকে আওয়াজ উঠছে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, আর কোনও মহাদেশের ক্লাবেরই গরম নিয়ে অভিযোগ নেই। লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়ায় বেশির ভাগ ক্লাবই এমন তাপমাত্রায় ফুটবল খেলে। ফলে তাদের ফুটবলারদের কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। সেটাই পাল্টা ‘হাতিয়ার’ হয়ে উঠেছে ফিফার। তাদের প্রশ্ন, ৩২টা ক্লাবের মধ্যে যখন ২০টা ক্লাব খেলছে, তখন ১২টা ক্লাবকে আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হবে কেন?
শুধু গরম নয়, আছে বজ্রপাতও
একে গরমে রক্ষে নেই, তার দোসর বজ্রপাত! গরমে তবু ঘন ঘন জলপান করে খেলা চালিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু ফিফার নির্দেশ অনুযায়ী, বজ্রপাত হলে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার স্বার্থে তখনই ম্যাচ বন্ধ করে দিতে হবে। ইতিমধ্যেই সাতটি ম্যাচ বজ্রপাতের কারণে বিঘ্নিত। চেলসি বনাম বেনফিকা ম্যাচ শেষ হতে বাকি ছিল মাত্র পাঁচ মিনিট। এমন সময় মুহুর্মুহু বজ্রপাতের কারণে ফুটবলারদের সাজঘরে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন রেফারি। তখন চেলসি ১-০ গোলে এগিয়ে। ম্যাচ প্রায় দু’ঘণ্টা বন্ধ থাকে। ম্যাচ আচমকা বন্ধ হয়ে গেলে খেলোয়াড়দের পক্ষে শরীর গরম রাখা কঠিন। সর্বক্ষণ কোনও না কোনও কাজ করতে হয়। শরীর এক বার ঠান্ডা হয়ে গেলে হঠাৎ করে খেলতে নামা কঠিন।
দু’ঘণ্টা পরে খেলা শুরু হতেই গোল শোধ করে বেনফিকা। খেলা গড়ায় আরও ৩০ মিনিট। শেষ পর্যন্ত চেলসি ৪-১ গোলে জিতলেও ক্ষোভ উগরে দিয়ে তাদের কোচ এনজ়ো মারেস্কা বলেন, “এটা ফুটবল হচ্ছে? সাত-আটটা ম্যাচ মাঝপথে বন্ধ করতে হয়েছে। আবার চালু করা হয়েছে। মনে হয় ফুটবল নয়, মজা করা হচ্ছে আমাদের সঙ্গে। মানছি, নিরাপত্তার কারণেই ম্যাচ বন্ধ করে দিয়েছিলেন রেফারি। কিন্তু সাত-আটটা ম্যাচে একই জিনিস ঘটলে এটা বোঝা যায় যে, এটা প্রতিযোগিতা আয়োজন করার ঠিক জায়গা নয়।”
মাঠের অসমান বাউন্স
আমেরিকার যে মাঠগুলিতে ক্লাব বিশ্বকাপের ম্যাচ হচ্ছে, তার অনেকগুলি ‘সকার’-এর (আমেরিকায় ফুটবল ‘সকার’ নামে পরিচিত) জন্য নির্দিষ্ট নয়। সেই মাঠগুলিতে আমেরিকার ফুটবল (চামড়ার তৈরি ডিম্বাকার বলে রাগবির মতো খেলা) লিগ হয়। সেই খেলায় বল মাটিতে গড়ানোর তেমন ব্যাপার নেই। ফলে কিছু কিছু জায়গায় মাঠ অসমানও থাকে। যা খালি চোখে বোঝা যায় না। কিন্তু ফুটবলের ক্ষেত্রে মসৃণ মাঠ দরকার। পাশাপাশি, বলও লাফাতে হয়। সেখানেই দেখা দিচ্ছে সমস্যা। কিছু কিছু মাঠের অবস্থা এতই খারাপ যে, বল ঠিকমতো বাউন্স করছে না। মাঠ অসমান থাকায় পাসিং ফুটবলও খেলা যাচ্ছে না। আচমকা বলের গতি কমে যাচ্ছে। জল দিয়ে, রোলার চালিয়ে বিষয়টা সামাল দেওয়ার চেষ্টা হলেও গরমে দ্রুত ঘাস শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে দৌড়তে বা ট্যাকল করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন ফুটবলারেরা। ঘাস শুকিয়ে শক্ত হয়ে যাওয়ায় চোট-আঘাতের সম্ভাবনাও বাড়ছে।
সম্প্রতি সিয়াটলের মাঠে খেলেছে প্যারিস সঁ জরমঁ। ম্যাচের পর প্যারিসের কোচ এনরিকে বলেছিলেন, “গর্তে ভরা কোর্টে বাস্কেটবল খেলা হচ্ছে, এটা নিশ্চয়ই কোনও দিন দেখতে হবে না। এখানকার মাঠে ফুটবল এমন লাফাচ্ছে যে, মনে হচ্ছে একটা খরগোশ খেলছে। কৃত্রিম ঘাসের মাঠকে স্বাভাবিক ঘাসের মাঠ বানানো হয়েছে। ১০ মিনিটের মধ্যে মাঠ শুকিয়ে যাচ্ছে। আমরা ইউরোপে এমন মাঠে খেলে অভ্যস্ত নই।” রিয়াল মাদ্রিদের জুড বেলিংহ্যাম অবশ্য বলেছিলেন, “মাঠ ভাল নয়। তবে নরকের মতোও নয়। দু’দল একই মাঠে খেলছে। যদিও এই মাঠে শরীরের ভারসাম্য রাখা যাচ্ছে না। হাঁটুতে চাপ পড়ছে। আশা করি, খেলোয়াড়েরা যাতে চোট না পায়, সে দিকে খেয়াল রাখা হবে।”
জুড বেলিংহ্যাম। — ফাইল চিত্র।
দর্শকদের নিরাসক্তি
লিয়োনেল মেসি দু’বছর আমেরিকায় খেলে ফেলার পরেও ফুটবল আমেরিকায় এখনও কাঙ্ক্ষিত জনপ্রিয়তা পায়নি। বেসবল, বাস্কেটবল এবং ফুটবল (সকার) এখনও আমেরিকার মানুষের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় খেলা। আমেরিকার বাজার ধরতে এবং সেখানকার মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা বাড়াতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে ফিফা। কিন্তু এখনও সফল হয়নি। এমনিতেই আমেরিকার মাঠগুলি বিশাল। ৮০ হাজারের স্টেডিয়ামে ৩৫ হাজার লোক খেলা দেখলেও কম দেখাবে। অথচ একটি ফুটবল ম্যাচে ৩৫ হাজার লোকের উপস্থিতি নেহাত খারাপ নয়।
ইউরোপের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ক্লাব বিশ্বকাপের বিরোধিতায় প্রায় ‘যুদ্ধ’ই শুরু করে দিয়েছে। ইংল্যান্ডের বিভিন্ন ম্যাচের ছবি তুলে ধরে বলা হচ্ছে, কী ভাবে প্রতিটি ম্যাচ ‘হাউসফুল’ থাকে। কম যায় না ফিফাও। তারাও বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরে দেখাচ্ছে, কী ভাবে আগের বারের থেকে বেশি দর্শক এ বার খেলা দেখছেন। এমনকি, ক্লাব বিশ্বকাপের একটি ম্যাচে সর্বোচ্চ দর্শকসংখ্যার ‘নজির’ হয়েছে এ বারই (পিএসজি বনাম আতলেতিকো মাদ্রিদের খেলা দেখেছেন ৮০,৬১৯ জন)। তবে এটাও সত্যি যে, কিছু কিছু ম্যাচে ফাঁকা গ্যালারি দৃষ্টিকটূ লেগেছে। উলসান বনাম সানডাউন্স ম্যাচ দেখেছেন মাত্র ৩,৪১২ জন। ইংল্যান্ডের পাড়ার ক্লাবের ম্যাচেও এর থেকে বেশি দর্শক হয়।
আপাতত ফিফা ১-০ গোলে এগিয়ে
যে কোনও প্রতিযোগিতার শুরুতেই কিছু না কিছু সমস্যা থাকে। হোঁচট খেতে হয় বার বার। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগোতে হয়। ক্লাব বিশ্বকাপের ভুল ফিফা ভবিষ্যতে শুধরে নেবে বলেই অনেকে মনে করছেন। ক্লাব বিশ্বকাপ নিয়ে ইউরোপীয়দের নাক সিঁটকানো মনোভাব থাকলেও অনেকে মনে করছেন আগামী দিনে এই বিশ্বকাপ জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠবে। বিশেষত লাতিন আমেরিকা এবং এশিয়ার ক্লাব ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত কর্তারা। তাঁদের দাবি, ইউরোপের সঙ্গে টক্কর দেওয়ার জন্য এর থেকে সঠিক মঞ্চ আর হতে পারে না।
ব্রাজিলের ফুটবল লিগ আয়োজকেরা ক্লাব বিশ্বকাপ নিয়ে এতটাই আগ্রহী যে, ঘরোয়া লিগের সূচি বদলে দিয়েছেন। যাতে ব্রাজিলের ক্লাবগুলি বিশ্বকাপে পর্যাপ্ত বিশ্রাম পেয়ে খেলতে পারে। এশিয়াতেও একই জিনিস দেখা গিয়েছে। একটি প্রতিযোগিতায় ভাল খেলে রাতারাতি পাদপ্রদীপের আলোয় উঠে আসার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছে না কেউ। এখানেই ইউরোপকে হারিয়ে প্রাথমিক ভাবে জিতে গিয়েছে ফিফা।